কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মইনুল ইসলাম আবিরকে ফেসবুকে হিন্দু ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে দীর্ঘ ৫০ দিন কারাবরণ করতে হয়েছে। অভিযোগ নিয়ে চলতে থাকে নানা বিতর্ক। পুলিশের ফাইনাল রিপোর্টে অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় জামিনে মুক্তি পায় আবির। দুর্বিষহ কারাবাসের অভিজ্ঞতা এবং সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট করেন তিনি। নিজের আইডি বাতিল হওয়ায়, বন্ধু হাবিব উল্লাহর ফেসবুক একাউন্ট থেকে পোষ্টটি করেন, যা সবার মনেই ভিন্ন ধরণের এক আবেদন জাগায়। স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘আমি মইনুল বলছি,
প্রথমে মহান আল্লাহ এর নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
বিনা অপারাধে ৫০ দিন কারাভোগের পর অবশেষে গতকাল মুক্তি পেলাম। দীর্ঘ এই ৫০ দিন জেল জীবন আমার জন্য খুবই কষ্টকর এবং হতাশাজনক ছিল।শারিরীক মৃত্যুর চেয়ে মানসিক মৃত্যু যে অনেক বেশি যন্ত্রনাদায়ক তা আমি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলাম।একটা সময় মনে হয়েছিল আমার সব কিছু হয়তো একটি প্রতিহিংসামূলক ষড়যন্ত্রের কাছে বিনাশ হয়ে যাচ্ছে।অবশেষে আমার নিজের জন্য স্বস্তির খবর হচ্ছে, সবার অান্তরিক প্রচেষ্টায় আমি কারাগার থেকে মুক্ত হতে পারলাম।
আমি জানি, কুবি পরিবারের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি সদস্য নিজ নিজ জায়গা থেকে আমার মুক্তির জন্য নিজেদের সর্বোচ্চ উজাড় করে চেষ্টা করেছেন।আমার সামান্য কৃতজ্ঞতা দিয়ে হয়তো আপনাদের এই ঋণ কখনো শোধ করা যাবে না।
তবুও আমি আমার কুবি পরিবারের মাননীয় ভিসি মহোদয়,প্রক্টর মহোদয় ,আমার আইন বিভাগের চেয়ারম্যান সহ সকল শ্রদ্ধেয় শিক্ষকবৃন্দ,কুবি শাখা ছাত্রলীগ, আমার আইন বিভাগের সকল শিক্ষার্থী ভাই-বোন ও কুবি পরিবারের সকল শিক্ষার্থী বৃন্দ এর নিকট চির কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাব কে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থাকার জন্য।
পরিশেষে আমি বলতে চাই, আমি বঙ্গবন্ধুর অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশে বিশ্বাসী এবং সকল ধর্মের প্রতি সমান শ্রদ্ধাশীল। ভবিষ্যতে যাতে আমার মত কাউকে এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার শিকার হতে না হয়, প্রশাসনের সুনজর কামনা করছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যাতে এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারি।
ধন্যবাদ।’
প্রসঙ্গত, গত ১৯ ই মে মইনুল ইসলাম আবির নামে এক ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে হিন্দু ধর্ম অবমাননাকর এক মন্তব্য করা হয়। এই প্রেক্ষিতে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার এস আই (নিঃ) খালেকুজ্জামান বাদী হয়ে ২০ মে শিক্ষার্থী ময়নুল হোসেন আবিরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের ২৮ ও ৩১ নং ধারায় মামলা দায়ের করেন, এবং ঐ দিনই গ্রেফতার হন আবির।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।