জুমবাংলা ডেস্ক: মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের অনন্য ইবাদত কোরবানি। আর সামর্থবানদের জন্য কোরবানি করা ওয়াজিব। তবে কোরবানির পর এ গোশত যতদিন খাওয়া যাবে; এ সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনা তুলে ধরা হলো-
কোরবানির ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর বান্দারা তার আরো বেশি প্রিয় হয়। যে ইবাদতের ব্যাপারে নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন, ‘সামর্থ থাকার পরও যে বা যারা কোরবানি থেকে বিরত থাকবে সে যেন ঈদগাহে না আসে’।
এ কারণেই সামর্থবান প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলমান নারী-পুরুষ জিলহজ মাসের ১০-১২ তারিখ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কোরবানি করে থাকে।
কোরবানি যেহেতু আত্মত্যাগের অন্যতম ইবাদত, সেহেতু কোরবানির গোশত সম্পর্কেও রয়েছে ইসলামের সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা। এ সম্পর্কে অনেকেরই রয়েছে অস্পষ্ট ধারণা বা জ্ঞান। যেমন-
(১) কেউ কেউ বলে থাকেন- ‘কোরবানির গোশত জমিয়ে রাখা যাবে না’।
(২) আবার অনেকে বলেন- ‘কোরবানি করে গোশত সাদকা করে দিতে হয়’।
(৩) কারো কারো ধারণা- ‘৩দিনের বেশি কোরবানির গোশত জমিয়ে রাখা যাবে না’।
না, কোনোটিই সঠিক নয়। বরং কোরবানির পশুর গোশত সম্পর্কে সব ধারণাগুলো ভুল। কোরবানির গোশত নিজেরা খেতে পারবে, অন্যকে হাদিয়া দেওয়া যাবে এবং সংরক্ষণ করা যাবে। এ ব্যাপারে হাদিসে পাকের একাধিক বর্ণনায় এভাবে দিক-নির্দেশনা এসেছে-
১. হজরত সালামা ইবনে আকওয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের যে লোক কোরবানি করেছে, সে যেন তৃতীয় দিনে এমন অবস্থায় সকাল অতিবাহিত না করে যে, তার ঘরে কোরবানির গোশতের কিছু থেকে যায়। পরবর্তী বছর সাহাবিগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি তেমন করব, যেমন গত বছর করেছিলাম? তখন তিনি (রাসূলুল্লাহ) বললেন- ‘তোমরা নিজেরা খাও, অন্যকে খাওয়াও এবং সঞ্চয় করে রাখ। কারণ গত বছর মানুষের মধ্যে ছিল অনটন। তাই আমি চেয়েছিলাম, তোমরা তাতে সহযোগিতা কর’। (বুখারি, মুসলিম)
উল্লেখিত হাদিসে অন্যকে আহার করাও বলতে সমাজের গরিব অসহায়দের দান এবং ধনিদের উপহার দেওয়া কথাই বুঝানো হয়েছে। কিন্তু কি পরিমাণ গোশত অন্যকে দান-সাদকা বা হাদিয়া দেবে সে সম্পর্কে কোরআন এবং সুন্নাহতে কোনো সুস্পষ্ট বিধান দেওয়া নেই।
তবে ওলামায়ে কেরাম কোরবানির পশুর গোশত বিতরণের একটি মতামত পেশ করেছেন। আর তাহলো-
কোরবানির পশুর গোশত তিন ভাগ করে নিজেদের জন্য এক ভাগ রাখা; গরিব-অসহায়দের মাঝে এক ভাগ দান করা এবং আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে এক ভাগ বণ্টন করা মোস্তাহাব’।
সুতরাং ওলামায়ে কেরামের এ নির্দেশনা অনুযায়ী কোরবানির গোশত বণ্টন করা উত্তম। অতঃপর হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী দুর্ভিক্ষ কিংবা সমাজে অভাব-অনটন না থাকলে যতদিন ইচ্ছা ততদিন কোরবানির গোশত সংরক্ষণ করে খাওয়া যাবে। অন্য হাদিসে এসেছে-
২. হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ থেকে বর্নিত তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে আমরা মদিনায় ফিরে আসা পর্যন্ত কোরবানির গোশত সঞ্চয় করে রাখতাম’। (বুখারি)
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সব মুসলিম উম্মাহকে কোরবানির গোশত বণ্টন সম্পর্কে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে থাকা থেকে মুক্ত রাখুন। যারা কোরবানির গোশত গরিব-মিসকিনকে দিতে বিরত রয়েছেন; তারা সঞ্চয় করা গোশত থেকে গরিব-দুঃখী ও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে গোশত বণ্টন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।