জুমবাংলা ডেস্ক: স্বুস্বাদু আর পুষ্টিকর ফল স্ট্রবেরি বাণিজ্যিকভাবে এখন চাষ হচ্ছে জয়পুরহাটে। ফলন ভালো হওয়া ও অধিক লাভের কারণে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। জেলার মাটি আর আবহাওয়া স্ট্রবেরি চাষের উপযোগী হওয়ায় দিনদিন সম্প্রসারিত হচ্ছে স্ট্রবেরির চাষাবাদ।
অন্যান্য ফসলের তুলনায় স্ট্রবেরি চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এ জেলার কৃষকরা। এখানকার উৎপাদিত স্ট্রবেরি জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। ৭ বছর আগে পরীক্ষা মূলক ভাবে জয়পুরহাট জেলার চান্দা এলাকায় ছোট পরিসরে একজনের মাধ্যমে ষ্ট্রবেরী চাষ শুরু হলেও এখন চাষীর সংখ্যা ৮০ জন। চাষ হচ্ছে প্রায় দুইশ বিঘা জমিতে। সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের ৫টি গ্রামে বর্তমানে চাষ হচ্ছে বিদেশী ফল ষ্ট্রবেরী। গ্রাম গুলো হচ্ছে কালীপাড়া, আওয়াল দেওনা, ইমনিপাড়া, চান্দা ও কুমারপাড়া। ষ্ট্রবেরী চাষের কারণে ওই এলাকার নতুন নাম হয়েছে এখন ষ্ট্রবেরী গ্রাম হিসেবে। এখানে বাণিজ্যিক ভাবেই গড়ে উঠা রেডগ্রীন ষ্ট্রবেরী ভিলেজ থেকে প্রতিদিন এক হাজার থেকে বার’শ কেজি ষ্ট্রবেরী যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। ষ্ট্রবেরী চাষের সফলতা দেখে কৃষকের পাশাপাশি অনেক শিক্ষিত বেকার যুবকরাও এ ষ্ট্রবেরী চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছে। প্রতি বিঘা জমিতে উৎপাদন খরচ ৮০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পড়লেও বিক্রি হচ্ছে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা। যা অন্য কোন ফসল থেকে বেশি আয় করা সম্ভব নয় বলে জানান কৃষকরা। কালীপাড়া গ্রামের ষ্ট্রবেরী চাষি রেজুয়ান হোসেন জানান, দুই বিঘা জমিতে এবার ষ্ট্রবেরী চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে ৪ লাখ টাকার ষ্ট্রবেরী বিক্রি করেছেন আরও এক-দেড় লাখ টাকার স্ট্রবেরী বিক্রি করা সম্ভব হবে বলে জানান। এ ছাড়াও ষ্ট্রবেরীর চারা বিক্রি করে ২ লাখ টাকা বাড়তি আয় করেছেন রেজুয়ান। একেকটি চারা বিক্রি করা হয় ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। রেজুয়ান হোসেনের সফলতায় প্রতিবেশী শহিদুল ইসলাম ২ বিঘা জমিতে, আজিজুল ইসলাম ৫৫ শতাংশ জমিতে ষ্ট্রবেরী চাষ করে সফলতা অর্জন করেছেন বলে জানান। বর্তমান বাজারে খুচরা প্রতি কেজি ষ্ট্রবেরী ৪০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বাড়তি সুবিধা হচ্ছে ষ্ট্রবেরী নিয়ে কৃষকদের বাজারে যেতে হয়না। ষ্ট্রবেরী বাগান থেকে আড়ৎদাররা কিনে নিয়ে যায়। ষ্ট্রবেরী চাষ অর্থনৈতিক ভাবে অত্যধিক লাভবান হওয়ায় দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাত বছর আগে জামালপুর এলাকার শিক্ষিত চার যুবক আব্দুল ওয়াদুদ, আব্দুল হামিদ, রবিউল ইসলাম ও ফারুক হোসেন বাবু প্রথম দিকে ষ্ট্রবেরী চাষে সফলতা অর্জন করায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পুষ্টি ও ওষুধি গুণাগুন সমৃদ্ধ এ ষ্ট্রবেরী চাষ। স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাকস ফাউন্ডেশন এবার ২০ জন ষ্ট্রবেরী চাষির মাঝে স্বল্প সুদে ১০ লাখ ঋণ প্রদান করেছে বলে জানান, জামালগঞ্জ শাখার ম্যানেজার তোফায়েল হোসেন। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সহায়তায় ষ্ট্রবেরী চাষিদের কারিগরি সহায়তাও প্রদান করছে জাকস ফাউন্ডেশন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, জয়পুরহাটের মাটি ষ্ট্রবেরী চাষের উপযোগী, জেলায় এবার প্রায় তিন’শ বিঘা জমিতে পুষ্টি ও ওষুধী গুন সম্পন্ন ষ্ট্রবেরীর চাষ হয়েছে। জয়পুরহাট জেলায় এবার ৫ কোটি টাকার ষ্ট্রবেরী বেচাকেনা হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি। বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি ষ্ট্রবেরী চাষ সম্প্রসারণে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। সূত্র: বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।