সম্প্রতি জেমস ওয়েব নভোদুরবিন হোয়ার্লপুল বা এম৫১ গ্যালাক্সির ছবি তুলেছে। এর আগে, ২০১১ সালে হাবল টেলিস্কোপ ব্যবহার করে এই গ্যালাক্সির ছবি তোলেন বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব উৎক্ষেপণের পর সবাই নতুন ও ক্ষমতাশালী এ নভোদুরবিনের চোখে গ্যালাক্সিটিকে দেখার অপেক্ষায় ছিলেন। বেশকিছু দিন বিরতির পর নতুন ছবি প্রকাশ করেছে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। এ নভোদুরবিনের তোলা দারুণ এক ছবি প্রকাশিত হয়েছে ২৯ আগস্ট, মঙ্গলবার। ছবিটি এম১ নামে সর্পিলাকার এক গ্যালাক্সির। পৃথিবী থেকে এর অবস্থান প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ আলোকবর্ষ দূরে।
গ্যালাক্সিটির পুরো নাম মেসিয়ার ৫১। ডাকনাম হোয়ার্লপুল গ্যালাক্সি। বৈজ্ঞানিকভাবে গ্যালাক্সিগুলোর একটা পরিচিতিমূলক নাম থাকে। সে হিসাবে এটা এনজিসি ৫১৯৪ নামেও পরিচিত। তবে ডাকনামটিতে গ্যালাক্সির আকার বেশ ভালোভাবেই ফুটেছে। পানিতে ভেজা ক্রিকেট বল শূন্যে ঘোরালে চারপাশে পানির যে ঘূর্ণি তৈরি হয়, এ গ্যালাক্সিও দেখতে অনেকটা সেরকম।
জেমস ওয়েবের মিড-ইনফ্রারেড ইন্সট্রুমেন্ট ও নিয়ার-ইনফ্রারেড ক্যামেরা ব্যবহার করে তোলা হয়েছে গ্যালাক্সির এই চমৎকার ছবি। দুটি যন্ত্রই দূরবর্তী নক্ষত্র ও গ্যালাক্সি থেকে আসা অবলোহিত বা অবলাল আলো শনাক্ত করতে পারে। মিড ইনফ্রারেড ইনস্ট্রুমেন্ট শনাক্ত করে ৫ থেকে ২৮ মাইক্রন দৈর্ঘ্যের অবলাল আলো। আর নিয়ার ইনফ্রারেড ক্যামেরায় ধরা পড়ে দশমিক ৬ থেকে ৫ মাইক্রন দৈর্ঘ্যের আলো। ভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যে তোলা দুটি ছবিকে একত্রিত করে তৈরি করা হয়েছে এই পূর্ণাঙ্গ ছবি।
ইনফ্রারেড আলোয় তোলা ছবিতে সাধারণত রং থাকে না। সাদাকালো হয়। বিজ্ঞানীরা নানা বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে নানা রঙে রঙিন করে তোলেন এসব ছবিকে। এ ছবিটিও সেরকম। কফি রঙের প্রলেপের মধ্যে নীলচে-সাদা ঘূর্ণি এম৫১ গ্যালাক্সির এই ছবিকে করে তুলেছে অভিজাত ও মার্জিত। তবে ছবিটি দেখলে আপনার মনে হবে অন্য একটা বাক্য—চোখ ধাঁধানো সুন্দর।
ছবিতে লাল অংশগুলো দিয়ে গ্যালাক্সির মধ্যকার ধূলিকণা বোঝানো হয়েছে। নব গঠিত নক্ষত্রের চারপাশের গ্যাসীয় অঞ্চলকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে কমলা ও হলুদ রঙে। এই অংশটুকু পরিষ্কার হয়েছে নিয়ার-ইনফ্রারেড ক্যামেরার ছবিতে। আর মিড-ইনফ্রারেড ইনস্ট্রুমেন্টের ছবিতে স্পষ্ট হয়ে ধরা দিয়েছে গ্যালাক্সিটির ঘূর্ণি। সর্পিলাকার বাহুগুলোর আঁকবাঁক চমৎকার ফুটেছে এ ছবিতে। দুটোকে একসঙ্গে মিলিয়েই তৈরি করা হয়েছে মূল ছবিটি।
২০১১ সালে হাবল টেলিস্কোপ ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা এম৫১ গ্যালাক্সির ছবি তুলেছিলেন দৃশ্যমান আলোয়। কিন্তু নতুন এ ছবিতে আরও সূক্ষ্ম ও পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে গ্যালাক্সিটির অনেক খুঁটিনাটি। সেই সঙ্গে পাওয়া গেছে প্রচুর নতুন তথ্য। এগুলো বিশ্লেষণ করে এম৫১ বা হোয়ার্লপুল গ্যালাক্সির গঠন নিয়ে আরও অনেক কিছু জানা যাবে, এমনটাই আশা বিজ্ঞানীদের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।