বিনোদন ডেস্ক: রাজধানীর মিরপুরের টাউন হলের স্থানেই আধুনিক নাট্যমঞ্চ নির্মাণের দাবিতে টাউন হলের ‘মিরপুর মুক্ত বেদীতে’ প্রতিবাদী গান, কবিতা ও নাটক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মিরপুর সাংস্কৃতিক ঐক্য ফোরাম আয়োজিত ‘ভেঙে ফেলা টাউন হলের স্থানেই আধুনিক নাট্যমঞ্চ চাই’ প্রতিপাদ্যে ১৫ অক্টোবর প্রতিবাদী এ অনুষ্ঠানমালা হয়।
এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন—মিরপুর সাংস্কৃতিক ঐক ফোরামের সহসভাপতি রেজাউল করিম রেজা, ঐক্য ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান সভাপতি মন্ডলির সম্মানিত সদস্য ইকবাল হাবিব, দনিয়া সাংস্কৃতিক জোট ও নির্বাহী সদস্য- বাংলাদেশ গণ সংগীত সমন্বয় পরিষদের বদিউর রহমান, বিশিষ্ট কলামিষ্ট ও সাবেক এন বি আর’র চেয়ারম্যান আহামেদ আবিদ রুমি, চলচ্চিত্র নির্মিতা ও গবেষক আহামেদ আবিদ রুমি, বিশিষ্ট শিশু সংগঠক ও ঐক্য ফোরাম সহসভাপতি আশিকুর রহমান ভুলু ও মিরপুর জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপিঠ সুপারভাইজার প্রমিলা বিশ্বাস।
মাহফুজুর রহমান সবুজের রচনা ও নির্দেশনায় পথ নাটক ‘চক্কর’ প্রদর্শন করে অবয়ব নাট্য দল। সমবেত সংগীত পরিবেশন করে রংধনু শিল্পি সংঘ। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে কাব্যবর্ষণ।
একক আবৃত্তি পরিবেশন করে ‘মিথস্ক্রিয়া আবৃত্তি পরিসর’র অনিন্দ্য মাহাদি, সাদিক প্রধান, ইকবাল হাবিব, নাদিম মাহমুদ, সাফিয়া খন্দকার রেখা এবং কবি, শিশু সাহিত্যক ও বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পিরা।
গণ সংগীত পরিবেশন করেন মিরপুর সাংস্কৃতিক ঐক্য ফোরামের সাবেক সভাপতি এবং বাংলাদেশ গণ সংগীত সমন্বয় পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান।
সমাপনী বক্তব্য রাখেন মিরপুর সাংস্কৃতিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি আবুল খায়ের।
উল্লেখ্য, ১৯৭৮ সালে তৎকালীন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে মিরপুর উন্নয়ন কমিটির তত্ত্বাবধানে নির্মিত মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরের পাশে একটি টাউন হল ও মিরপুর ২ নম্বর সেকশন সনি সিনেমা হলের পাশে একটি গণপাঠাগার তৎকালীন সিটি কর্পোরেশনকে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের বুঝিয়ে দেওয়া হয়। সিটি কর্পোরেশন ২০০০ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান দুটির দেখভাল করেছে। অতঃপর ২০০৪ সালে ওই ভবনটি ব্যবহার অনপোযোগী বলে পুননির্মানের ঘোষণা দিয়ে টাউন হলটি ভেঙ্গে ফেলে, আর গণপাঠাগারকে ট্যাক্স অফিস রূপান্তর করে!
টাউন হলের জায়গায় সিটি কর্পোরেশন মার্কেট করার সিদ্ধান্ত নেয়। সংস্কৃতি কর্মীরা টাউন হল ফেরত পাওয়ার জন্য আন্দোলন শুরু করলে তারা আশ্বাস দেয় মার্কেট হলেও সেখানে মঞ্চ করে দেওয়া হবে। গত ১৯ বছরে সেই মার্কেট হয়নি, মঞ্চও করে দেওয়া হয়নি। টাউন হলের জায়গায় সাংস্কৃতিক কর্মীরা মুক্তবেদী তৈরি করে সংস্কৃতি কর্ম চালাতে থাকে। একসময় সেই কার্য বন্ধ হয়ে যায়। সিটি কর্পোরেশন সেখানে ময়লার বাগার রাখার স্থান করে। যেখানে সংস্কৃতি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার কথা সেখানে আজ ময়লার স্তূপ! এটা মেনে নেওয়া যায় না।
মিরপুরের সংস্কৃতি কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে পর্যায়ক্রমে মঞ্চের দাবিতে আন্দোলন করেছে। কিন্তু মঞ্চ ফেরত আসেনি। কিন্তু সংস্কৃতি কর্মীরা এবার সোচ্চার এবং প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে টাউনহলের জায়গায় আধুনিক নাট্য মঞ্চ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে। গত কয়েক মাস ধরে এই আন্দোলন চলমান।
এই আন্দোলন পরিচালনা করছে মিরপুরের চল্লিসটির অধিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত মিরপুর সাংস্কৃতিক ঐক্য ফোরাম। দেশের জাতীয় সংস্কৃতিক সংগঠনগুলো এবং ব্যক্তিবর্গ তাদের সাথে সহমত পোষণ করে আসছে।
মিরপুর সাংস্কৃতিক ঐক্য ফোরামের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক, নাট্য সংগঠক, নির্দেশক সগীর মোস্তফা বলেন, ‘নানা সময়ে নানা রকম আশ্বাস দিয়েও আমাদের সাথে প্রতারণার আশ্রয় নেয়া হয়েছে বার বার। তাই আজ আমরা আবারও রাস্তায়, বেছে নিয়েছি সংগ্রামের পথই । আমাদের অধিকার আদায়ের লড়াই এবার। লড়াইটা চলবে ততদিন, যতদিন ভেঙ্গে ফেলা টাউন হল স্থানে পূনঃরায় আধুনিক নাট্যমঞ্চ নির্মিত না হয়, এবার সফল না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফেরা হবে না।’
মায়ের জন্য কিডনি বিক্রির পোস্টার লাগানো সেই যুবকের পাশে জায়েদ খান
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।