জুমবাংলা ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশের ১৯টি জেলার ৭০ উপজেলার চার কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শহিদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের গড় তাপমাত্রা সাম্প্রতিক সময়ে মে মাসে এক ডিগ্রি এবং নভেম্বর মাসে ০.৫ ডিগ্রি বেড়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গ্রীষ্মকালে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি এখন ১০০ কিলোমিটার নদীতে প্রবেশ করছে।
‘গড় বৃষ্টিপাত বেড়েছে। বিশেষ করে অল্প সময়ে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে শহর অঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতাও রয়েছে। রুক্ষ সমুদ্র জেলেদের জীবিকার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে,’ বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশের ভারসাম্যও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ‘এজন্য আমরা অতীতের মতো বিভিন্ন ঋতুতে কোনো ভিন্নতা দেখতে পাই না।’
‘ফলে এটি আমাদের জীববৈচিত্র্যের ওপর প্রভাব ফেলছে এবং কৃষকদের কৃষিকাজ ও জীবিকার ওপর আমরা নেতিবাচক প্রভাব দেখতে পাচ্ছি। এটি আমাদের কৃষি উৎপাদন এবং খাদ্য নিরাপত্তায় হুমকি সৃষ্টি করেছে,’ যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পোকামাকড় আক্রান্ত বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে।
তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জাতীয় ক্ষমতা বাড়াতে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়নসহ তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের বর্ণনা দেন।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, তার সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০ সালে সারাদেশে এক কোটি গাছ লাগানোর একটি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে যা বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১ এ মোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডার রয়েছে এবং প্রত্যাশা করা হচ্ছে বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী প্রতি ট্রান্সপন্ডার থেকে বছরে ১ মিলিয়ন থেকে ১.২৫ মিলিয়ন ডলার আয় হতে পারে।
একেএম রহমতুল্লাহর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুজিব বর্ষ’ চলাকালীন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবনের নানা দিক আরও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হবে। ‘এর মাধ্যমে বিশ্ববাসী বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও জীবনকে নতুন ভাবে জানতে সক্ষম হবেন,’ বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ২০২০-২১ সালের জন্য ইউনেসকো ৫৯টি অ্যানিভার্সারি উদযাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এবং তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন।
‘বঙ্গবন্ধুকে একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে নয়, বরং সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের প্রতীক হিসেবে তারা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তারা বিশেষকরে বঙ্গবন্ধুর অবিচল সংগ্রাম ও ত্যাগের বিষয়গুলো বিবেচনা করেছে।’
‘ইউনেসকো বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় এই আয়োজন আন্তর্জাতিক রূপ লাভ করল এবং ইউনেসকোর তত্ত্বাবধানে এখন সারা বিশ্ব নানা আয়োজনে জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করবে,’ বলেন হাসিনা।
তিনি বলেন, বাঙালি জাতির ও বাংলাদেশের জনগণের জন্য বঙ্গবন্ধুর সুদীর্ঘ সংগ্রাম ও ত্যাগের ইতিহাস বিশ্ববাসীর কাছে আরও বড় পরিসরে প্রকাশিত হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।