সাহিত্য ডেস্ক : বই পড়ার সর্বপ্রথম উপকারিতা হচ্ছে মানসিক উত্তেজনা। এক গবেষণায় দেখা গেছে, অধ্যয়ন Dementia এবং Alzheimer’s নামের এই রোগ দুটিকে হ্রাস এমনকি প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে। মস্তিষ্ককে সচল রাখলে তা কখনোই তার ক্ষমতা হারাবে না। মস্তিষ্ককে শরীরের একটি সাধারণ পেশী হিসেবে বিবেচনা করে, নিয়মিত ব্যায়াম করলে তা শক্তিশালী এবং ফিট থাকবে।
আর জীবনে এমন কিছু বই আছে যা না পড়লে মানুষের জীবনবোধ সম্পূর্ণ হয় না, ব্যর্থ হয়ে যায় মানব জীবন। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসির সাম্প্রতিক গবেষণায় এমন তথ্যই উঠে এসেছে। আপনাদের নিশ্চয়েই এইগুলোর নাম জেনে নিয়ে পড়তে ইচ্ছে করছে। তাহলে আসুন জেনে নিই বইগুলোর প্রাথমিক পরিচিতি-
# ‘ডন কুইকসোট’
ডন কুইকসোট একজন মধ্যবয়সী স্প্যানিশ ভদ্রলোক, যিনি বীরদের অনেক রোম্যান্স গাঁথা পড়েন। সেই থেকে তিনি তলোয়ার তুলে একজন ভবঘুরে বীর হয়ে ওঠার সিদ্ধান্ত নেন। নিজের পুরানো ঘোড়া এবং বাস্তববাদী মানসিকতা নিয়ে বিশ্বব্যাপী অভিযাত্রার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন। ।
ডন কুইকসোটের ‘বীরত্বপূর্ণ’কাজের মধ্যে রয়েছে উইন্ডমিলের সাথে লড়াই করার চেষ্টা করা যেগুলোকে তিনি দৈত্য ভেবে ভুল করেছিলেন এমনকি তিনি এক পাল ভেড়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামেন।
মিগুয়েল ডি সার্ভেন্টেসের লেখা ৯৭৬ পৃষ্ঠা এই প্রভাবশালী সাহিত্যকে প্রথম আধুনিক উপন্যাস হিসাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
# ‘এ লিটল লাইফ’
লেখক হানিয়া ইয়ানাগিহারের লেখা ৭৩৬ পৃষ্ঠার এই বইটি ম্যান বুকার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল। উপন্যাসটি গড়ে উঠেছে চার বন্ধুর জীবনের গল্পকে ঘিরে। কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করে তারা অনেক বড় স্বপ্ন নিয়ে নিউ ইয়র্ক সিটিতে যায়।
জেবি হলেন শিল্পী, উইলিয়াম একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী অভিনেতা এবং ম্যালকম একজন স্থপতি। তবে জুড – নিজেকে ক্ষতি করতে চাওয়া একজন আইনজীবী; যার রয়েছে একটি রহস্যময় অতীত। এই উপন্যাসের গল্প গড়ে উঠেছে জুডের জীবনের টানাপোড়েন নিয়ে। গল্পটি যতোই এগিয়ে যায়. জুডের দুর্ভোগ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি ততোই প্রকাশ পেতে থাকে। এই উপন্যাসটি মারাত্মক কষ্টের এবং মন খারাপ করে দেয়ার মতো। যেখানে কয়েক দশকের ঘটনা বলা হয়েছে এবং বইটির শেষ পৃষ্ঠাগুলো পড়ার সময় আপনার চোখ বেয়ে জল নেমে আসবেই। অনেক পুরান হলেও এই বইতেও অবিশ্বাস্যরকম আধুনিকতা বোধ ফুটে ওঠেছে।
