জুমবাংলা ডেস্ক : ২৭ বছর পর কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে নতুন নেতৃত্ব পেয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। কাউন্সিলরদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ইকবাল হোসেন শ্যামল।
তারা দুজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের সিন্ডিকেট ভেঙে কাউন্সিলররা নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করেন। সরাসরি ভোটে নেতা নির্বাচিত হওয়ায় সবাই ফল মেনে নিয়েছেন, দেখা যায়নি কোনো বাদ-প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ।
কাউন্সিলরদের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে সভাপতি হয়েছেন খোকন। তিনি পেয়েছেন ১৮৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের ভোট ১৭৮।
অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছেন শ্যামল। তিনি পেয়েছেন ১৩৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাকিরুল ইসলাম পেয়েছেন ৭৪ ভোট।
পরাজিত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জুয়েল হাওলাদার শ্যামলকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, তারেক রহমানের দলে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যমেই সুগম হবে দেশের সামগ্রিক গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন।
ছাত্রদলের নতুন নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল সভাপতি খোকনের চেয়ে ৪ বছরের ছোট। শ্যামলের জন্ম ১৯৮৮ সালের ১৫ এপ্রিল। সে হিসাবে তার বয়স ৩১ বছরের বেশি।
শ্যামল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে ২০০৯ সালে অনার্স এবং ২০১০ সালে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনায় অধ্যয়নরত।
শ্যামলের বাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুরায়। তার পিতা মৃত মো. গিয়াস উদ্দিন পরিবার-পরিকল্পনা পরিদর্শক হিসেবে নরসিংদীর রায়পুরায় কর্মরত ছিলেন। শ্যামলের মা দেলোয়ারা বেগম রায়পুরা ১ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।
ব্যক্তিগতজীবনে অবিবাহিত শ্যামল একটি অরাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠেন। রায়পুরা আরকেআরএম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি; নটর ডেম কলেজ থেকে ২০০৫ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে ২০০৯ সালে অনার্স এবং ২০১০ সালে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনায় অধ্যয়নরত।
২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রদলের মাধ্যমে রাজনীতিতে পা রাখেন শ্যামল। ঢাবির ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। রাজনৈতিক কারণে শ্যামল ইতোমধ্যে দুটি মামলার শিকার হয়েছেন। ২০১৩ সালের ২৮ মে একবার গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি।
ছাত্রদলের সদ্যবিদায়ী সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানের অনুসারী শ্যামল। বড় বড় সিন্ডিকেটের প্রার্থীকে হারিয়ে এবার অনেকটা চমক দেখান শ্যামল। সাধারণ সম্পাদক পদে ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এদের মধ্যে শাহ নাওয়াজের পক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগের নেতারা একজোট হন। সাইফ মাহমুদ জুয়েলের পক্ষে ছিলেন বরিশাল অঞ্চলের সাবেক কয়েকজন ছাত্রদল নেতা। আমিনুর রহমান আমিন খুলনা অঞ্চলের। তার পক্ষে শক্ত অবস্থান নেন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতিসহ আরও কয়েক নেতা।
খুলনা বিভাগের আরেক প্রার্থী আবু তাহের। তার পক্ষে কাজ করেন ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির এক নেতা। জাকিরুল ইসলাম জাকিরের বাড়ি নেত্রকোনায়। তার পক্ষে ছিলেন ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির আরেক শীর্ষ নেতা এবং ছাত্রদলের সাবেক এক নেতা। তিনি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পান।
ছাত্রদলের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বলেন, নানা রাজনৈতিক কারণে ছাত্রদল তাদের অতীত ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারেনি। সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে আপ্রাণ চেষ্টা করব। রাজপথে থেকে বিএনপির ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করব। এ মুহূর্তে দলের চেয়ারপারসনের মুক্তির আন্দোলন ত্বরান্বিত ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম বেগবান করাই অন্যতম লক্ষ্য। শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা, মুক্তচিন্তার পরিবেশ সৃষ্টি, হলে সব সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিতে আমরা ছাত্রসমাজকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।