জিহ্বাকে অবমূল্যায়ন করার সুযোগ নেই। মানুষের জন্য কথাটা আরও বেশি প্রযোজ্য। স্বাদ গ্রহণের জন্য জিহ্বার বিকল্প নেই। খাবার গিলতেও দরকার। তা ছাড়া এ অঙ্গ ছাড়া কথা বলাও সম্ভব নয়। মানুষ ছাড়া প্রাণিজগতের অন্যান্য প্রাণী কথা না বললেও স্বাদ গ্রহণ ও খাবার গেলার কাজে জিহ্বা ব্যবহার করে। কিছু প্রাণী জিহ্বার সাহায্যে আরও অনেক কাজ করে! কোনো কোনো প্রাণীর জিহ্বা এত বিচিত্র যে প্রাণীটা কী, তা না দেখে শুধু জিহ্বার সাহায্যেই চেনা যায়।
এমপেরোর তামারিন
জিবের চেয়ে এদের গোঁফ বেশি নজরকাড়া। সাদা লম্বা গোঁফের মাঝখান থেকে জিব বেরিয়ে এলে তা অন্যরকম লাগে। তামারিনের জিব দেখে বোঝা যায়, ওরা স্বাভাবিক আছে নাকি মেজাজ খারাপ। অসন্তুষ্ট হলে এরা জিব বের করে নড়াচড়া করে। বারবার জিব বের করে চিৎকারও করে। এরা বানর প্রজাতির প্রাণী। তাই বানরের বৈশিষ্ট্যও রয়েছে এমপেরোর তামারিনের। এরা জিবের সাহায্যে গন্ধ ও স্থান শনাক্ত করতে পারে। এদের বৈজ্ঞানিক নাম Saguinus imperator।
টিয়া পাখি
মানুষের কথা অনুকরণ করতে পারে টিয়া। এই বৈশিষ্ট্যের কারণে বাংলাদেশেও টিয়ার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। কথা বলার জন্য টিয়ার জিব বিশেষভাবে অভিযোজিত। এদের জিব বেশ মোটা, শক্তিশালী ও প্রশস্ত। জীবের ডগায় একধরনের আঠালো পৃষ্ঠ থাকে। এটি খাদ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। এদের জিবের ওপরে কাঁটার মতো প্যাপিলি থাকে। এর সাহায্যে টিয়া ফলের রস বা ছোট পোকামাকড় ধরতে পারে সহজে। জিব ২-৩ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। সাধারণ টিয়ার বৈজ্ঞানিক নাম Psittacula krameri।
ঈগল
ঈগলের জিবও সিংহের মতো ধারালো। এ ধরনের জিব খাবার গিলতে সাহায্য করে। এদের জিব সাধারণত চ্যাপ্টা এবং টিউবের মতো। জিবে হাড়ের মতো যে অংশ থাকে, তাকে বলে ‘হাইয়েড অ্যাপারেটাস’। জিব নড়াচড়া করতে এটি সাহায্য করে। এদের জিব প্রায় ৩-৫ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। বিভিন্ন প্রজাতির ঈগলের মধ্যে সোনালি ঈগলের বৈজ্ঞানিক নাম Aquila chrysaetos।
ব্যাঙ
দ্রুত জিব বের করে শিকার ধরার জন্য ব্যাঙ বিখ্যাত। প্রায় চার হাজার প্রজাতির ব্যাঙ মানুষ চোখের পলক ফেলার আগেই জিব বের করে শিকার ধরে ফেলতে পারে। জিব বের করে আবার মুখে পুরতে সময় লাগে মাত্র ০.০৭ সেকেন্ড। এদের জিবও বেশ শক্তিশালী। নিজের দেহের চেয়ে প্রায় ১.৪ গুণ বেশি ভারী শিকার জিব দিয়ে টেনে নিতে পারে। ব্যাঙের দৈর্ঘ্য যদি ১০ সেন্টিমিটার হয়, তাহলে জিব হবে প্রায় ৫-৭ সেন্টিমিটার। আকারভেদে জিবও ছোট বড় হতে পারে। প্রজাতিভেদে এদের বৈজ্ঞানিক নামও ভিন্ন। সাধারণ ব্যাঙের বৈজ্ঞানিক নাম Rana temporaria।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।