জুমবাংলা ডেস্ক : জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলার কনকপুরে নিজ বাড়ি সংলগ্ন মসজিদে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়।
এর আগে জোহরের নামাজের পর মাওলানা রায়পুরীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন মরহুমের দ্বিতীয় ছেলে মাওলানা সালেহ আহমদ সোহাইল। জানাজায় বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, গহরপুর মাদ্রাসার মুহতামিম ও বেফাক সহ-সভাপতি মাওলানা মোসলেহ উদ্দিন রাজু, জামেয়া রেঙা সিলেটের মুহতামিম মাওলানা মুহিউল ইসলাম বোরহান, কাতিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ মাওলানা এমদাদুল্লাহ, খতিব উবায়দুল হক (রহ.)-এর ছেলে মাওলানা আতাউল হক জালালাবাদী ও মাওলানা শহীদুল হক জালালাবাদী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব ওয়ালী উল্লাহ আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি জাকির হোসাইন খান প্রমুখ।
এর আগে শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় ইন্তেকাল করেন মাওলানা শায়খ মনসুরুল হাসান রায়পুরী। তার মৃত্যুতে আলেমসমাজে শোকের ছায়া নেমে আসে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
মাওলানা শায়খ মনসুরুল হাসান রায়পুরী মৃত্যুর আগে প্রায় মাসখানেক ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার পিতা শায়েখ হাবিবুর রহমান রায়পুরী (রহ.) ছিলেন ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক শায়খুল ইসলাম সাইয়্যেদ হোসাইন আহমদ মাদানি (রহ.)-এর ঘনিষ্ঠ শিষ্য ও খলিফা।
মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সাবেক খতিব মাওলানা উবায়দুল হক (রহ.)-এর বড় জামাতা। মৃত্যুকালে তিনি চার ছেলে ও চার মেয়ে রেখে গেছেন।
অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ হিসেবে ছয় দশকের বর্ণাঢ্য অতীতের পাশাপাশি তিনি একজন বিদগ্ধ আলেম ও মুহাদ্দিস ছিলেন। তিনি ঢাকার নতুনবাগ মাদরাসার শায়খুল হাদীস ছিলেন। আমৃত্যু সিলেট কারাগার জামে মসজিদের খতিবের দায়িত্ব পালন করেছেন।
বিভিন্ন মহলের শোক
মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াত আমির ডা.শফিকুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শোকবার্তায় বলেন, বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ ও দ্বীনি আলেম মরহুম আল্লামা মনসুরুল হাসান রায়পুরী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান রেখেছেন। একজন প্রসিদ্ধ ইসলামিক পন্ডিত হিসেবে তিনি ছিলেন সর্বজন শ্রদ্ধেয়। তিনি ছিলেন সব সময় ন্যায় ও ইসসাফের পক্ষে সোচ্চার। আল্লামা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে দেশ একজন গুণী আলেমকে হারালো। এ শূন্যস্থান সহজে পূরণ হবার নয়।
জামায়াত আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (একাংশের) শীর্ষ নেতা মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী গতরাত ইন্তিকাল ফরমাইয়াছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন…।
জীবদ্দশায় তিনি ছিলেন ইসলামের একজন নিষ্ঠাবান খাদেম এবং একজন দক্ষ সংগঠক।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার জীবনের তামাম নেক খেদমতকে কবুল করুন, ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে জান্নাতুল ফিরদাউসের মেহমান হিসেবে কবুল করুন।
মাওলানা শায়খ মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে মরহুমের মাগফিরাত কামনা করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।
এক শোকবাণীতে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, মরহুম মনসুরুল হাসান রহ. ইসলামের প্রচার ও ইসলামী রাজনীতিতে অসামান্য অবদান রেখেছেন। তিনি ফেরাকে বাতিলাসহ ইসলামবিরোধী শক্তির মোকাবেলায় অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। তার ইন্তেকালে ইসলামী রাজনৈতিক অঙ্গনে যে শূণ্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা সহজে পুরণ হবার নয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।