বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : চীনের অত্যাধুনিক মাল্টিফাংশনাল মানববিহীন আকাশযান, ‘জেট্যাঙ্ক ০৪’, চলতি বছরের জুন মাসে প্রথম উড্ডয়ন মিশন পরিচালনা করতে চলেছে। এই ইউএভি (Unmanned Aerial Vehicle) সামরিক ও স্বাস্থ্য সেবা উভয় ক্ষেত্রেই বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম। চীনের প্রযুক্তি খাতে একটি নতুন মাইলফলক হিসাবে দেখা হচ্ছে এই ড্রোনকে, যা জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে।
Table of Contents
জেট্যাঙ্ক ০৪: বিশাল বৈশিষ্ট্যাবলী
জেট্যাঙ্ক ০৪-এর দৈর্ঘ্য ১৬.৩৫ মিটার এবং এর ডানার বিস্তার ২৫ মিটার। এর সর্বোচ্চ টেকঅফ ওজন ১৬ টন, এবং এটি ৬ টন ব্যালেন্স করে চলতে সক্ষম। পাওয়ার সিস্টেম হিসেবে টার্বোফ্যান ইঞ্জিন ব্যবহার করার কারণে এই ড্রোনটি অত্যন্ত উচ্চতায় উড়তে এবং বিস্তীর্ণ এলাকায় দ্রুত গতিতে চলতে সক্ষম। যদি অধিক গতির দিকে নজর দেয়া হয়, তাহলে এটি প্রতি ঘন্টায় ৭০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা সামরিক অভিযানের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।
এই ইউএভির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল এর অসাধারণ সহনশীলতা। এটি একনাগাড়ে ৭ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত আকাশে উড়তে পারে এবং ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে উড়তে সক্ষম হয়। এই উন্নত প্রযুক্তি মূলত একটি নতুন যুগের সূচনা করছে, যেখানে মানসিক চাপ ছাড়াই দীর্ঘ সময় উড়তে সক্ষম ইউএভি প্রয়োজনীয়তা নতুন মাত্রা পাবে।
বৈচিত্র্যময় পেলোড বহন ক্ষমতা
জেট্যাঙ্ক ০৪-এর একটি হাতে তৈরি বৈশিষ্ট্য, আটটি হার্ডপয়েন্টসহ এটি ১ হাজার কিলোগ্রাম পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকার অস্ত্র বহন করতে পারে। এটি গাইডেড বোমা, আকাশ থেকে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, এবং বিভিন্ন প্রকার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বহনের জন্য বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটির বহুমুখী মাউন্টিং ক্ষমতা আক্রমণাত্মক এবং প্রতিরক্ষামূলক উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্ব বহন করবে।
এটি সামরিক প্রয়োজনে তার কার্যকারিতা ও কৌশলগত সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে, চীনের প্রতিরক্ষা শক্তিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সহায়তা করবে। এই ইউএভির সফল উড্ডয়ন আগামী দিনে চীনের সামরিক সক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে প্রত্যাশিত।
বিশ্ববাজারে চীনের প্রযুক্তির প্রতিযোগিতা
জেট্যাঙ্ক ০৪-এর আগমন শুধুমাত্র চীন-র কাছে নয়, বরং বৈশ্বিক বাজারেও উচ্চ পর্যায়ের প্রতিযোগিতার সূচনা করবে। বিভিন্ন বিনিয়োগকারী এবং দেশের সামরিক বাহিনী এই ধরনের প্রযুক্তির প্রতি বিশেষ আগ্রহ প্রদর্শন করেছে। চীনের ইউএভি প্রযুক্তির আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক প্রশংসিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিরক্ষা সংস্থার কাছে এই ড্রোনের আবির্ভাব সুরক্ষা প্রযুক্তিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে চলেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এমন উন্নত প্রযুক্তির প্রভাব প্রতিটি ক্ষেত্রে পড়তে পারে, যা সামরিক ক্ষমতা এবং অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হবে।
সর্বশেষ প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা
২০২৪ সালের ১৫ তম চীন আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল ও মহাকাশ প্রদর্শনীতে প্রথমবার জেট্যাঙ্ক ০৪ জনসম্মুখে আসবে। সেখানেই এর প্রথম জনসাধারণের পরিদর্শন হবে। আরো কিছু সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে যে, জেট্যাঙ্ক ০৪-এর প্রযুক্তি আধুনিকীকরণ এবং উন্নুদ্রণ প্রক্রিয়াও অব্যাহত থাকবে, যাতে এর কার্যকারিতা আরও বৃদ্ধি পায়।
হুয়াওয়ে’র প্রথম পিসি উন্মোচন: প্রযুক্তির নতুন দিগন্তের সূচনা
FAQ
জেট্যাঙ্ক ০৪ কি?
জেট্যাঙ্ক ০৪ হলো চীনের একটি নতুন মাল্টিফাংশনাল ইউএভি যা সামরিক ও অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হবে।
জেট্যাঙ্ক ০৪-এর বৈশিষ্ট্য কি?
এর দৈর্ঘ্য ১৬.৩৫ মিটার, ডানা বিস্তার ২৫ মিটার, এবং এটি ১৫ হাজার মিটার উচ্চতায় উড়তে সক্ষম।
এই ইউএভি কতটুকু পেলোড বহন করতে পারে?
জেট্যাঙ্ক ০৪ ৬ টন পর্যন্ত পেলোড বহন করতে সক্ষম।
কী কারণে জেট্যাঙ্ক ০৪ গুরুত্বপূর্ণ?
এটি চীনের সামরিক সক্ষমতার উন্নতিকরণে অবদান রাখবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে।
জেট্যাঙ্ক ০৪ কবে প্রথম উড্ডয়ন হবে?
অতীতের তথ্য অনুযায়ী, এটি চলতি বছরের জুন মাসে প্রথম উড্ডয়ন মিশন পরিচালনা করবে।
এটি কতক্ষণ পর্যন্ত উড়তে সক্ষম?
জেট্যাঙ্ক ০৪ ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে উড়তে সক্ষম।
বিগত বছরগুলোতে চীনের সামরিক প্রযুক্তির উত্থান লক্ষ্য করা হয়েছে, এবং জেট্যাঙ্ক ০৪ সেই প্রবণতাকে আরও উজ্জ্বলভাবে উপস্থাপন করবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।