মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : জমির মালিকানা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিম হাসলী গ্রামে ৩০০টি মেহগনি গাছ তুলে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ইয়াসমিন গত মঙ্গলবার (১৭ জুন) মানিকগঞ্জ সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী ইয়াসমিন লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ১৭ জুন মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে তার শাশুড়ীর সম্পত্তি – আরএস ৩৮৭ খতিয়ানের ২০৪২ দাগভুক্ত ৭৭ ডিসিমেল জমিতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ১২ জন অনধিকার প্রবেশ করেন। তারা সেখান থেকে প্রায় ৩০০টি মেহগনি গাছ তুলে নিয়ে যান। এতে আনুমানিক ২ লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, তিনি ও তার শাশুড়ী এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ তুলে নেওয়ার কাজে বাঁধা দিলে আসামিরা তাদের ওপর চড়াও হন। এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মারেন। একপর্যায়ে আবুল কাশেম ও আব্দুর রহমান তাদের কাপড় টেনে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। এরপর সোলাইমান আমাকে গলা চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা চালায়। তার চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। হামলাকারীরা যাওয়ার সময় ইয়াসমিনের কানের ৮ আনা ওজনের স্বর্ণের দুল ও তার শাশুড়ীর গলার ৮ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিম হাসলী গ্রামের আবুল কাশেম (৫৮), আব্দুর রহমান (৬০), আতোয়ার হোসেন (৫৫), জাহাঙ্গীর হোসেন (২৩), সোলাইমান (২৩), ইয়াছিন (২২), বেদেনা (৪০), মাজেদা (৫৫), মর্জিনা (৩৭), সিংগাইর উপজেলার চারিগ্রামে গ্রামের নাজিমুদ্দিন (৫৮), আজাহার (৫৫), শাজাহান (৬২)-কে বিবাদী করে অভিযোগ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ইয়াসমিন বলেন, ‘জমির মালিকানা নিয়ে ঝামেলা। গত ১৭ জুন সকালে আমার শাশুড়ীর পৈতৃক জমিতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ঢুকে পড়ে প্রায় ৩০০টি মেহগনি গাছ তুলে নিয়ে যায়। আমি ও আমার শাশুড়ী বাধা দিতে গেলে তারা আমাদের মারধর করে এবং শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। একপর্যায়ে সোলাইমান আমাকে গলা চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা করে। চিৎকারে লোকজন ছুটে এলে তারা পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় আমার কানের দুল এবং শাশুড়ীর গলার চেইন ছিনিয়ে নেয়। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
এর আগে, এই জমি নিয়ে গত ২১মে পুলিশ সুপার বরাবর একটি অভিযোগপত্র জমা দেন ভুক্তভোগী ইয়াসমিনের দেবর মোহাম্মাদ আলী।
তিনি জানান, ‘এই জমিটি তার মা-বাবার নিজ নামে হাল নামজারি করে রেকর্ডভুক্ত এবং দীর্ঘদিন ধরে তারা ভোগদখল করে আসছেন। বর্তমানে তার দুই ভাই বিদেশে কর্মরত এবং তিনি নিজে হরিরামপুর উপজেলায় চাকরি করছেন। ফলে বৃদ্ধ মা-বাবা স্থানীয় এক বর্গাচাষীর মাধ্যমে জমিটি আবাদ করে থাকেন। গত ২১ মে সকাল ১০টার দিকে বর্গাচাষী জমিতে হাল চাষ করতে গেলে আবুল কাশেম, আব্দুর রহমান, আতোয়ার রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, সোলাইমান, নাজিমুদ্দিন, আজাহার ও সাজাহান নামে কয়েকজন লোক দেশীয় অস্ত্রসহ জমিতে অনধিকার প্রবেশ করে এবং বেদখলের হুমকি দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বসতবাড়ির ১৪ শতক জমি ইতোমধ্যে আদালতের আদেশ অমান্য করে জোরপূর্বক দখলে রেখেছে বিবাদীরা। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আমাদের অংশ বুঝিয়ে না দিয়ে উল্টো আমাদের বসতভিটাসহ সব জমি থেকে উচ্ছেদের হুমকি দিচ্ছে তারা। তাই বাধ্য হেয়ে পুলিশ সুপার বরাবর আমি একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম।’
এ প্রসঙ্গে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।