স্পোর্টস ডেস্ক: পছন্দের ফরম্যাটে স্বস্তির জয় পেয়েছে টাইগাররা। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে ভরাডুবির পর প্রথম ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। তাতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ১-০তে এগিয়ে গেছে তামিম ইকবালরা।
রবিবার প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামের প্রথম ওয়ানডেতে ভেজা আউটফিল্ডের কারণে ম্যাচ শুরু হতে দেরি হয়েছে। তাই ম্যাচের দৈর্ঘ্য নেমে আসে ৪১ ওভারে। নির্ধারিত এই ওভারে স্বাগতিকরা ৯ উইকেটে করে ১৪৯ রান। সহজ লক্ষ্য ৫৫ বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেট হারিয়ে টপকে যায় বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ৪১ ও সোহান ২০ রানে অপরাজিত থাকেন। তামিম ৩৩ ও শান্ত ৩৭ রান করেন।
দেড়শো রানের সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই লিটনকে(১) হারায় বাংলাদেশ। এরপর ২৫ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলে রান আউট হয়ে ফেরেন তামিম ইকবালও(৩৩)। শান্তর সঙ্গে ৪০ রানের জুটি গড়েছিলেন তামিম।
এরপর মাহমুদউল্লাহ-শান্তর জুটিতে ধীরে ধীরে জয়ের পথে এগোতে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু দুজনের জুটি পঞ্চাশের ঘরে পা দেয়ার আগেই সাজঘরে ফেরেন শান্ত। পুরানের ক্যাচ বানিয়ে শান্তকে (৩৭) ফেরান মোতি। এরপর আফিফ এসে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। জয় থেকে ৩৯ রান দূরে পুরানের বলে আউট হন আফিফ (৯)।
আফিফ ফেরার পর বাকি কাজ সেরেছেন মাহমুদউল্লাহ ও সোহান। পঞ্চম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৪০ রানের জুটিতে নিশ্চিত করেন দলের জয়। মাহমুদউল্লাহ ৬৯ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৪১ রানে। আর সোহান অপরাজিত ২৭ বলে এক চার ও এক ছক্কায় ২০ রানে। দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
এর আগে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে শুরুতেই দারুণ সূচনা পায় টাইগাররা। নিজের প্রথম বলেই উইন্ডিজদের ইনিংসে হানা দেন মুস্তাফিজুর রহমান। শূন্য রানে ফিরিয়ে দেন শাই হোপকে। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপে থাকলেও কাইল মেয়ার্স ও শামার ব্রুকস শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠার চেষ্টা করছিলেন। দ্বিতীয় উইকেটে ৬১ বল খেলে ৩১ রানের ধীরগতির জুটি গড়েন তারা। ১২তম ওভারে এই জুটিটি ভাঙেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তার দুর্দান্ত ঘূর্ণিতে কিছু বুঝে ওঠার আগে স্টাম্প চলে গেছে মেয়ার্সের। তিনি আউট হন ২৭ বলে ১০ করে।
একুশতম ওভারে দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে স্বাগতিকদের চাপ যেন আরো বাড়িয়ে দেন শরিফুল ইসলাম। ব্রেন্ডন কিং (৮) ও শামার ব্রুকসকে(৩৩) ফিরিয়েছেন তিনি। পরে ধীরে ধীরে উইকেটে টিকে থেকে রানের গতি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছিলেন নিকোলাস পুরান ও রভম্যান পাওয়েল। তবে তাদের ১৯ রানের জুটিটি ২৮ বলের বেশি টিকতে দেননি মিরাজ। ২৬তম ওভারে টাইগার অফস্পিনারের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হন পাওয়েল (৯)। বল প্যাডে লাগলে আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। পাওয়েল অবশ্য রিভিউ নিয়েছিলেন। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি।
পরের ওভারে নাসুমের এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন পুরান। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বেঁচে ফেরেন তিনি। তবে বাঁচতে পারেননি মিরাজের হাত থেকে। পরের ওভারে এসে মিরাজ তার ঘূর্ণি জাদুতে বোল্ড করে ফেরান পুরানকে। ২৪ বল মোকাবিলায় ৩ চারের সাহায্যে ১৮ রান করেন তিনি।
দলীয় ৯৬ রানে মিরাজের দারুণ থ্রোয়ে ফেরেন আকিল(৩)। এরপর ফের জোড়া উইকেট শিকার করেন শরিফুল। রোমারিও শেফার্ড ও গুড়াকেশ মোতিকে সাজঘরে ফেরত পাঠান এই ইয়ংস্টার। ৯ উইকেট হারিয়ে উইন্ডিজের রান তখন ১১০। কিন্তু বেশ কয়েকটি ক্যাচ ড্রপের সুবিধা নিয়ে শেষ উইকেট জুটিতে ৪৫ বলে ৩৯ রান তোলেন অ্যান্ডারসন ফিলিপ আর জেইডেন সিলস জুটি। ফিলিপ ২১ আর সিলস ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল শরিফুল ইসলাম। ৮ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে ৪টি উইকেট শিকার তার। ৩৬ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। একটি উইকেট শিকার মুস্তাফিজুর রহমানের। অভিষিক্ত নাসুম আহমেদ উইকেট না পেলেও ৮ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচ করেন। তাসকিন ৮ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।