জুমবাংলা ডেস্ক : প্রতিটি মানুষের জীবনে বিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। জন্ম ও মৃত্যুর পরই মানুষের জীবনে বিয়ে অনেক বড় একটি ঘটনা। নাগরিক আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে সব সম্প্রদায়ের বিয়ের নিবন্ধন প্রয়োজন। মুসলিম নারী ও পুরুষের বিয়ের নিবন্ধন আবশ্যক। কাজি বা রেজিস্ট্রারকে দিয়ে নিবন্ধন করতে হয়।
বিয়ের পর নানান জটিলতা দেখা দেয়, ভেঙ্গে যেতে পারে বন্ধন। তখন প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায় গল্পের সূচিপত্র। কাবিন ও রেজিস্ট্রি এ জন্যই বিয়ের খুব গুরুত্বপূর্ণ নথি। সামাজিক ও আইনি স্বীকৃতির দলিলও তা। বিয়েসংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে কাবিননামা বা নিকাহনামার প্রয়োজন হয়। বিয়ে বিষয়ক প্রতারণায় সবচেয়ে বেশি শিকার হন নারীরা। রেজিস্ট্রেশন না থাকলে এই সময় ক্ষতিগ্রস্ত হন তারাই। অনেকেই বিয়ের সময় কাবিন ও রেজিস্ট্রির কথা ভুলে যান। অভিভাবকদের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেন। প্রেম-ভালোবাসার অন্ধ মোহে পড়ে এবং পয়সা খরচের ভয়ে দলিল ছাড়াই বিয়ে করেন। দালালের প্ররোচনায় পড়ে কোর্ট ম্যারেজ করেন, যেখানে বিয়ের প্রয়োজনীয় কাগজ ও দলিলপত্র থাকে না। পরবর্তী সময়ে দাম্পত্যজীবনে কোনো সমস্যা হলে দুজনের কেউই আর আইনি প্রতিকার পান না।
বিয়ের রেজিস্ট্রি কেন জরুরি
ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী মাহবুবুল হক মামুন জানালেন, ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনের বিধান অনুযায়ী প্রতিটি মুসলিম বিয়ে রেজিস্ট্রি করা বাধ্যতামূলক। বিয়ে রেজিস্ট্রি না করা হলে স্বামীর সম্পত্তির উত্তরাধিকার, মৃতের সন্তানদের উত্তরাধিকার, খোরপোশ ও মোহরানার অধিকার থেকে ওই নারীকে বঞ্চিত হতে হয়। বিয়ের রেজিস্ট্রি একটি আইনি দলিল, যা বিয়ে বৈধ না অবৈধ সে বিষয়ে প্রমাণ হাজির করে। বিয়ে রেজিস্ট্রি করা থাকলে স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলে বা প্রথম স্ত্রীর বিনা অনুমতিতে বিয়ে করার উদ্যোগ নিলে স্ত্রী আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন। বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে একজন নারী তার দাম্পত্যজীবনের অনেক জটিলতা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন।
আইনে কী আছে
১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রেশন) আইনে (সংশোধিত ৮ মার্চ, ২০০৫) বলা হয়েছে, যদি কেউ বিবাহ রেজিস্ট্রি না করেন, তাহলে তিনি এ আইনের অধীনে অপরাধ করেছেন বলে বিবেচিত হবেন এবং এ অপরাধের জন্য আইন কর্তৃক নির্ধারিত শাস্তি হচ্ছে দুই বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা আর্থিক জরিমানা, যা তিন হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে, অথবা উভয় ধরনের শাস্তিই হতে পারে।
বিয়ে রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে সরকারের নির্ধারিত ফরমে লিখিত বর ও কনের বিয়েসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি সম্পর্কে আইনগত দলিল, যা কাজি অফিসে সংরক্ষিত থাকে।
মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে দেনমোহরের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের ফি নির্ধারণ হয়ে থাকে। রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দেওয়ার পর নিকাহ রেজিস্ট্রার একটি প্রাপ্তি রশিদ দেবেন। মুসলিম বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের পর নিকাহ রেজিস্ট্রার বাধ্যতামূলকভাবে বর ও কনে পক্ষকে বিয়ের কাবিননামার সত্যায়িত কপি দেবেন। সরকার কাজিদের বিয়ে রেজিস্ট্রি করার জন্য অনুমতি বা লাইসেন্স দিয়ে থাকে। আইন অনুযায়ী বিয়ের আসরেই বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে হয়।
বিয়ের আসরে সম্ভব না হলে বিয়ে অনুষ্ঠানের দিন থেকে ৩০ দিনের মধ্যে কাজি অফিসে গিয়ে বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে হয়।
কাজিকে বাড়িতে ডেকে এনে অথবা কাজি অফিসে গিয়ে বিয়ে রেজিস্ট্রি করা যায়। এ ছাড়া কাবিননামার সব কলাম পূরণ করার পর বর-কনে, উকিল, সাক্ষী ও অন্যান্য ব্যক্তিকে স্বাক্ষর দিতে হয়। কাজি, বর-কনে, দুই পক্ষের অভিভাবকদের অংশগ্রহণে বিয়ের কাবিন ও রেজিস্ট্রি করতে হয়। এ জন্যই বিয়ের কাবিন ও রেজিস্ট্রি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে কাজ করে।
‘কাঁচা বাদাম’ ছেড়ে এ কী করছেন কাঁচা বাদাম গানের শিল্পী ভূবন বাদ্যকর
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।