জ্যোতির্বিদ্যাকে বলা হয় সবচেয়ে প্রাচীন সংখ্যাবিজ্ঞান। কারণ, প্রাচীনকাল থেকেই ক্যালেন্ডার গণনা আর জলে-স্থলে ভ্রমণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এই বিদ্যা। একুশ শতকে এসেও জ্যোতির্বিজ্ঞানের সেই বৈশিষ্ট্যে কোনো বদল ঘটেনি। বরং বেড়েছে ব্যাপক হারে। মহাবিশ্বকে সংখ্যাবিজ্ঞান দিয়েই এখন ব্যাখ্যা ও বর্ণনা করে জ্যোতির্বিজ্ঞান। মোদ্দা কথা, কিছু গাণিতিক সূত্রের ওপর নির্ভর করে মহাবিশ্ব পরিচালিত হচ্ছে। সে কারণেই বিজ্ঞানী আইনস্টাইন একবার বলেছিলেন, ‘মহাবিশ্ব সম্পর্কে সবচেয়ে দুর্বোধ্য ব্যাপারটা হচ্ছে একে বোঝা যায়।’ আর সেটা বোঝা যায় গাণিতিকভাবে।
শুধু মহাবিশ্বই নয়, এর ভেতরের ছায়াপথ, নক্ষত্র, গ্রহ-উপগ্রহ থেকে শুরু করে অতিক্ষুদ্র পরমাণু—সবই মেনে চলে গাণিতিক সূত্র। পরমাণুর ধর্ম, অর্থাৎ তাদের আকার, ভর ও প্রকারভেদ এবং তাদের পরস্পরকে সংযুক্তকারী বলগুলো আমাদের দৈনন্দিন রসায়ন নির্ধারণ করে। পরমাণুর অস্তিত্ব নির্ভর করে এসব বল ও তাদের ভেতরের কণার ওপর। এ তো গেল ক্ষুদ্র জগতের ব্যাপার। বৃহৎ পরিসরে, গ্রহ, নক্ষত্র আর ছায়াপথও পরিচালিত হয় মহাকর্ষ বলের মাধ্যমে। সেটাও চলে গাণিতিক সূত্র মেনে।
প্রকৃতির এসব গাণিতিক প্যাটার্ন ও আইনকানুন ধাপে ধাপে উন্মোচন করেই বিজ্ঞান আজ এতটা দূর এসে পৌঁছেছে। তাই বিজ্ঞানের সাধারণ কিছু সূত্র দিয়ে প্রকৃতির বিভিন্ন ঘটনা ব্যাখ্যা করা সম্ভব হচ্ছে। মহাবিশ্বের এমন হাজারো সংখ্যার ছড়াছড়ি থাকলেও গুটিকয়েক সংখ্যাকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন জ্যোতির্বিদ মার্টিন রিজ। মাত্র ছয়টি সংখ্যা দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে বলে দাবি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিজ্ঞানীর।
তাঁর লেখা জাস্ট সিক্স নাম্বার: দ্য ডিপ ফোর্সেস দ্যাট শেপ দ্য ইউনিভার্স বইতে তিনি দাবি করেছেন, তাৎপর্যপূর্ণ এসব সংখ্যার প্রতিটি সুষমভাবে সমন্বিত। মহাবিশ্বে এ সংখ্যাগুলো এমনভাবে সমন্বয় করা, যাতে সেগুলো অবশ্যই প্রাণের শর্ত পূরণ করে। তেমনটি না হলে আজকে এই মহাবিশ্বকে দেখা যেত মৃত। সেখানে মানুষ তো দূরে থাক, কোনো জীবেরই আবির্ভাব হতো না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।