জুমবাংলা ডেস্ক: রংপুরের পীরগঞ্জে সাম্প্রদায়িক হামলার পর ক্ষতিগ্রস্ত বাসাগুলোতে এতদিন ছিল না কোনও রান্নার আয়োজন। ঘটনার ছয়দিন পর চুলা জ্বলেছে হামলার শিকার স্থানীয় বাসিন্দা পুষ্পরানীর বাসায়। তার চুলায় রান্নার হাড়ি চড়িয়েছেন খোদ ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।
শনিবার (২৩ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পীরগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু গ্রাম পরিদর্শনে গিয়েছেন ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। সেখানে তিনি বাড়ি বাড়িতে গিয়ে হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজখবর নেন। পরে পুষ্প রানীর বাড়িতে গেলে তার চুলায় রান্নার হাড়ি তুলে দেন তিনি। এ সময় জেলা প্রশাসক আসিব আহসানসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পুষ্পরানী বলেন, ‘এত দিন তো মন্দিরের ওটে (ওখানে) পাকশাক হইছে। কাল আইতোত (রাতে) ওটে খাইচি। আইজ সবাই বাড়ি বাড়ি রান্না করোচি।’
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা ভট্টু চন্দ্র বলেন, ‘শুকুরবার সন্ধ্যের আগে মাইকিন (মাইকিং) করে বলচে, বাড়ি বাড়ি পাক করতে। আজ আমরা পাক করছি।’
মহাদেব চন্দ্র নামের একজন বলেন, ‘সংসার করি খাইতে যা কিছু নাগে সমস্ত কিচু দিচে। পাক করতে সমস্যা কী। ইউএনও স্যার কইচে সোগ (সব) তো দিচি, পাক করি খাও। এলা সমস্যা নাই, তাই আইজ পাক করতে কইচি বাড়ি ওয়ালাক (স্ত্রী)।’
আরেক ক্ষতিগ্রস্ত কুশুম বালা বলেন, ‘আইজ একনা শান্তি নাগচে। বাড়িত চুলা জ্বালাইচি। সবাই মিলি খামো। এতদিন তো ওত্তি খাচি, ভয় নাগটিল এলা ভয় টয় নাগে না।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘৬১ পরিবারকে ১০১ বান্ডেল ঢেউটিন দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া নগদ অর্থের পাশাপাশি দেয়া হয়েছে খাবার, দুটি করে কম্বল, শাড়ি-লুঙ্গি।’
উল্লেখ্য, গেল রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রামনাথপুরের করিমপুর উত্তর পাড়ার হিন্দুপল্লিতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় তারা বাসা বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরে অংশ নেয় শত শত হামলাকারী। ওই হামলার ঘটনায় মোট তিনটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের মামলায় ৩৭ আসামিকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।