জুমবাংলা ডেস্ক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘দুর্নামের একটা ধারা ছাত্রলীগের নামের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে। ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফিরে আনা, এটা আমাদের প্রথম ও প্রধান কাজ।’ বুধবার (১ জানুয়ারি) বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ওরিয়েন্টেশন কোর্সের সূচনাপর্ব অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্রলীগের আচরণগত বিষয় নিয়ে কাদের বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, যত ভালোই উন্নয়ন হোক, আচরণ খারাপ হলে ভালো উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাবে। একটা খারাপ আচরণ ১০টা ভালো উন্নয়ন-অর্জনকে ঢেকে দিতে পারে। আমাদের নেত্রীর কোনো একটা অর্জন সারা জাতি প্রসংশার চোখে দেখছে। সারা বাংলা আলোচনা হচ্ছে। ঠিক তখনই এমন একটা কাণ্ড, একটা আচরণ বাস্তবে দেখতে পাই, আমাদের নেত্রীর সোনালি অর্জন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, ম্লান হয়ে যাচ্ছে। আমরা তখন খুব কষ্ট পাই। আমরা মর্মাহত হই, আমরা যারা ছাত্রলীগ করেছি, আমাদের মন বিষাদে ভরে যায়। এটা আমরা আশা করিনি।
সংগঠনটির সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘বুয়েটের যারা ছাত্রলীগের পরিচয়ে আবরারকে হত্যা করে এ ধরনের কর্মী আমাদের প্রয়োজন নেই। রাজশাহীতে পলিটেকনিক্যালের অধ্যক্ষকে যারা ছাত্রলীগের পরিচয়ে অপমান করলো এ ধরনের নেতা আমাদের প্রয়োজন নেই। গুটি কয়েকের জন্য গোটা পার্টি দুর্নামের ভাগিদার হতে পারে না। গুটি কয়েকের অপকর্মের জন্য গোটা সরকার দায়ভার নিতে পারে না।’
কাদের আরও বলেন, ‘অপ্রিয় হলেও কিছু সত্যি কথা বলছি, আজকে ছাত্রনেতারা ১২টার আগে ঘুম থেকে উঠে না। শুয়ে থাকে। সারা রাত জেগে জেগে কী করে আল্লাহই ভালো জানে। ছাত্রনেতার সামনে ২০-৩০, ৫০টা হুন্ডা। আর হুন্ডায় আরোহীদের কারো মাথায় হেলমেট নেই। এতে আমরা লজ্জা পাই। আমি সড়কমন্ত্রী হিসেবে লজ্জা পাই।’
ছাত্রলীগ নেতাদের বর্তমান দাপট প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ‘যখন দেখবেন ঝাঁকে-ঝাঁকে তরুণ হেলমেট নেই, সবাই আমাদের। ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হলেই ৫০টি হুন্ডা তাদের নিয়ে যাবে এমন নেতার দরকার নেই। পলিটিক্যাল রুম আছে, আশ্চর্যের ব্যাপার। কাদের-কাদের পলিটিক্যাল রুম আছে এটা খুঁজে বের করা হবে, যারা সিট বাণিজ্য, ভর্তি বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য করে তাদের দরকার নেই। অপরকে শিখাবো আমার অপরাধের বিচার হবে না। ওরিয়েন্টেশনের মূল বিষয় হচ্ছে আচরণ। ইতিহাস বেশি জানার দরকার, ভালো আচরণ দরকার।’ এ সময় কাদের ছাত্রলীগকে বঙ্গবন্ধুর পরিবার থেকে শিক্ষা নেয়ার আহ্বান জানান।
কাদের বলেন, ‘আমি আজ একটা কথা বলি, এদেশে সবাই আমরা হারিয়ে যাবো। দুটি অর্জন কখনো মুছে যাবে না, একটা হলো বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার সংগ্রাম। স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর এই জনপদে মৃত্যু হবে না। আর এই জনপদে অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য শেখ হাসিনার অর্জনের মৃত্যু হবে না। উত্তরাধিকার হিসেবে এই দুটি অর্জন এদেশে থেকে যাবে। এই জনপদ যতদিন থাকবে। বঙ্গবন্ধুর পরিবারে সবার দিকে একে একে তাকাও। আমাদের আর্দশ হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর পরিবার। সততার রাজনীতি, মেধার রাজনীতির প্রতীক হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর পরিবার।’ ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে ছাত্রলীগের ওরিয়েন্টেশন কোর্সের অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল প্রমুখ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



