টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে ছাড়া পেল দণ্ডিত ১২১ শিশু

গাজীপুর প্রতিনিধি : র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকা ১২১ শিশু মুক্তি পেয়েছে। এর মধ্যে ১২ বছরের নিচে থাকা ১১ শিশুকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বাকিদের (১২-১৮ বছর) শিশু আদালতের মাধ্যমে জামিন দেয়া হয়েছে। সোমবার (১১ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে অভিভাবকদের কাছে এসব শিশুদের বুঝিয়ে দেয় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।

শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ এহিয়াতুজ্জামান বলেন, হাইকোর্টের আদেশটি আমরা আজই হাতে পেয়েছি। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ১২ বছরের নিচে থাকা ১১ শিশুকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আর যাদের বয়স ১২ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে তাদের সংশ্লিষ্ট শিশু আদালতের সন্তুষ্টি সাপেক্ষে ৬ মাসের জামিন দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে শিশু আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জানা গেছে, টঙ্গী কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে সোমবার সকাল পর্যন্ত মোট বন্দি শিশুর সংখ্যা ছিল ৯৭৯ জন। এর মধ্যে এ বছরের ৩ মে থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত শিশু রয়েছে ১২১ জন। তাদের মধ্যে ৬ মাসের সাজা শেষে রোববার (১০ নভেম্বর) মুক্তি পেয়েছে একজন। বাকি ১২০ জনের মধ্যে ২৮ জনের বয়স ১৭ বছর। ১৬ বছর বয়সী আছে ২৬ জন। ১৫ বছরের ২০ জন, ১৪ বছরের ১৬জন, ১২ বছরের ১১ জন। ৭ জনের বয়স ১৩। বাকি ১২ জনের বয়স ৮ থেকে ১১ বছর।

শিশু আইন অনুযায়ী, অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন অপরাধে জড়িত শিশুর বিচার শুধু শিশু আদালতেই হবে। কিন্তু তা না করে বিভিন্ন সময় শিশুদের দণ্ড দিয়েছে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এর মধ্যে ১২১ শিশু রয়েছে টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে। বিষয়টি গত ৩১ অক্টোবর আদালতের নজরে আনা হলে আদালত ওই দিনই শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকা শিশুদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে কেন্দ্র তত্ত্বাবধায়ককে নির্দেশ দেন। সোমবার সেই আদেশের কপি টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়কের হাতে পৌঁছামাত্রই মুক্তি দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়।

শিশুদের ছেড়ে দেয়ায় আনন্দিত অভিভাবকেরা। মোহাম্মদপুর থেকে ছেলেকে নিতে এসে রেখা নামের এক মা বলেন, আমার ছেলের কোনো দোষ ছিল না। তারপরও তাকে ধরে নিয়ে আসছে। আর এত তাড়াতাড়ি ছাড়া পাবে ভাবতেই পারিনি।

একই এলাকার মো. রাজ্জাক নামের আরেকজন অভিভাবক ছেলেকে কাছে পেয়ে কেঁদে ফেলেন। বলেন, আমি এখন থেকে ছেলেকে চোখে চোখে রাখব। আবার সে লেখাপড়া করবে।

Write a Comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *