আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের গুজরাটে একটি ঝুলন্ত সেতু ধসে একশর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন মৃতদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু। খবর বিবিসির।
মৃতের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানাচ্ছেন কর্মকর্তারা। এখনো পর্যন্ত ১২০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
রাজ্যের মরবি শহরের মাচ্চু নদীতে সেতুটি ধসে শত শত মানুষ নদিতে ডুবে গেছে। ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে আংশিকভাবে ডুবে থাকা ঝুলন্ত সেতুটিতে বেঁচে যাওয়া মানুষজন ঝুলে রয়েছে।
ঘটনার সময় প্রায় চারশো মানুষ সেতুটির উপরে ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। রাজ্যের মন্ত্রী ব্রিজেশ মের্জা জানিয়েছেন এখনো পর্যন্ত ৮০ জনেরও বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে।
সেতুটি মেরামতের পর আবার চালু হওয়ার মাত্র কয়েকদিন পরই এই ঘটনা ঘটলো। আবার খুলে দেয়ার আগে সঠিকভাবে সেটি পরীক্ষা করা হয়েছিল কি না সেনিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনা তদন্তে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ।
ঔপনিবেশিক যুগের ব্রিজটি ১৯ শতকে ভারতে ব্রিটিশ শাসনের সময় নির্মিত হয়েছিল। দুইশ ত্রিশ মিটারের অবকাঠামোটি স্থানীয়ভাবে জুল্টো পুল নামে পরিচিত। এটি ওই এলাকার একটি জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ।
রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছটা নাগাদ এই দুর্ঘটনা ঘটে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন যে, সেতুটি যখন ধসে পড়ে তখন সেখানে অনেক শিশু ছিল।
দুর্ঘটনার সময় সেতুটিতে ছিলেন এমন একজন প্রতীক ভাসাভা।
তিনি গুজরাটি ভাষার টেলিভিশন চ্যানেল টুয়েন্টিফোর আওয়ারসকে বলছিলেন যে কীভাবে তিনি পানিতে পড়ে যাওয়ার পর সাঁতরে নদীর তীরে উঠেছিলেন।
বেশ কয়েকটি শিশু নদীতে পড়ে যায় বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, “আমি তাদের কয়েকজনকে আমার সাথে টেনে আনতে চেয়েছিলাম কিন্তু তারা ডুবে গেছে বা ভেসে গেছে।”
আর একজন প্রত্যক্ষদর্শী সুকরাম বলেছেন, “অনেক শিশু দিওয়ালির ছুটি উপভোগ করতে সেখানে এসেছিল। অনেক মানুষের চাপে সেতুটি যখন ভেঙে পড়ে তখন তারা একজন আর একজনের উপরে গিয়ে পড়ে।”
কিছু ভিডিওতে ঘটনার সময়কার বিশৃঙ্খলার দৃশ্য দেখা গেছে। ভেঙে পড়ার ঠিক আগে সেতুটি দুলতে শুরু করে। অন্ধকারের মধ্যে নদীর তীরে থাকা মানুষজন পানিতে পড়ে যাওয়া মানুষজনকে উদ্ধার করার চেষ্টা করছে।
অন্য আর একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মানুষ পানি থেকে বাঁচার জন্য অর্ধেক ঝুলে থাকা সেতুটির ওপরের দিকে উঠার চেষ্টা করছেন।
কাছের জেলাগুলি থেকে জরুরি পরিষেবার সদস্যদের উদ্ধার অভিযানে সহায়তার জন্য পাঠানো হয়েছে। রাতভর উদ্ধার অভিযান চলেছে।
দুর্ঘটনাস্থলে পুলিশের পাশাপাশি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
কি কারণে সেতুটি ভেঙে পড়েছে তা ঠিক স্পষ্ট নয়। তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ মনে করছে যে, দিওয়ালি উৎসবের ছুটির কারণে সেখানে অনেক বেশি ভিড় ছিল।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, পথচারীদের ভিড়ে দিনের বেলায় সেতুটি দুলছিল।
তিন দিনের সফরে তার নিজ রাজ্য গুজরাটে সফরে থাকা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, তিনি এই “দুর্ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত”।
যারা মারা গেছেন তাদের স্বজন এবং আহতদের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন মি. মোদী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।