বিনোদন ডেস্ক : বাংলাদেশি তারা মাঈনুল আহসান নোবেল। জনপ্রিয়তার স্রোতে শুধু বঙ্গোপসাগরই নয়, ছড়িয়ে পড়তে চান পৃথিবীর আনাচকানাচে। সংগীতাকাশের নতুন এই সেনসেশনের মুখোমুখি হয়েছেন দাউদ হোসাইন রনি।
‘সারেগামাপা’য় যৌথভাবে তৃতীয় হলেন—আন-অফিশিয়াল এই ফলাফলের সত্যতাই মিলল অবশেষে। ফাইনাল পর্ব তো প্রচারিত হয়ে গেল, এবার নিশ্চয়ই মন খুলে কথা বলতে বাধা নেই? ফাইনালের ফলাফল নিয়ে কী বলবেন?
আমার অফিশিয়াল ফেসবুকে এ নিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, সেটা অলরেডি ভাইরাল। সেখান থেকেই বলছি, ‘সারেগামাপা আমার জন্য একটা দীর্ঘ জার্নি। এই জার্নিতে আমি অনেক কিছু শিখেছি, জেনেছি এবং সবার ভালোবাসা পেয়েছি। আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। শুধু বলব, আমরা বাংলাদেশের সবাই একেকটা নোবেল। আমরা দেখিয়ে দিয়েছি, তাই আমরা সবাই চ্যাম্পিয়ন। সবার ভালোবাসা ও দোয়া নিয়ে সামনে পথ চলতে চাই।
এর বাইরে সারেগামাপা নিয়ে কিছুই বলতে চাই না।
‘সারেগামাপা’ দিয়েই আপনার পরিচিতি, আলোচনায় এই রিয়ালিটি শো প্রসঙ্গ তো আসবেই…
হ্যাঁ, তা আসুক। কিন্তু ফাইনালের রেজাল্ট নিয়ে কোনো প্রশ্ন করবেন না, প্লিজ।
জেমসের গান দিয়ে ‘সারেগামাপা’য় আপনার প্রবেশ। ফাইনালের আগ পর্যন্ত জেমসের বেশ কয়েকটি গান করেছেন। যাঁর গান কাভার করে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশে সাড়া ফেলে দিয়েছেন, সেই জেমসের সঙ্গে কি কখনো কথা হয়েছে? বা আপনাকে কোনো টিপস দিয়েছেন তিনি?
না, উনার সঙ্গে আমার পার্সোনাল কোনো যোগাযোগ নেই। ব্যক্তিগতভাবে উনাকে আমি খুবই শ্রদ্ধা করি। উনার অনেক গানই গেয়েছি, আমার ওয়ান অব দ্য মোস্ট ফেভারিট সং ‘পাগলা হাওয়া’। এই গানটা গেয়েছিলাম ‘সারেগামাপা’য়। যে এপিসোডে ‘রূপালি গিটার’ প্রচারিত হয়েছিল, ওই এপিসোডেই গেয়েছিলাম ‘পাগলা হাওয়া’। কিন্তু গানটি টেলিকাস্ট হয়নি। কেন হয়নি, সেটা আজ আপনার মাধ্যমে জানাতে চাই।
প্লিজ…
জেমস ভাই তাঁর ম্যানেজারকে দিয়ে ফোন করান এবং বলেন, ‘পাগলা হাওয়া’ গানটা যেন টেলিকাস্ট না হয়। আমাকে জেলে পাঠানোর হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়, এমন নানা রকমের আন-এক্সপেক্টেড কার্যকলাপ হয়েছে আর কি! একজন আইডলের কাছ থেকে এ ধরনের হুমকি-ধমকি সত্যিই অপ্রত্যাশিত। আমি উনার ছেলের বয়সী। এর পরও জেমস ভাইয়ের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা কখনোই কমবে না। বিষয়টা সংবাদমাধ্যমে জানাতে ইচ্ছা হলো, তাই জানালাম আপনাকে। কেননা গানটার অডিও ইউটিউবে দেওয়ার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, গানটি কেন প্রচারিত হয়নি?
এলআরবির গান ‘সেই তুমি’ দিয়ে জি বাংলা আপনার প্রথম প্রমো বানিয়েছিল। যিশু সেনগুপ্তর অনুরোধে প্রথম পর্বেই গেয়েছিলেন গানটি। মৃত্যুর আগে আইয়ুব বাচ্চু আপনার গায়কির প্রশংসা করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে কি কোনো কথা হয়েছিল আপনার?
