জুমবাংলা ডেস্ক: পুলিশের গুলিতে নিহত অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের সহকর্মী সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা দেবনাথ বলেছেন, সেদিন (সিনহা হত্যাকাণ্ডের দিন) কী ঘটেছিল, কীভাবে ঘটেছিল সবই বলব। আমাদেরকে একটু সময় দিন।
সোমবার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল যমুনা টিভিকে একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তারা। পুলিশের দায়ের করা মামলায় জামিন পাওয়ার পর দু’জনই এখন কক্সবাজারে অবস্থান করছেন।
সিফাত বলেন, আমাদের নিয়ে দেশবাসীয় বেশ কয়েক দিন উদ্বিঘ্ন ছিলেন। গুজব ছড়িয়েছিল যে, আমার পায়ে গুলি লেগেছে। আসলে সেরকম কিছু হয়নি। আমি শারীরিকভাবে সুস্থ আছি।
শিপ্রা বলেন, আমরা সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, আমরা দু’জন ভালো আছি। কিন্তু আমাদের একজন বন্ধু (সিনহা) নেই। যে ঘটনা ঘটেছে আমরা এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি দেখতে চাই। আপতত আমরা সবার দোয়া চাই। এই মুহূর্তে বেশি কিছু বলতে পারছি না। যা ঘটেছে সব সত্যই আমরা বলব। কোনো সত্য গোপন করব না। তিনি বলেন, প্রচুর গুজব শোনা যাচ্ছে। আজেবাজে অনেক নিউজ হচ্ছে। আমরা বিভ্রান্তিমূলক কোনো খবর চাই না। তিনি আরও বলেন, আমরা যে ক’দিন কারাগারে ছিলাম সে ক’দিন কারা কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে খুবই ভালো ব্যবহার করেছে। তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।
এছাড়া মেজর অবসরপ্রাপ্ত সিনহার অপর সহযোগী তাহসিন। সিনহা হত্যাকাণ্ডের দিন যে রিসোর্ট থেকে সহযোগী শ্রিপাকে গ্রেফতার করা হয় ওই হোটেলে ছিলেন তাহসিনও। মূলত তিনি ভিডিও এডিটিংয়ের কাজ করতেন। ওইদিন দুই লাখ টাকা এবং মাদকসহ শিপ্রাকে গ্রেফতার দেখানো হলেও তাহসিনকে দু’দিন আটকে রেখে তার পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয় পুলিশ।
অপর এক সাক্ষাৎকারে তাহসিন যমুনা টেলিভিশনকে জানান, ঘটনার দিন তারা সারাদিন পাহাড়ে ভিডিওর কাজ করেছেন। ইয়াবা নিয়ে নয়, দুঃসাহসিক ট্রাভেল ভিডিও তৈরি করছিলেন তারা।
এজন্য মাসখানেক ধরে কক্সবাজারে অবস্থান করছিলেন। স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাহসিন জানান, সিনহা হত্যার খবর শুনে যখন লাশের কাছে যাওয়া জন্য নীলিমা রিসোর্ট থেকে বের হচ্ছিলাম তখন পুলিশ আমাদের হোটেলে এসে অভিযান শুরু করে। অভিযান শেষে ভোরের দিকে আমাকে এবং শিপ্রাকে রামু থানায় নেয়া হয়। সেখান থেকে আমাদের কক্সবাজারে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নেয়া হয়।
সেখান থেকে আমাকে ছেড়ে দেয়া হলেও শিপ্রাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। তিনি বলেন, রিসোর্ট থেকে পুলিশ মাদক এবং গাঁজা উদ্ধার দেখালেও আমি কখনও সিনহা, শিপ্রা বা সিফাতকে মাদক গ্রহণ করতে দেখিনি। তিনি জানান, একটি ল্যাপটপ, একটি ডেস্কটপ এবং দুটি হার্ডডিস্ক পুলিশ নিয়ে গেলেও সেগুলো জব্দ তালিকায় দেখানো হয়নি।
গত ৩১ আগস্ট রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ খান। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয় সিনহার সহযোগী সিফাতকে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সিনহা, শিপ্রা ও সিফাতের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করে পুলিশ।
পরে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপসহ ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড়বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। এই মামলায় ৭ পুলিশ সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। তারা এখন কারাগারে আছেন। তাদের র্যাব হেফাজতে নিয়ে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি চলছে। আর পুলিশের করা মামলায় রোববার শিপ্রা ও সোমবার সিফাত জামিন পান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।