এপ্রিল ২০২৫-এ সরকার জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। এ সিদ্ধান্ত বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়। এতে বলা হয়, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ১০৫ টাকা, পেট্রলের দাম ১২২ টাকা ও অকটেনের দাম ১২৬ টাকা নির্ধারিত থাকবে। এই দাম ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছে। এটি বাংলাদেশের বাজারে জ্বালানি তেলের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকারের একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত।
জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ ব্যবস্থা
২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি সরকার স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতির ঘোষণা দেয়। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতি মাসে আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়। এতে করে একদিকে যেমন বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণ সম্ভব, অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় ক্ষতির পরিমাণও কমে। বিশেষ করে ডিজেলের মূল্য নির্ধারণে এই পদ্ধতি বিশেষ কার্যকর।
Table of Contents
অকটেন ও পেট্রল: বিলাসবহুল পণ্যের হিসাব
দেশে ব্যবহৃত অকটেন ও পেট্রল প্রধানত ব্যক্তিগত যানবাহনে ব্যবহৃত হয়। এই কারণে বাস্তবতার নিরিখে এগুলোকে বিলাসবহুল পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এজন্য সব সময় এগুলোর দাম ডিজেলের তুলনায় বেশি রাখা হয়। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) এসব পণ্যে মুনাফা করে, তবে তাদের লাভ-লোকসান নির্ভর করে মূলত ডিজেলের ওপর।
বাংলাদেশে ডিজেলের গুরুত্ব
দেশে ব্যবহৃত জ্বালানি তেলের প্রায় ৭৫ শতাংশই ডিজেল। কৃষি, পরিবহন, শিল্প ও বিদ্যুৎ খাতে এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। এই কারণে ডিজেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু অর্থনৈতিক ব্যয়ের ওপর নয়, সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রার ওপরও সরাসরি প্রভাব ফেলে।
বিশ্ববাজারের প্রভাব ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য ওঠানামার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়ে। তবে বর্তমানে বিশ্ববাজারে কিছুটা স্থিতিশীলতা থাকায় বাংলাদেশ সরকার আপাতত দাম অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভবিষ্যতে যদি বিশ্ববাজারে মূল্য বৃদ্ধি পায়, তাহলে মূল্য সমন্বয় করা হতে পারে।
জনগণের প্রতিক্রিয়া ও অর্থনৈতিক প্রভাব
দাম অপরিবর্তিত রাখার ফলে সাধারণ জনগণের মধ্যে স্বস্তির অনুভূতি দেখা গেছে। বিশেষ করে পরিবহন খাত ও কৃষক সমাজ এ সিদ্ধান্তকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। কারণ, জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও বেড়ে যায়।
সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর ভূমিকা
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম নির্ধারণ করে। অপরদিকে, জেট ফুয়েল ও ফার্নেস অয়েলের দাম সমন্বয়ের দায়িত্বে রয়েছে বিপিসি। দুই বিভাগের সমন্বিত প্রচেষ্টায় মূল্য নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে।
FAQ: প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলি
- প্রশ্ন: এপ্রিল ২০২৫-এ জ্বালানি তেলের দাম কী পরিবর্তিত হয়েছে?
উত্তর: না, সরকার দাম অপরিবর্তিত রেখেছে। - প্রশ্ন: ডিজেল ও কেরোসিনের বর্তমান দাম কত?
উত্তর: প্রতি লিটার ১০৫ টাকা। - প্রশ্ন: স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি কী?
উত্তর: এটি একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে প্রতি মাসে আন্তর্জাতিক বাজার অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করা হয়।
বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত সরকার ও জনগণের জন্য স্বস্তিদায়ক। এই নীতিমালা ভবিষ্যতেও জ্বালানি বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়। আরও বিস্তারিত জানতে এই লিংকে ভিজিট করতে পারেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।