জুমবাংলা ডেস্ক: জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘সরকার নাকি আইএমএফ এর পরামর্শে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আইএমএফ যদি মানুষ হত্যা করতে বলে, তাহলে কী সরকার মানুষ হত্যা করবে?’
তিনি বলেন, ‘সরকার নজিরবিহীনভাবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এটাকে আমরা বলেছি নির্দয় সিদ্ধান্ত। মানুষের প্রতি ভালোবাসা থাকলে সরকার এমন গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।’
আজ (৮ আগস্ট) জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে জাতীয় পার্টি কাকরাইলস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে জি এম কাদের এসব কথা বলেন।
তেলে দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাতীয় পার্টি। ১০ আগস্ট দেশব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতিবাদ সমাবেশে জি এম কাদের আরও বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দেশ পরিচালনার সময় পেট্রোল, অকটেন, ডিজেলের দাম কমিয়েছিলেন। এরশাদ তেলের উপর ট্যাক্স নিতেন না। তেল এমন জিনিস এর দাম বাড়লে জনগণের হৃদয়ে আঘাত করে। আমরা মানুষের হৃদয়ে আঘাত সহ্য করতে পারি না।
‘তেলের দাম যখন নিম্নমূখী তখন হঠাৎ করে কেন দাম বাড়াতে হলো? বিশ্ববাজারে যখন জ্বালানি তেলের মূল্য ১০৯ ডলার থেকে কমিয়ে ৮৯ ডলার হয়েছে, তখন কেন দেশে তেলের মূল্য বাড়াতে হবে? যখন তেলের মূল্য কম ছিল, তখন হাজার কোটি টাকা লাভ হয়েছে, সেই টাকা গেলো কোথায়? লুটপাট হয়েছে?’ এমন নানা প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এমন অবস্থায় জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে মানুষের জীবনকে দুর্বল ও দুর্বিসহ করে তোলা হয়েছে। এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।’
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, তেলের দাম বাড়ালেই পরিবহণ শ্রমিকরা নিজেরাই এক ধরনের হরতাল ডেকে গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়। তখন সরকার হাত-পা ধরে কিলোমিটারে ৩৫ থেকে ৪০ পয়সা বাড়িয়ে দেয়। আর পরিবহণ শ্রমিকরা কয়েকগুন বেশি টাকা আদায় করছে। যদি কেউ অতিরিক্ত ভাড়া দিতে রাজী না হয়, তাকে পথে নামিয়ে দেয়া হয়। জনগণের এই দুর্ভোগ দেখার যেনো কেউ নেই।
জি এম কাদের আরও বলেন, রেন্টাল, কুইক রেন্টাল আর ক্যাপাসিটি চার্জের নামে উৎপাদন ছাড়াই হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হচ্ছে। আমরা জ্বালানী খাতের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে বলছি।
তিনি বলেন, বিশ্ব ব্যাংক আর আইএমএফ-কে সকাল সন্ধ্যা গালাগাল করলো সরকার। আমাদের নাকি অনেক রিজার্ভ আছে, কিন্তু এখন কেন ঋণের জন্য ধর্ণা দিচ্ছে? আমাদের এত রিজার্ভ গেলো কোথায়?
তিনি বলেন, আগে যখন বলেছি দেশ শ্রীলঙ্কার দিকে যাচ্ছে। তখন আমাকে বলা হলো আমি নাকি মুর্খ। কিন্তু এখন এই অবস্থা কেন?
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে কিছু মিল রয়েছে আমাদের। সেখানেও স্বৈরশাসন চলছে, জনগনের কাছে শাসকদের কোন জবাবদিহি নেই আর মেগা প্রকল্পের নামে লুটপাট ও দুর্নীতি চলছে।
তিনি বলেন, জ্বালানী তেলের মূল্য পূর্বের জায়গায় আনতে হবে। অনেক দেশের তেলের মূল্যবৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু সেসব দেশে রেশন দেশে রেশন দেয়া হয় আর দুঃসময়ে নগদ টাকাও দেয়া হয় জনগণকে। সেসকল দেশে মানুষের প্রতি সরকারের জবাবদিহিতা আছে। আমাদের দেশের মানুষ প্রতিনিধি নির্বাচন করেন, এখন প্রতিনিধিরা রাজা হয়ে গেছেন, সাধারণ মানুষ হয়েছে প্রজা। আমরা আর রাজা চাইনা, দেশের মানুষ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার ফিরে পেতে চায়। তাই, একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায় দেশের মানুষ।
জি এম কাদের বলেন, প্রত্যেকটি ব্যাংকে টাকা লুটপাট করা হয়েছে। ঋণের টাকা না দিলেও খেলাপি তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে অনেককে। আমরা এই তালিকা চাই। সরকার বলছে, রিজার্ভ রয়েছে, কিন্তু আমরা দেখছি সরকার টাকার জন্য এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।