পৃথিবীতে অনেক দ্বীপের কথা আমরা জানি। কিন্তু খরগোশের দ্বীপ বলে যে একটা দ্বীপ আছে সেটা অনেকেই জানে না। জাপানে ওকুনোশিমা নামে একটি দ্বীপ আছে যা খরগোশের জন্য বিখ্যাত। সমুদ্রবেষ্টিত দ্বীপটিতে যেদিকেই চোখ যাবে শুধু খরগোশ আর খরগোশ।
মনে হবে ভুল করে কোনো খরগোশের দেশে চলে এসেছেন আপনি। জাপান সাগরে হিরোশিমা আর শিকোকু নামে দুটো দ্বীপ আছে। ওই দ্বীপ দুটোর মাঝে ছোট্ট আরেকটা দ্বীপ, নাম ওকুনোশিমা। এই ওকুনোশিমা দ্বীপই এখন খরগোশদের বলা চলে। ১৯২৯ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত ওকুনোশিমা ছিলো জাপানের সেনাবাহিনীর অস্ত্র গুদাম।
তবে বন্দুক, রাইফেল, ট্যাংক কিংবা গোলাবারুদের মতো অস্ত্র নয়। যুদ্ধে যেসব গ্যাসীয় ও রাসায়ানিক পদার্থ ব্যবহার করা হতো, তার ভাগাড় ছিলো এই দ্বীপ। কারণ একটাই, দ্বীপটি ছিলো লোকচক্ষুর আড়ালে। এজন্য দ্বীপের কথাটা এক প্রকার গোপনই ছিলো জাপানিদের কাছে।
এমনকি জাপানের মানচিত্র থেকেও দ্বীপটিকে মুছে ফেলা হয়েছিলো। তারপর, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সব ধরনের রাসায়ানিক পদার্থ পুড়িয়ে ফেলা হয়। আর কিছু মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়। আর এ ব্যাপার নিয়ে একেবারেই চুপচাপ হয়ে যায় জাপানি কর্তৃপক্ষ।
তখন, ওই দ্বীপটিতে মানুষজনের আনাগোনাও ছিলো নিষিদ্ধ। কারণ, মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর নানান গ্যাস ভেসে বেড়াতো দ্বীপের বাতাসে। তারপর কেটে গেলো অনেক বছর। আবার, প্রাণীর বসবাসের উপযুক্ত হয়েছে কিনা এটা পরীক্ষা করতে এক পাল খরগোশ এনে ছেড়ে দেয়া হয় দ্বীপটিতে।
কেউ কেউ বলে, ১৯৭১ সালে একদল স্কুলশিক্ষার্থী বেড়াতে এসেছিলো দ্বীপে। সঙ্গে আনা আটটি খরগোশকে ওরাই ছেড়ে দিয়ে যায় ওখানে। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। সাত লাখ বর্গমিটারের দ্বীপটিতে বাড়তে লাগলো খরগোশের সংখ্যা। দ্বীপটিতে নেই কোনো খরগোশ শিকারি। কাজেই নির্ভয়ে দ্বীপে ঘুরে বেড়ায় খরগোশ। আর খরগোশদের কারণে দ্বীপের নামই হয়ে গেছে “উসাগি শিম” মানে ‘খরগোশের দ্বীপ। এই দ্বীপ দেখতে এখন ওকুনোশিমায় পাড়ি জমায় অনেক পর্যটক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।