না, কখনোই কথা হয়নি আমাদের। আমি আইয়ুব বাচ্চুর কত বড় ফ্যান, একটা ঘটনা বললেই বুঝবেন। শুধু একবার দেখা করার জন্য উনার বাসার সামনে আট ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম, কিন্তু দেখা পাইনি। জেমসের চেয়েও বাচ্চু স্যারের বড় ফ্যান আমি। সেই তিনি আমার প্রশংসা করেছেন, এটা শুনে মনটা আনন্দে ভরে গেছে। উনি যখন মারা যান তখন আমি কলকাতায়। ওখানে জানতে পারিনি। সংবাদটা পেয়েছি দেশে আসার পর। এক মাস পর্যন্ত বিশ্বাসই করতে পারিনি বাচ্চু স্যার আর নেই!
আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুর পর ‘সারেগামাপা’র পরের পর্বেই গেয়েছিলেন ‘হাসতে দেখো গাইতে দেখো’। গানটির শুট কি আগেই হয়েছিল?
হ্যাঁ, শুটটা আগেই হয়ে গিয়েছিল। জি বাংলা কনটেন্টের খাতিরে তখন সম্প্রচার করেছে গানটা।
পরে তো আপনি, অনুপম রয়, ইমন চক্রবর্তী, রূপঙ্কর বাগচীসহ ‘সারেগামাপা’র সবাই মিলে একটা ট্রিবিউট দিয়েছিলেন।
হ্যাঁ। এটা হয়েছে দু-তিন এপিসোড পরে। ‘রূপালি গিটার’ নামে ট্রিবিউট হয়েছিল।
‘সারেগামাপা’র প্রথম দিকে প্রমিত বাংলায় বলার চেষ্টা করেছিলেন। পরে দেখা গেল নির্দ্বিধায় বলে যাচ্ছেন—‘যাইতেছিলাম’, ‘খাইতেছি’, ‘ঠিক আছে’, ‘বুঝছেন বিষয়টা’। বিষয়টা কী ছিল বলুন তো!
প্রথম দিকে আসলে ওরা নিজেদের মতো করে উপস্থাপন করতে চেয়েছিল। পরে আমি আর সেই গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকতে চাইনি বা পারিনি। বলতে পারেন, আই ওয়ান্টেড টু বি মাইসেলফ।
আন-অফিশিয়াল রেজাল্ট প্রকাশিত হয়ে পড়ার পর বাংলাদেশে এসেছিলেন অনুপম রয়। তখন আপনার ব্যাপারে মন্তব্য করেছিলেন, ‘নোবেলের এই রেজাল্টে কিচ্ছু যাবে-আসবে না, ও যা করার এমনিতেই করবে…’
অনুপম রয় আমার ভাইয়ের মতো। উনার সঙ্গে আমার নিয়মিত কথা হয়। উনার এই কথা যাঁরা বোঝার ঠিকই বুঝে নিয়েছেন। উনিও যা বোঝার বুঝে নিয়েছেন, আমাকেও যা বলার তা বলেছেন। সেটা এখানে বলতে পারব না।
সৃজিত্ মুখার্জির ‘ভিঞ্চি দা’তে অনুপমের সুরে গেয়েছেন। সামনে নিশ্চয়ই আরো গাইবেন?
আমাকে দিয়ে গাওয়ানোর মতো হলে অবশ্যই তিনি আমাকে ডাকবেন।
শুরু থেকেই মোনালি ঠাকুর আপনাকে নিয়ে ভীষণ উচ্ছ্বসিত ছিলেন। চকোলেট উপহার দেওয়া থেকে শুরু করে আবেগী অনেক মন্তব্যই তিনি করেছেন। পরের দিকে উনি অনেকটাই চুপ হয়ে গেলেন। হঠাত্ কী এমন হলো?
না ভাই, এ বিষয়ে কিছু বলা উচিত হবে না।
‘সারেগামাপা’র শুটিংয়ে অংশ নেওয়া এক দর্শক ফেসবুকে লিখেছিলেন, তাহসানের ‘প্রেমাতাল’ গানে উনি আপনাকে খুবই কম নম্বর দিয়েছিলেন। এটা আপনি মানতে পারেননি। রাগারাগির এক পর্যায়ে মোনালি চেয়ার ছেড়ে উঠে গিয়েছিলেন। এ নিয়ে দুই ঘণ্টা নাকি শুটিং আটকে ছিল…
দেখুন, উনি আমার জাজ ছিলেন। উনার প্রতি আমার সম্মান অক্ষুণ্ন আছে এবং থাকবে। উনি যা করেছেন, উনার বিচারবোধ থেকেই করেছেন। কী ঘটেছিল সেদিন, সেটা এখন বলতে পারব না। হয়তো ১০ বছর পর বলতে পারি। সূত্র- কালেরকণ্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।