জুমবাংলা ডেস্ক: নরসিংদীর ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেই জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন।
প্রাথমিক তদন্তে কমিটির সদস্য অধ্যাপক আব্দুল হাসিব চৌধুরী জানান, এখানকার সঞ্চালন লাইনের কোনো একটি ইন্টারকানেকশনের মধ্যে ত্রুটির কারণে এই ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ ২০১৪ সালের বিপর্যয়ের পরও সঞ্চালন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন হয়নি।
তিনি বলছেন, বিদ্যুতের উৎপাদন ও বিতরণের সাথে সঞ্চালন ব্যবস্থার সমন্বয়হীনতার কারণেই মঙ্গলবারের বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটেছে। বিদ্যুৎ সরবরাহের কোনো একটি লাইন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অন্য লাইন ওভার লোড হয়ে সেটা ট্রিপ করে। এ কারণে পূর্বাঞ্চলের গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বল্পতা দেখা দেয়।
দেশের জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে মঙ্গলবার বেলা দুইটা পাঁচ মিনিটে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের সব এলাকার বিদ্যুৎ একসাথে চলে যায়। সংস্কার কাজ শেষে রাত ৯টার দিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো একে একে পুরো লোডে ফিরে আসতে সময় লাগে আরো কয়েক ঘণ্টা। তবে কি কারণে এই বিপর্যয় সেটা তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।
পূর্বাঞ্চল গ্রিডে বিদ্যুৎ না থাকায় দেশের প্রায় ৬৫ শতাংশ মানুষকে প্রায় আট ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকতে হয়। কোন কোন এলাকা এরচেয়েও বেশি সময় অন্ধকারে ছিলো। তবে আসল কারণ জানতে বুধবার নরসিংদীর ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে যায় পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অফ বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ছয় সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক ইয়াকুব এলাহী চৌধুরীর নেতৃত্বে ছয় সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কন্টোলরুম পরিদর্শন করেন। তদন্ত কমিটির প্রধান পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক ইয়াকুব এলাহী চৌধুরী জানান, জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে দেশের কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাওয়ার কন্টোলরুমগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সবগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কী কারণে বিপর্যয় দেখা দেয়, তা জানা যাবে।
ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে পরিদর্শনে পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গে পরামর্শক শামছুর জোহা, নির্বাহী প্রকৌশলী আরেফিন সিদ্দিক ও সাইদুল ইসলামসহ তদন্ত কমিটির ছয় সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে ঘোড়াশালে পাঁচ নম্বর ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ইউনিটটি চালু করতে কাজ চলছে বলে জানান প্রধান প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম।
এদিকে, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন মনে করছেন, বিদ্যুতের ঘোড়াশাল হাবে কোন ত্রুটির কারণেই এমনটা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে।
তদন্ত কমিটির সদস্য বুয়েট অধ্যাপক আব্দুল হাসিব চৌধুরী জানান, ২০১৪ সালের ঘটনার পর বিশেষজ্ঞ কমিটির কিছু সিদ্ধান্ত কার্যকরের কারণে এবার সারাদেশ সঙ্কটে পড়েনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন লোড ডেসপাস সেন্টার-এনএলডিসি থেকে নির্ধারিত কোডের ফ্রিকোয়েন্সির সঙ্গে বিদ্যুতের উৎপাদন ও বিতরণের সমন্বয়টা ঠিকমতো না হবার কারণেই এই বিপর্যয়।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, সামগ্রিকভাবে অব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণহীনতার কারণেই সারাদেশে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হয়েছে। ভবিষ্যৎ এমন দুর্ঘটনা এড়াতে সবার আগে উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থাকে এনএলডিসির নিয়ম মেনে চলার তাগিদও দেন এই বিশেষজ্ঞ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।