জুমবাংলা ডেস্ক : দেশে এয়ারক্র্যাফটের জ্বালানির (জেট ফুয়েল) দাম কমানোয় যাত্রীদের ভাড়া কমাতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ থেকে চলাচলকারী বিভিন্ন এয়ারলাইন্স সংস্থা। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়ার সঙ্গে এক বৈঠকের পর এয়ারলান্সগুলোর প্রতিনিধিরা ফ্লাইটে ভাড়া কমাতে আশ্বাস দেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বেবিচক সদরদপ্তরে ওই বৈঠক হয়।
গত ১৩ মে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিমানের জন্য জেট ফুয়েল জেট এ-১ এর দাম কমানোর ঘোষণা দেয়, যা ওই রাত থেকেই কার্যকর হয়। নতুন সমন্বয় অনুযায়ী, অভ্যন্তরীণ এয়ারলাইনগুলোকে প্রতি লিটার ফুয়েলে ১৭ টাকা ৪৩ পয়সা কমানো হয়। আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনের জন্যও ০.১৪৩৪ ডলার দাম কমিয়ে প্রতি লিটারে ০.৭৫০০ ডলার থেকে ০.৬০৬৬ ডলারে নির্ধারণ করা হয়। এয়ারলাইনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতিদিন নয় হাজার ব্যারেল জেট ফুয়েলের চাহিদা রয়েছে।
সরকার জেট ফুয়েলের দাম কমালেও এয়ারলাইন্সগুলো যাত্রী ভাড়া কমাচ্ছিল না। এ প্রেক্ষিতে গতকাল এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন দেশের এভিয়েশন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বেবিচকের চেয়ারম্যান। ওই বৈঠকে শিগগিরই কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু করা, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানো এবং ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল চালুর বিষয়েও আলোচনা হয়। এয়ারলাইন্স প্রতিনিধিরা তাদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরলে বেবিচক চেয়ারম্যান তা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন।
বৈঠকে এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, জেট ফুয়েলের দাম কমায় যাত্রীরা যেন ভাড়ার ক্ষেত্রে সুফল পান, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে এয়ারলাইন্সগুলোর দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া দরকার। সভায় উপস্থিত সব এয়ারলাইন্স প্রতিনিধিরা এতে একমত হন এবং খুব শিগগিরই বিষয়টি বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান।
বৈঠকে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ারলাইন্সগুলোর প্রতিনিধিদের জানান, সরকার ও বেবিচকের সমন্বিত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তরের কাজ এরইমধ্যে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক মান অনুসারে নিরাপত্তা, কাস্টমস, ইমিগ্রেশনসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করার কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। চলতি বছরের জুনের শেষভাগ বা জুলাইয়ের প্রথম দিক থেকেই এ বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কার্যক্রম আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কার্গো ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্স ও কার্গো অপারেটরদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানোতে এয়ারলাইন্স প্রতিনিধিদের আহ্বান জানান। এজন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, লজিস্টিক সহায়তা এবং প্রশাসনিক সুবিধা নিশ্চিত করতে বেবিচক সর্বাত্মক সহায়তা দেবে।
বৈঠকে বেবিচকের সদস্য (ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলেশনস) এয়ার কমডোর মো. মুকিত-উল-আলম মিঞা, পরিচালক (ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলেশনস) গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. আহসান হাবীবসহ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, কাতার এয়ারওয়েজ, ফ্লাই দুবাই, এয়ার ইন্ডিয়া, থাই এয়ারওয়েজ, ক্যাথে প্যাসিফিক, নভোএয়ার ও এয়ার এ্যাষ্ট্রাসহ দেশি-বিদেশি অন্তত ২০টি এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।