জুমবাংলা ডেস্ক : প্রায় ১০ বছর আগে একবার এই সময়ে ইলিশের আমদানি হয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে বড় সাইজের ইলিশ এই সময়ে আহরন হয় না। ধারণা করা হচ্ছে, সাগরের মধ্যে অনেক সময় ভূকম্পন হয়। যে কারণে ইলিশ উজানের দিকে উঠে আসে – এমনটাই বলেছেন মৎস্যজীবীরা।
এই অসময়ে ইলিশের আমদানিতে চাঁদপুরের প্রধান মৎস্য আড়ত বড় স্টেশন মাছঘাট এখন সরব। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ মণ বড় সাইজের ইলিশ আমদানি হচ্ছে। পদ্মা-মেঘনা নদীতে জেলেদের আহরিত ছোট সাইজের ইলিশ নিয়মিত ঘাটে বিক্রি হচ্ছে।
গত দুই সপ্তাহে দক্ষিণাঞ্চলের বড় সাইজের ইলিশের আমদানি হওয়ার কারণে সরগরম হয়ে উঠেছে মাছঘাট। চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে পাইকার, আড়তদার, খুচরা বিক্রেতা ও শ্রমিকদের মধ্যে। গত ১০-১২ বছরের মধ্যেও মৌসুমের এই সময়ে বড় সাইজের ইলিশ আমদানি দেখেননি বলে জানিয়েছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) শহরের বড় স্টেশন মাছঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে বড় দুটি ট্রলারে করে দক্ষিণাঞ্চলের ভোলা, দৌলতখাঁ, চরফ্যাশন, শ্যামরাজ থেকে বড় সাইজের ইলিশ নিয়ে এসেছেন ১০-১২ জন ব্যবসায়ী। এসব ইলিশ টুকরিতে করে আড়তে ওঠাচ্ছেন শ্রমিকরা। বিক্রির জন্য আড়তগুলোর সামনে বড় বড় স্তূপ করে সাজানো হচ্ছে। বাছাই করা বড়-ছোট ইলিশের স্তূপ আবার মুহূর্তেই হাঁকডাক দিয়ে দাম হাঁকিয়ে বিক্রি করছেন আড়তদাররা।
ঘাটের ভাই ভাই মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ী আবদুল আজিজ বেপারী বলেন, গত দুই সপ্তাহে যেসব ইলিশ আমদানি হচ্ছে এসব ইলিশের অধিকাংশের সাইজ ১ কেজি। আজকের বাজারে ১ কেজি ইলিশ প্রতি মণ ৩০-৩২ হাজার টাকা, ১ কেজি ৪০০ গ্রাম এবং দেড় কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিমণ ৩৬-৪০ হাজার টাকা, ৫০০-৬০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি মণ ২৪-২৫ হাজার টাকা, ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ১০-১২ হাজার টাকা। ছোট সাইজের ইলিশগুলো বেশির ভাগ চাঁদপুরের স্থানীয় জেলেরা পদ্মা-মেঘনা নদী থেকে আহরণ করেন। এর মধ্যে জাটকা ইলিশ থাকে।
মাছঘাটের শ্রমিক মো. আমিনুর শেখ বলেন, দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা ইলিশের ট্রলার রাত ১১টা থেকে সকাল পর্যন্ত আসতে থাকে। রাতে আসা ইলিশ আড়তে নামালেও বিক্রি শুরু হয় সকাল ১০-১১টার পরে। গত ৩ মাস অবসর সময় কাটালেও এখন শ্রমিকরা মাছ ওঠানো, প্যাকিং করা, বরফ দেয়া এবং রফতানি করা গাড়িতে ওঠানোর কাজে ব্যস্ত।
ভোলা জেলার চরফ্যাশন খাজুরগাইছ্যা এলাকার মাছ ব্যবসায়ী মো. আব্বাস বলেন, তাদের নিজস্ব মাছের আড়ত থেকে বেশি মূল্যে বিক্রির জন্য লঞ্চযোগে ১০ মণ ইলিশ নিয়ে এসেছেন। তার সাথে এসেছেন আরো ১০-১২ জন ব্যবসায়ী। এই আড়তে বিক্রি করে আবার নিজ এলাকায় ফিরবেন।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক হাজী সবে বরাত বলেন, গত দুই সপ্তাহ দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশের আমদানি বেড়েছে। তবে অসময়ের এই ইলিশ মৌসুমে আহরণকৃত ইলিশের মতো স্বাদ নেই। সাধারণত এই সময় বড় সাইজের ইলিশ দেখা যায় না। গত প্রায় ১০ বছর আগে একবার এই সময়ে ইলিশের আমদানি হয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে বড় সাইজের ইলিশ এই সময়ে আমদানি হয় না। ধারণা করা হচ্ছে, সাগরের মধ্যে অনেক সময় ভূকম্পন হয়। যে কারণে ইলিশ উজানের দিকে উঠে আসে।
তিনি আরো বলেন, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর বড় সাইজের ইলিশের আমদানি কম। এই ঘাটের ৬-৭ জন ব্যবসায়ী দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ আমদানি করেন। এসব ইলিশ চাঁদপুরের স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয়। এছাড়া কুমিল্লা, ঢাকা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, বগুড়া, দিনাজপুর, পাবনা, ময়মনসিংহ ও সিলেটে রফতানি করা হয়।
তথ্যসূত্র : দৈনিক জাগরণ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।