মেলবোর্ন টেস্ট জিততে অস্ট্রেলিয়ার তখনো দরকার ৪ উইকেট। অজি পেসার প্যাট কামিন্সের একটি বাউন্সারে ফাইন লেগে মারতে চেয়েছিলেন যশস্বী জয়সওয়াল। বল অবশ্য উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারির গ্লাভসে জমা পড়ে। ফিল্ড আম্পায়ার আউট বনা দেওয়ায় কামিন্স রিভিউ নিলেতৃতীয় আম্পায়ার শরফুদ্দৌলার ইবনে সৈকত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেন। আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন ২০৮ বলে ৮ চারে ৮৪ রানের ইনিংস খেলা জয়সওয়াল।
রিভিউ নেওয়ার রিপ্লেতে দেখা যায় বল ব্যাট ও গ্লাভস ছুঁয়েছে। শরফুদ্দৌলাও সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় জানান, তিনি স্পষ্ট করেই দেখতে পেয়েছেন বলের গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। তবে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য তিনি স্নিকোর সাহায্য চান। কিন্তু স্নিকোগ্রাফে পরিবর্তন আসেনি। তবুও বাংলাদেশি আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত জানান।
ধারাভাষ্যকাররা অবশ্য সৈকতের সিদ্ধান্তের পক্ষেই নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন। মাঠেই আম্পায়ারদের উপর ক্ষোভ ঝেড়েছিলেন জয়সয়াল। মাঠ ছাড়ার সময় কিছু একটা বলছিলেন। এ সময় রিকি পন্টিং বলেন, ‘তারা এটা নিয়ে যা খুশি তাইই বলতে পারে। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে ওটা (বল) তার হাতে লেগেছে। আর আমি তখনই খেয়াল করেছি জয়সওয়াল হাঁটতে শুরু করেছে। স্নিকো শতভাগ সঠিক বলে প্রমাণিত না, কিন্তু আম্পায়ার বলের দিক পরিবর্তন আমলে নিয়েছেন, আর ফ্রেম ঠিক সে সময় থামাতে পেরেছেন যখন বল গ্লাভসে লেগেছে।’
রবি শাস্ত্রী বলেছেন, ‘তৃতীয় আম্পায়ার চাইলে স্নিকো নাও মানতে পারেন। সেই ক্ষমতা তার আছে। তিনি দেখছেন বল গ্লাভসে লাগার পর দিক পরিবর্তন করেছে। তাই তিনি আউট দিয়েছেন। আমার মনে হয় সঠিক সিদ্ধান্ত।’
সাবেক আম্পায়ার সাইমন টফেল বাংলাদেশি আম্পায়ারের পক্ষে বলেছেন, ‘শেষ পর্যন্ত থার্ড আম্পায়ার সঠিক সিদ্ধান্তই দিয়েছেন। যখন এখন আম্পায়ার স্পষ্টভাবে ব্যাটের স্পর্শে বলের দিক পরিবর্তন দেখতে পাবেন, তখন আর বেশি কিছু পরখ করার দরকার নেই। অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে কেবল সিদ্ধান্ত প্রমাণের জন্য।’
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেন, ‘স্নিকোতে দেখা যায়নি বল লেগেছে কি না। তবে আমার মনে হয় বল লেগেছে। তবে বেশির ভাগ সময় সিদ্ধান্তগুলো আমাদের বিরুদ্ধে যায়। সেটা নিয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না।’
এর আগেও বিভিন্ন সময় স্নিকো নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। কখনো বল না লাগলেও স্নিকোতে আওয়াজ ধরা পড়েছে, আবার কখনও ব্যাটে বল লাগলেও তা ধরা পড়েনি। এই প্রযুক্তি কতটা সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই।
তবে জয়সওয়ালের ক্ষেত্রে আরেকটি যুক্তি প্রযোজ্য। স্নিকোর মাইক থাকে স্টাম্পের পিছনে মাটির নিচে। উইকেটের উচ্চতায় বল থাকলে সেই আওয়াজ যতটা সহজে ধরা পড়ে, সেটা বেশি উচ্চতা থাকলে সম্ভব নয়।
জয়সওয়ালের উচ্চতা ৬ ফুট। বল তার মাথার কাছ দিয়ে যাচ্ছিল। অর্থাৎ স্টাম্প মাইক ছিল অন্তত ৬ ফুট নিচে ছিল। সেই কারণে গ্লাভসের মতো নরম জিনিসে বলের স্পর্শ ধরা নাও পড়তে পারে স্নিকোতে। তাই তৃতীয় আম্পায়ার তাঁর পর্যবেক্ষণকে গুরুত্ব দিয়েছেন। তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে তাই অনেকেই সাহসী সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।