জুমবাংলা ডেস্ক: বড় ছেলে অধ্যাপক। মেজো ছেলে কামিল পাস। ছোট ছেলে প্রকৌশলী। বাবা এবার দিচ্ছেন এসএসসি পরীক্ষা।
৬৭ বছর বয়সে এসে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন আবুল কালাম আজাদ নামের এক ব্যক্তি। এসএসসি পাস না করেও তিনি লিখেছেন অসংখ্য কবিতা, ছড়া, উপন্যাস ও গান। এবার কিশোর বয়সের ছেলে-মেয়েদের সাথে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে আলোচনায় এসেছেন তিনি। অনেকে বলছেন, তার বয়স বাড়লেও হাল ছাড়েননি। তিনি প্রমাণ করেছেন শিক্ষার কোনো বয়স নেই। তাকে দেখতে এখন অনেকে যাচ্ছেন তার বাড়িতে।
এই আবুল কালাম আজাদ শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়াকাজীরচর গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদ মন্ডলের ছেলে। পারিবারিক জীবনে তার তিন ছেলে। গত শুক্রবার পরীক্ষা শেষে আবুল কালাম আজাদ জানান, তার বয়স প্রায় ৬৭ বছর। তার ছেলেরা শিক্ষার আলোয় আলোকিত হচ্ছে। তিনি এই আলোকিত হতে চান। তা ছাড়া ছোট থেকেই তিনি কবিতা, ছড়া, গান ও উপ্যনাস লিখে আসছেন। ইতিমধ্যে তার লেখা ‘দেহদাহ’ ও ‘দেশরত্ন’ নামে দুটি কবিতার বই প্রকাশ করেছেন। এতেও প্রশংসিত হয়ে উঠেছেন তিনি। তাই বই লেখার পাশাপাশি এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। তিনি নিজের জীবনকে সাজাতে চান নতুনভাবে।
তিনি বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধু ও তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কবিতার বই লিখেছি। দেশের উন্নয়ন নিয়ে আমার লেখা আরেকটি বই ছাপাখানায় দিয়েছি। আমি চাই, আমার একটা বই যেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেখেন। ’
তার মেজো ছেলে আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কামিল পাস করেছি। আমার বড় ভাই প্রফেসর। একটি কলেজে চাকরি করছেন। আমার ছোট ভাই ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছে। আমাদের পরিবারের প্রায় সবাই শিক্ষিত। বাবাও অনেক দিন থেকে বলছেন এসএসসি পরীক্ষা দেবেন। তাই আমরা তাকে সহযোগিতা করছি। ’ তিনি আরো বলেন, ‘বাবা যেসব গান, কবিতা, ছড়া ও উপন্যাস লিখেছেন তা পড়ে আমরাও মুগ্ধ। ’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আলম তালুকদার বলেন, তিনি উন্মুক্ত বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধীনে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। কিশোর বয়সের শিক্ষার্থীদের সাথে পরীক্ষা দেওয়ায় তিনি আলোচনায় এসেছেন। তার লেখার মধ্যে কোনো জড়তা নেই। তিনি সবাইকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার কোনো বয়স নেই। তাকে দেখে অনেকের মনেই শিক্ষার প্রতি নতুন করে স্বপ্ন দেখাবে।
আবুল কালাম আজাদ নিজের প্রতিভা দিয়ে কবিতা, ছড়া, গান ও উপ্যনাস লিখেছেন। কিন্তু একাডেমিক যোগ্যতা অর্জনে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার দৃষ্টান্ত অনেকের মনে নাড়া দেবে। এভাবেই হয়তো তার মতো আরো অনেকে এগিয়ে আসবে শিক্ষা গ্রহণে। এমনটাই মনে করেন সচেতন মানুষরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।