জুমবাংলা ডেস্ক : শেখ হাসিনার পতনের দিন হামলার শিকার হয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন।
৫ আগস্ট গণআন্দোলন ও জনরোষের মুখে শেখ হাসিনার পতনের দিন বিকাল ৪টার পর ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে কিছু ‘উগ্র ডানপন্থিদের’ হাতে আক্রান্ত হন ৭৫ বছর বয়সি এই অধ্যাপক।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে সেই দিনের হামলার বর্ণনা দিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে এর বিচার চেয়েছেন আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী আয়েশা হোসেনে, যিনি বলেছেন, এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছিলেন তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর ক্ষমতাচ্যুত সরকারের নিষ্ঠুর হামলায় প্রাণহানির ঘটনায় কঠোর সমালোচনা করেছিলেন অধ্যাপক আনোয়ার। এটা সবাই জানেন এবং এর প্রমাণও আছে।
ঘটনার বর্ণনায় আয়েশা হোসেন বলেন, সোমবার (৫ অগাস্ট) তাদের ছেলে শাহবাগে গিয়ে তার বন্ধু ও সহকর্মীদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, যেখানে উচ্ছ্বসিত তরুণরা জড়ো হয়েছিল। এক পর্যায়ে বেলা সাড়ে ৩টায় তারা পরিবারসহ উত্তরা থেকে রওনা হয়ে হাজার হাজার মানুষে মুখর এয়ারপোর্ট সড়ক ধরে রিকশায় এগোতে থাকেন।
ভিড় ঢেলে রিকশা এগোতে না পারায় হেঁটে হেঁটে বিমানবন্দরের সামনে এলেই ৪০ বছরের কাছাকাছি বয়সি এক ব্যক্তি তার স্বামীর দিকে এগিয়ে এসে চিৎকার করতে থাকেন।
“আমি আপনাকে চিনেছি। আপনি সেই অধ্যাপক, যিনি ট্রাইব্যুনালে (আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত) জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে ছিলেন। আপনাকে আমরা টেলিভিশনে দেখেছি।”
এসব কথা বলে ওই ব্যক্তি অধ্যাপক আনোয়ারকে জোর করে বিমানবন্দরের উল্টো দিকে একটি সরু গলিতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তিনি ও পরিবারের সদস্যরা ঠেকান বলে বিবৃতিতে বলেছেন আয়েশা আনোয়ার।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিভিন্ন জিনিসপত্র দিয়ে উত্তেজিত লোকজন অধ্যাপক আনোয়ারকে পিটাতে থাকে, তখন একজন বলে ওঠে, “মাথায় আঘাত কর, তাকে মেরে ফেল।”
চিকিৎসাধীন অধ্যাপক আনোয়ার যতটুকু মনে করতে পারছেন, তাকে ইট-পাথর ও লোহার বড় দিয়ে মুখমণ্ডল, কপাল, মাথা ও বুকে বেধড়ক আঘাত করা হয়।
এরপর কয়েক মিনিট ধরে তাদের মারধরের শিকার হওয়া তার স্বামীর সাদা শার্ট রক্তে ভিজে যাওয়ার বর্ণনা দিয়ে আয়েশা আনোয়ার বলেন, ওই অবস্থায় অধ্যাপক আনোয়ারকে তারা বিমাববন্দরের প্রবেশমুখের দিকে একটি আর্মি ব্যারিকেডের কাছে নিয়ে যান। তখন তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসুন দুজন মানুষ।
ব্যারিকেডের সামনে থাকা সেনা কর্মকর্তাদের সহায়তায় তাকে বিমানবন্দরের ভেতরে নেওয়া হয় এবং বিমানবাহিনীর কর্মকর্তাদের সহায়তায় সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
বিভিন্ন সময় তার স্বামীর ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন ও এসবে তার শারীরিক সমস্যা হওয়ার কথা তুলে ধরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে নিরাপত্তা দাবি করে ঘটনার বিচার চেয়েছেন আয়েশা আনোয়ার। আবার যেন তার স্বামী ও তার পরিবারের ওপর হামলা না হয়, সে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তিনি বলেছেন, সেই দেশের সব নাগরিকের নিরাপত্তা ও মানবাধিকার নিশ্চিত করা হবে বলে তার আশা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।