এমএ মান্নান মিয়া, ইউএনবি: যশোরের চৌগাছার হাজারাখানা গ্রামের পীর বলুহ দেওয়ানের মাজার সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদের ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো ভেঙে দুই গ্রামের মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
অবিলম্বে সাঁকোটি মেরামত বা নতুন সাঁকো নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ভূক্তভোগী এলাকাবাসীরা।
চৌগাছার বুক চিরে বয়ে গেছে মহাকবি মাইকেল মধূসুধন দত্তের কপোতাক্ষ নদ। নদের পশ্চিম পাশে উপজেলার বৃহত্তর তিনটি ইউনিয়ন নারায়নপুর, সুখপুকুরিয়া ও স্বরুপদাহের অবস্থান।
এ অঞ্চলের মানুষের চৌগাছা উপজেলা সদর তথা জেলা শহরের সাথে যোগাগোগের জন্য কপোতাক্ষ নদ পার হতে হয়। মানুষের চলাচলের স্বার্থে নদের অসংখ্য স্থানে ছোট বড় ব্রিজ ও সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু নারায়নপুর ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ স্থান হাজারাখানা পীর বলুহ দেওয়ানের মাজার সংলগ্ন নদের ওপর এখনো কোনো ব্রিজ বা সেতু নির্মাণ করা হয়নি বলে জানান স্থানীয়রা।
নদের পূর্ব পাশে তালপট্টি, নিয়ামতপুর, পাঁচনামনাসহ বেশ কিছু গ্রাম ও পশ্চিম পাশে হাজরাখানা, পেটভরা গ্রাম এলাকার মানুষ প্রতিনিয়ত এ স্থানটি দিয়ে চলাচল করেন। আগে এ স্থানটি দিয়ে নৌকা করে মানুষ পার হতেন। সে জন্য প্রতি বছর জেলা পরিষদ থেকে এ ঘাট ডাক হতো বলে জানান এলাকাবাসী। সময়ের ব্যবধানে ওই ঘাটের স্থানে নির্মাণ করা হয় বাঁশের সাঁকো।
স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে এ সাঁকো নির্মাণ করলেও এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেন পৌর এলাকার পাঁচনামনা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক। দেখাশুনা ও মেরামত করার জন্য সাঁকো দিয়ে পারাপার হওয়া লোকজনের কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট হারে টাকা নিতেন। সাঁকো পারাপারের জন্য টাকা গ্রহণ অবৈধ উল্লেখ করে সম্প্রতি চৌগাছা থানা ওই ব্যক্তিকে টাকা নিতে নিষেধ করেন এবং সাঁকো এলাকা ছেড়ে তাকে চলে যেতে বলেন।
এ ঘটনার মাস না যেতেই গত রবিবার রাতে সাঁকোর মাঝ বরাবর ভেঙে নদের পানিতে পড়ে গেছে। হঠাৎ করেই সাঁকো ভেঙে পড়ায় নদের দুই পাড়ের মানুষের চলাচলের চরম সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে কৃষি কাজ সম্পৃক্তদের সমস্যা সব থেকে বেশি বলে জানান স্থানীয়রা।
হাজরাখানা গ্রামে বাসিন্দা আব্দুল মান্নান, আব্দুল জলিল, আব্দার রহমান, তালপট্টি জয়নাল হোসেন, লোকমান হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, নদের ওই স্থানে এক সময় নৌকায় করে পার হতে হয়েছে। এরপর তৈরি হলো সাঁকো, বছরের পর বছর মানুষ বেশ শান্তিতে ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে সাঁকো এখন ভেঙে যাওয়ায় মানুষের দূর্ভোগ চরমে উঠেছে।
ভুক্তভোগী এলাকাবাসী অবিলম্বে নতুন সাঁকো নির্মাণ অথবা ভাঙা সাঁকো মেরামতের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. এম মোস্তানিছুর রহমান জানান, সাঁকোটি যে ব্যক্তি দেখাশুনার নাম করে অর্থ আদায় করতেন সেটি ছিল অবৈধ। থানা পুলিশ তাকে সেখান থেকে টাকা নিতে নিষেধ করার কিছুদিন পরেই সাঁকোটি ভেঙে নদে পড়ে গেছে। এর মধ্যে নিশ্চয় কোনো রহস্য আছে। তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই স্থানে কাঠের নতুন সাঁকো নির্মাণ করা হবে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।