গত কয়েকদিনের গরমে ক্লান্ত রাজধানীবাসী অবশেষে পেয়েছে স্বস্তির খোঁজ। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকা এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বজ্রপাত ও ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাসে জনমনে কিছুটা উদ্বেগ থাকলেও, এই বৃষ্টিপাত শীতল প্রশান্তি এনে দিতে পারে গ্রীষ্মের তীব্র তাপে হাঁসফাঁস করা মানুষদের জন্য।
রাজধানী ও আশপাশে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস
আজ ১৩ এপ্রিল ২০২৫, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে আংশিক মেঘলা আকাশের পাশাপাশি ঝড়-বৃষ্টি ও বজ্রপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এই সময়ে ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ী দমকা হাওয়া বইতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে জনসাধারণকে সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
Table of Contents
আজ সকাল ৬টায় রাজধানীর তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৮১ শতাংশ। যদিও গত ২৪ ঘণ্টায় কোন বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়নি, সন্ধ্যার মধ্যেই হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থা।
সম্পূর্ণভাবে ঝড়ো আবহাওয়া সম্পর্কে অবগত থাকতে ঢাকায় ঝোড়ো হাওয়া-বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস প্রতিবেদনটি পড়ে নিন।
দেশের ১১টি অঞ্চলে বজ্রসহ ঝড়ো আবহাওয়ার সম্ভাবনা
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ সন্ধ্যার মধ্যেই দেশের অন্তত ১১টি অঞ্চলে অস্থায়ী দমকা হাওয়া ও ঝড়-বৃষ্টি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এই অঞ্চলে পড়ে: ঢাকা, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, খুলনা, কুমিল্লা, রংপুর, বগুড়া, রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া ও সিলেট। এসব অঞ্চলের নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে, যা জনজীবনে সাময়িক বিঘ্ন ঘটাতে পারে। তবে এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াটি দেশের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস করার দিকেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
পরবর্তী পাঁচদিনের আবহাওয়ার সম্ভাব্য রূপ
১৪ এপ্রিল
আগামীকাল (১৪ এপ্রিল) রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় একই ধরনের ঝড়-বৃষ্টি দেখা দিতে পারে। পশ্চিম থেকে পূর্বে বাতাসের গতি বজায় থাকবে এবং হালকা থেকে মাঝারি তাপমাত্রার হ্রাস পেতে পারে।
১৫-১৬ এপ্রিল
১৫ ও ১৬ এপ্রিল দেশের প্রায় সব বিভাগ—রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেটে দমকা হাওয়াসহ বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই দুই দিনে তাপমাত্রা আরও কমে যেতে পারে এবং বজ্রপাতের প্রবণতাও বাড়তে পারে।
১৭ এপ্রিল ও তারপরে
১৭ এপ্রিল রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি কমলেও আকাশ মেঘলা থাকার প্রবণতা থাকবে।
আবহাওয়ার এমন পূর্বাভাসে জনসাধারণকে ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রপাতের সময় ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে খোলা মাঠ, নদীর তীর বা উঁচু গাছপালার নিচে অবস্থান করা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। পাশাপাশি নদীযাত্রী ও জেলেদেরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
দেশজুড়ে চলমান গ্রীষ্মের দাবদাহে ঝড়-বৃষ্টি যেন শীতল আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। যদিও এসব অবস্থার কারণে যাতায়াত ও দৈনন্দিন কাজকর্মে বিঘ্ন ঘটতে পারে, তবুও কৃষিক্ষেত্রে এই বৃষ্টিপাত আশীর্বাদ স্বরূপ হতে পারে।
রাজধানী ও অন্যান্য শহরের অনেকেই ছাতা, রেইনকোট ও বৃষ্টির উপযোগী পোশাক নিয়ে প্রস্তুত হচ্ছেন। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী এবং কর্মজীবীদের জন্যও এই ঝড়-বৃষ্টির আবহাওয়া বিবেচ্য বিষয়। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মঘণ্টা ও যাতায়াতে প্রভাব পড়তে পারে।
এমন আবহাওয়ায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটও একটি সাধারণ সমস্যা হিসেবে দেখা দিতে পারে, তাই আগে থেকেই পাওয়ার ব্যাংক চার্জ করে রাখা, ইমার্জেন্সি লাইট প্রস্তুত রাখা বুদ্ধিমানের কাজ।
FAQs
- প্রশ্ন: ঝড়-বৃষ্টি কখন বেশি দেখা যায়?
উত্তর: সাধারণত গ্রীষ্মকালে মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে দেশে বেশি ঝড়-বৃষ্টি হয়। - প্রশ্ন: বজ্রপাতের সময় কোথায় নিরাপদ?
উত্তর: বাড়ির ভেতরে থাকা, গাড়ির মধ্যে অবস্থান করা ও খোলা জায়গা এড়িয়ে চলা নিরাপদ। - প্রশ্ন: ঝড়ের সময় বিদ্যুৎ কেটে গেলে কী করবো?
উত্তর: প্রয়োজনে পাওয়ার ব্যাংক, চার্জ লাইট বা ব্যাটারিচালিত ল্যাম্প ব্যবহার করা উচিত। - প্রশ্ন: আবহাওয়ার পূর্বাভাস কোথা থেকে জানা যায়?
উত্তর: বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অথবা বিশ্বস্ত সংবাদমাধ্যম থেকে পাওয়া যায়। - প্রশ্ন: ঝড়-বৃষ্টি কি কৃষির জন্য উপকারী?
উত্তর: হ্যাঁ, সঠিক সময়ে বৃষ্টি হলে ফসলের জন্য তা অত্যন্ত উপকারী হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।