আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল তখন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ এবং টাইগার আইটি বাংলাদেশ লিমিটেড এর মধ্যে সম্পর্ক কেমন ছিল এবং তাদের আর্থিক জালিয়াতের বিষয়ে নানা অভিযোগ এবং বিতর্ক নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। ডিজিটাল স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং ভেহিকেল নম্বর প্লেটের প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ ২০১১ সালের পেয়েছিল টাইগার আইটি।
টাইগার আইটেম এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির শক্ত প্রমাণ থাকার পর বিশ্ব ব্যাংক সাড়ে নয় বছরের জন্য এটিকে কালো তালিকাভুক্ত করতে বাধ্য হয়। এরপরও টাইগার আইটি বিআরটিএ এর কাছ থেকে নানা অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করেছে এবং প্রকল্পের নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
তাছাড়া আরো অভিযোগ রয়েছে যে বিআরটিএ এর অভ্যন্তরে বিশাল আকারে দুর্নীতি হয়েছে এবং এর ফলে স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে ৬ লাখের বেশি আবেদনকারীকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। তবে টাইগার আইটি এসকল অভিযোগ স্বীকার করতে নারাজ এবং তারা দাবি করছে যে কোম্পানিটি আন্তর্জাতিকভাবে মোটেও কালো তালিকাভুক্ত নয়। বাজারে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী আরো রয়েছে এবং এরকম একটি প্রতিষ্ঠান বিশ্ব ব্যাংকের কাছে অভিযোগ করলে সেটি নিয়ে তদন্ত হয়।
হাসিনা আমলে বিআরটিএ প্রকল্পের কোন স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং তৎকালীন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে বিআরটিএর নানা প্রকল্পে টাইগার আইটি কাজ করছে কোনো প্রকার টেন্ডার ও যাচাই-বাছাই ছাড়াই। টাইগার আইটির পক্ষে প্রভাবশালীদের তদবিরের কারণে কৌশলে বিভিন্ন টেন্ডারে অংশ নেওয়া দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়েছে মূল্যায়ন কমিটি।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এক যুগের বেশি সময় ধরে কোনো ধরনের প্রতিযোগিতা ছাড়াই বিআরটিএতে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ পেয়ে আসছে এ প্রতিষ্ঠান। সক্ষমতা থাকলেও বিআরটিএর আরএফআইডি স্মার্টকার্ড প্রকল্পে টাইগার আইটির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার সাহস দেখায়নি কোনো দেশি প্রতিষ্ঠানই।
নির্বাচন কমিশন, ঢাকা ওয়াসা, পাসপোর্ট অধিদপ্তর, এনআইডি অনুবিভাগের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে বাংলাদেশে আইবিসিএস-প্রাইমেক্স নামে ছদ্মবেশী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কয়েকশ কোটি টাকার কাজ করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। জাল, অবৈধ ও ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স ঠেকাতে ২০১১ সালে ইলেকট্রনিক চিপযুক্ত ডিজিটাল স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রবর্তন করে বিআরটিএ। শুরু থেকেই প্রকল্পে যুক্ত টাইগার আইটি।
তাছাড়া তারিক আহমেদ সিদ্দিক হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে ও আয়নাঘরের পরিকল্পনাকারী হিসেবে তাকেই ধরা হায়। শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। তারিক ও তার স্ত্রী শাহনাজ সিদ্দিকী শেখ হাসিনার সময়ে তার প্রশ্রয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়। তাদের এ ধরনের অনেক বিনিয়োগ রয়েছে যা সবার কাছ থেকে গোপন রাখা হয়েছে।
তারিক দম্পতি ব্যবসা সম্প্রসারণ, নানা প্রতিষ্ঠান অনুমোদন, ঋণ এবং বিনিয়োগের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন ও এখানে আর্থিক কেলেঙ্কারির সাথে যুক্ত ছিলেন। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করার পর তিনি হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।