জুমবাংলা ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জ ডিবির এসআই আরিফ। মাইক্রোবাসের ভেতর রাখা বেশ কয়েকটি টাকার বান্ডেলের ওপর শরীর ছেড়ে সিটে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। ওই অবস্থায় কেউ তাকে ক্যামেরাবন্দি করে ফেলেন।
বুধবার সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জ-সিদ্ধিরগঞ্জ সড়কের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার এই ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ডিবি পুলিশের এই সদস্য জেলার সদ্য বিদায়ী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
জাতীয় দৈনিক সমকালের অনলাইন সংস্করণে বুধবার রাতে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
এসআই আরিফের সঙ্গে পত্রিকাটির প্রতিবেদক যোগাযোগ করলে টাকার উৎস সম্পর্কে কিছু বলতে রাজি হননি তিনি। তবে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে ‘স্যার’ জানেন। কোন ‘স্যার’ জানতে চাইলে তিনি আবারও ‘স্যার’ জানেন বলে ফোন কেটে দেন।
সম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে নিরপরাধ মানুষকে তুলে নিয়ে মোটা অঙ্কের উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এতদিন কেউ সাহস করে না বললেও ডিবি পুলিশের এই কর্মকর্তার টাকার ওপর ঘুমিয়ে থাকার ছবি ভাইরাল হওয়ার পর অনেকেই গণমাধ্যমকর্মীদের ফোন করে তাদের সঙ্গে ডিবি পুলিশের আচরণ তুলে ধরেন। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে তারা নাম প্রকাশ করতে চাননি।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জে একটি মাইক্রোবাস নিয়ে দায়িত্ব পালন করে এসআই আরিফের টিম। বুধবার সকালে ক্লান্ত হয়ে গাড়ির ভেতরেই ঘুমিয়ে পড়েন আরিফ।
ছবিতে দেখা যায়, ওই সময় বেশ কয়েকটি টাকার বান্ডেল (এক হাজার ও পাঁচশ’ টাকার) আরিফের পেটের কাছ থেকে বেরিয়ে আছে। এর পাশেই তার সরকারি ওয়াকিটকি এবং দুটি মোবাইল ফোন রয়েছে। ওই সময় তার টিমের সদস্যরা পাশের একটি দোকানে চা খাচ্ছিলেন।
যে ব্যক্তি এই ছবি তুলেছেন তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন, ডিবি পুলিশ এমন কোনো রাত নেই যে, সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে না। নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে বলেন, এর আগে তিনিও ডিবি পুলিশের হেনস্তার শিকার হয়েছেন। মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে তিনি রক্ষা পান।
তিনি জানান, বুধবার সকালে তিনি ডিবি পুলিশ লেখা মাইক্রোবাসের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখেন গাড়ির ভেতরে এক ব্যক্তি টাকার ওপর ঘুমিয়ে আছেন। ওয়াকিটকি এবং বাংলাদেশ পুলিশ লেখা একটি ফাইল দেখে তিনি নিশ্চিত হন- তারা পুলিশের সদস্য। তাই তিনি ছবিটি তোলেন। পরে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ছবিটি দেন। গণমাধ্যমকর্মীরাই গাড়িতে থাকা ব্যক্তি ডিবি পুলিশের এসআই আরিফ বলে শনাক্ত করেন।
আরিফের বিরুদ্ধে গত ৪ অক্টোবর ফতুল্লার পঞ্চবটির হরিহরপাড়ার ইউনাইটেড ক্লাবে হানা দিয়ে ক্লাবের সভাপতি শিল্পপতি তোফাজ্জল হোসেন তাপুসহ সাতজনকে ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আরও অভিযোগ রয়েছে, তাদের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ৩০ লাখ টাকা আদায় করেন আরিফ। এরপর জুয়া আইনে মামলা দিয়ে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত থেকে তারা ২০০ টাকা জরিমানা দিয়ে জামিন পান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মনিরুল ইসলাম প্রমাণ হিসেবে তিনি ওই ঘটনার ছবি দেখতে চান। তার কাছে ছবি পাঠালে তা দেখে তিনি বলেন, টাকার উৎস সম্পর্কে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।