জায়রার ‘ইমান’ বনাম ‘ধর্মবিরোধ’

ফাইল ছবি

বিনোদন ডেস্ক: ‘আল্লাহকে ফিরে পেতে’ ভারতের জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী অভিনেত্রী জায়রা ওয়াসিম বলিউড ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম ও টুইটারে একটি দীর্ঘ পোস্ট দিয়ে ১৮ বছর বয়সি অভিনেত্রী জায়রা ওয়াসিম জানিয়েছেন তিনি অবিলম্বে বলিউডকে বিদায় জানাতে চলেছেন। নিজের কাজ নিয়ে তার অস্বস্তির কথা প্রসঙ্গে তিনি টেনে আনেন তার ধর্মবিশ্বাস ও অভিনয়ের সাথে ধর্মের বিরোধের বিষয়টি।

সেই পোস্টে বারবার জায়রা ফিরে যান ‘ইমান’-এর সাথে তার কাজের দ্বন্দ্বের প্রশ্নে। জায়রার মতে, ‘‘কাজের ক্ষেত্রে বহুবার আমি এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি যেখানে আল্লাহর সাথে আমার সম্পর্ক ও সার্বিক ইমান প্রশ্নের মুখে পড়ে৷’’

আমির খানের সাথে ‘দঙ্গল’ ছবিতে অভিনয় করে সাড়া ফেলে দেওয়া এই অভিনেত্রী কাশ্মীরের মেয়ে। ২০০ কোটি রুপিরও বেশি অর্থের ব্যবসা করা ‘দঙ্গল’ ছবিতে তরুণ কুস্তিগীরের ভূমিকায় অভিনয় তাকে এনে দেয় শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জাতীয় পুরস্কার।

২০১৭ সালে ‘দা সিক্রেট সুপারস্টার’ ছবিতে এক গুজরাটি মুসলিম কিশোরীর ভূমিকায় অভিনয় করেন জায়রা। পর্দায় তুলে ধরেন রক্ষণশীল পিতার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গায়িকা হবার স্বপ্ন দেখা চরিত্রকে। জায়রার বলিউড ছাড়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর থেকেই অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, এই তথাকথিত ‘ধর্মবিরোধী’ ছবি চয়নের সময় কোথায় ছিল জায়রার ‘ইমান’?

জায়রা ওয়াসিমের পোস্ট নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে পক্ষে-বিপক্ষে ব্যাপক আলোচনা। অভিনেত্রী রবিনা ট্যান্ডনের মতো কেউ কেউ তার এই সিদ্ধান্তকে দেখছেন ‘বলিউডের প্রতি অকৃতজ্ঞতা’ হিসাবে। অন্যদিকে, কেউ কেউ এই পদক্ষেপকে দেখছেন এক তরুণীর ধার্মিক সততার নিদর্শন হিসাবে।

লেখিকা তসলিমা নাসরিন জায়রা‘র অভিনয় থেকে স্বেচ্ছায় বিদায় নেওয়া সম্পর্কে বলেন, ‘‘বৈষম্যে ভরা পিতৃতান্ত্রিক সমাজ, যেখানে ধর্ম নারীকে দেখে পরাধীন, অশিক্ষিত সেবা-প্রদানকারী হিসাবে, সেই সমাজ ব্যবস্থায় নারীর স্বেচ্ছায় কোনো কিছুই করার নেই৷’’

এর আগে ২০১৬ সালে যখন ‘দঙ্গল’ ছবির জন্য মাথার চুল ছেঁটে ফেলেন জায়রা, তখন প্রথমবারের মতো তিনি সোশাল মিডিয়ায় ‘ট্রলিং’-এর শিকার হন। এরপর জম্মু ও কাশ্মীরের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির সাথে দেখা করার ছবি তিনি শেয়ার করলে প্রাণনাশের একাধিক হুমকি পান। এরপর জায়রা অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন বলে জানা গেছে।