আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্পের মাধ্যমে ভারত সরকার যেখানে দেশে কন্যাভ্রুণ হ*ত্যা বন্ধ ও মেয়েদের স্বাবলম্বী করে তুলতে চাইছে সেখানে বিস্ময়কর এক ঘটনা সামনে এল সকলের। জানা গেল, তিন মাসে একটিও কন্যাসন্তান জন্মায়নি উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার ১৩৩টি গ্রামে।
সম্প্রতি শিশু-স্বাস্থ্য নিয়ে সমীক্ষা চালায় জেলার স্বাস্থ্য দফতর। সেখান থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন দেখে প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেননি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। প্রতিবেদন বলছে, উত্তরকাশী জেলায় তিন মাসে যে ২১৬টি শিশু জন্মগ্রহণ করেছে তাদের সবাই পুত্রসন্তান। এই ঘটনায় বিস্মিত জেলা প্রশাসনও। তারাও বিষয়টিকে উদ্বেজনক বলছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভ্রূণহত্যার কারণে এমন পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে।
ভারতে ১৯৯৪ সালে কন্যাভ্রুণ হ*ত্যা নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু ওই দেশের বহু অঞ্চলে এখনও এই প্রথা প্রচলিত রয়েছে। অনেক পিতামাতাই পুত্র সন্তানকে পরিবারের ভবিষ্যৎ উপার্জনকারী এবং কন্যা সন্তানদের ব্যয়বহুল দায় মনে করেন।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, আইনে নিষিদ্ধ থাকলেও মেয়ের বিয়ের সময় পিতামাতাকে প্রচুর পরিমাণে যৌতুক দিতে হয় বহু অঞ্চলে। অন্যদিকে বৃদ্ধ বয়সে বাবা-মায়ের নির্ভরতার জায়গাও থাকে ছেলে সন্তান ওপর। মেয়ে সন্তান মানেই পিতা-মাতার ওপর অর্থনৈতিক বোঝার মতো। এ কারণে ভারতের অনেক অঞ্চলে পুত্র সন্তানকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়।
উত্তরকাশীর জেলা প্রশাসক আশিস চৌহান বলেন, ‘আমরা সেই সব অঞ্চলকে চিহ্নিত করেছি যেখানে কন্যাসন্তানের সংখ্যা শূন্য কিংবা এক অঙ্কের। আমরা বুঝতে চাইছি ওই এলাকাগুলিতে এমন অবস্থা কেন হলো। বিস্তৃত সমীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ করলে তবেই কারণটা জানা যাবে’।তিনি আরও বলেন, ‘যদি কোনও পিতামাতা বিরুদ্ধে কন্যাভ্রুণ হত্যার প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
এ ঘটনায় বিধানসভার সদস্য গোপাল রাওয়াত বলেন, ‘জেলার ১৩২ টি গ্রামে কন্যা শিশুর জন্ম হার শূন্য হওয়ার ঘটনা খুবই দুঃখজনক’। তিনি আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদফতরকে এমন ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান ও এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি আমরা’।
গত বছর মহারাষ্ট্রে একটি হাসপাতালের কাছে ১৯ টি অপরিণত কন্যাভ্রুণের দে*হ উদ্ধার করে পুলিশ। সর্বশেষ ২০১১ সালের আদমশুমারিতে দেখা গেছে, ভারতে ১ হাজার পুরুষের বিপরীতে নারী রয়েছেন ৯৪৩ জন। সূত্র : ইনডিপেন্ডেন্ট,এনডিটিভি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।