# ‘মিডলমার্চ’
জর্জ এলিয়টের এ বইটি একটি মাস্টারপিস। উপন্যাসে মিডলমার্চ নামের একটি কাল্পনিক শহরের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের জীবন নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ভদ্র সম্প্রদায়ের ভূমি মালিক থেকে শুরু করে খামার শ্রমিক বা কারখানার শ্রমিক পর্যন্ত সবার কথাই স্থান পেয়েছে এতে। তবে মূল ফোকাস ছিল দুটি চরিত্রকে ঘিরে, একজন হলেন জেদি এবং দৃঢ়-ইচ্ছাশক্তি সম্পন্ন ডোরোথিয়া ব্রুক এবং অন্যজন আদর্শবাদী টারটিয়াস লিডগেট। তারা দুজনেই বিপর্যস্ত বৈবাহিক জীবনের শিকার ছিলেন।
৮৮০ পৃষ্ঠার উপন্যাসটি ১৯শতকে লেখা হলেও এতে রয়েছে অবিশ্বাস্যরকম আধুনিকতা বোধ। কারণ বইটিতে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির সীমাবদ্ধতা এবং এই ত্রুটিপূর্ণ দুনিয়ায় একজন নৈতিক ব্যক্তি হয়ে ওঠার পথে নানা সংগ্রামের মতো বড় থিমগুলো ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
# ‘ব্লিক হাউস’
এটি জনপ্রিয় ব্রিটিশ উপন্যাসিক চার্লস ডিকেন্সের একটি দীর্ঘতম উপন্যাস। বইটি জার্নডাইস পরিবারের গল্পকে ঘিরে লেখা হয়েছে, যাদের আশা উত্তরাধিকারসূত্রে সম্পদ পাওয়া। কিন্তু সেই স্বপ্ন বার বার ব্যর্থতার মুখে পড়ে। কারণ জার্নডাইস অ্যান্ড জার্নডাইস মামলাটি দীর্ঘকাল ধরে আইনি মারপ্যাঁচের মধ্যে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। মামলাটি এতোটাই জটিল হয়ে পড়েছে যে এখন বেঁচে থাকা উত্তরাধিকারদের কেউ এই মামলার কিছু বুঝতে পারে না।
ডিকেন্স এই বইটিতে ‘কোর্ট অব চ্যান্সেরি’নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন, এই আদালতে একটি মামলা কয়েক দশক ধরে চলতে পারে। অসংখ্য চরিত্র আর একাধিক পার্শ্ব কাহিনী নিয়ে এগিয়ে গেছে এই উপন্যাসের কাহিনী।
# মোবি-ডিক দ্য হোয়েল
এই তালিকাটি শুরু মার্কিন লেখক হরম্যান মেলভিলের ৭২০ পৃষ্ঠার বই দিয়ে। এটি লেখক মেলভিলের এক অনবদ্য সৃষ্টি। মোবি-ডিকের গল্প তার কেন্দ্রীয় চরিত্র আহাবকে ঘিরে গড়ে উঠেছে। আহাব হলেন, হোয়েলিং শিপ ‘পিকোড’এর ক্যাপ্টেন। তিনি একটি বিশালাকার হোয়াইট স্পার্ম তিমির বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। কারণ এই তিমি তার হাঁটুর নীচ থেকে পায়ের অংশ নিয়ে গেছে। এজন্য তিনি পাগলের মতো সাগরে সেই তিমির অনুসন্ধান করে চলেন।
গল্পের বর্ণনাকারী হলেন ইসমায়েল নামে এক নাবিক। আর সাহিত্যে অন্যতম জনপ্রিয় প্রথম লাইনটি হল: ‘আমাকে ইসমায়েল বলে ডাকুন।’
বইটি অদ্ভুত, পাণ্ডিত্যপূর্ণ, মজার, গভীর অর্থবহ এবং আমেরিকার অন্যতম জনপ্রিয় উপন্যাস হিসাবে বিবেচিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।