জুমবাংলা ডেস্ক : রংপুরের মিঠাপুকুরে প্রায় এক মাস ধরে স্বামীর বাড়ি থেকে হোসনা বেগম (২৩) নামে গৃহবধূ নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজের পরিবারের দাবি তাঁকে নির্যাতনের পর হত্যা করে লাশ গোপন করা হয়েছে। এঘটনায় গতকাল শুক্রবার মিঠাপুকুর থানায় হোসনার স্বামী আনারুল হক ও তাঁর মায়ের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে গৃহবধূর বাবা। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়নের সন্তোষপুর আকন্দপাড়ায়।
পরিবার ও লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, বদরগঞ্জ উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের হাসমত আলীর মেয়ে হোসনা বেগম। প্রায় দেড় বছর আগে মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়া মাসিমপুর গ্রামের আকমল হোসেনের ছেলে আনারুলের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় হোসনা বেগমের। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই নানা অত্যাচার চলত হোসনার ওপর। গত ২৮ জুলাই বাবার বাড়ি থেকে হোসনা বেগম স্বামীর বাড়িতে যান। এর পর থেকে হোসনার সঙ্গে বাবার বাড়ির লোকজনের যোগাযোগ ছিল না। গত ২৬ আগস্ট মেয়ের খোঁজে বদরগঞ্জ থেকে মেয়ের বাড়িতে যান হোসনার বাবা হাসমত আলী। সেখানে গিয়ে ঘরে তালা মারা দেখেন তিনি। পরে পাশের বাড়িতে আনারুলের মা আইরিন বেগমের খোঁজ মেলে। হাসমত আলী তার কাছে জানতে চান, বাড়িতে তালা মারা কেন এবং হোসনা কোথায়। এতে সন্তোষজনক কোন উত্তর দিতে পারেনি আইরিন বেগম।
পরে আশপাশের লোকজনের মাধ্যমে হাসমত জানতে পারেন, কিছুদিন আগে হোসনাকে মারপিট করা হলে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পর থেকে আর তার দেখা পাওয়া যায়নি। এতে হাসমত আলীর ধারণা হয় মেয়েকে হত্যা করে লাশ গুম করে রাখা হয়েছে।
মেয়ের সন্ধান পেতে হাসমত আলী ওই এলাকার ইউপি মেম্বার সাজু মিয়ার মাধ্যমে গতকাল শুক্রবার সেখানে সালিস বৈঠক ডাকেন। কিন্তু ওই সালিস বৈঠকে আনারুল ও তার মা আইরিন বেগম হাজির হননি। এমনকি আশপাশের কোথাও তাদের খুঁজেও পাওয়া যায়নি। এঘটনায় ওইদিন মিঠাপুকুর থানায় জামাই ও তাঁর মায়ের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন হাসমত আলী।
হাসমত আলী বলেন, মেয়ের সুখের জন্য বিয়েতে প্রায় ৮০ হাজার টাকা যৌতুক দেই। এরপর থেকে আনারুল কথায় কথায় মেয়েকে নানাভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করতো। ভয়ে তিনি স্বামীর বাড়ি যাইতে চাইতো না। এখন আমাদের ধারনা মেয়েটাকে হত্যার পর আনারুল কোথাও তাকে পুতে রেখেছে।
ওই এলাকার ইউপি সদস্য সাজু মিয়া বলেন, সালিসে আনারুলকে থাকতে বলা হলেও তিনি উপস্থিত হননি। পরে তার সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোথায় গেছে আমি জানি না।
বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, বিষয়টি শোনার পর মেয়ের বাবাকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
মিঠাপুকুর থানার উপপরিদর্শক তদন্তকারী কর্মকর্তা আজাদ মিয়া বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তথ্যানুসন্ধান চালানো হচ্ছে। কিন্তু অভিযুক্ত আনারুলের ঘরে তালা মারা। বাড়িতেও কেউ নেই। এব্যাপারে ওসি স্যারের পরামর্শে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবেউ
মিঠাপুকুর থানার ওসি হামিদুজ্জামান জানান, পুরো ঘটনার রহস্য উন্মোচন করতে একজন এসআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।