টাকার বিনিময়ে ধর্ষণের বিচার, গৃহবধূকে দিয়ে স্বামীকে ‘তালাক’

জুমবাংলা ডেস্ক : গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এরপর অভিযুক্ত ব্যক্তিকে টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেওয় হয়। শুধু তাই নয়, স্বামীকে বাঁচাতে সেই নারীকে দিয়ে জোরপূর্বক স্বামীকে কথিত তালাক দেওয়া হয়। আর এসবই ঘটে গ্রাম্য সালিসে ইউপি সদস্য ও মাতব্বরদের উপস্থিতিতে।

সোমবার গভীর রাতে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের শেখপাড়া গ্রামে এই সালিসি বৈঠক হয়।

স্থানীয়রা জানান, ওই মেয়ের সঙ্গে সামাদ আলীর ছেলে ফয়জার রহমানের ৭ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তার স্বামী ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করে আসছিলেন। এই সুযোগে পাশের বাড়ির মৃত কালাম আলীর ছেলে সুমন মিয়া দীর্ঘদিন থেকে ওই গৃহবধূকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন।

রবিবার গভীর রাতে সুযোগ বুঝে সুমন মিয়া গৃহবধূর শয়ন ঘরে প্রবেশ করে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে। এসময় লোকজন সুমনকে হাতেনাতে আটক করে।

এ ঘটনায় পরের দিন স্থানীয় মাতব্বররা গ্রাম্য সালিসের আয়োজন করে। প্রকাশ্যে সালিস বৈঠকের ১১ সদস্যের বোর্ড গঠন করা হয়। এতে বোর্ডের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য ফজলুল হক। সালিস বোর্ডে অভিযুক্ত ধর্ষককে এক লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়াও ধর্ষিতার স্বামী ও তার পরিবারকে বাঁচাতে জোর পূর্বক ওই নারীকে দিয়ে তালাক দিতে বাধ্য করা হয়। একই সঙ্গে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় স্বামী ফয়জার রহমানের। পরে গভীর রাতে সালিস বোর্ডের সকল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়।

ওই সালিস বোর্ডে মেয়ে পক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত মাতব্বর আতোয়ার রহমান জানান, গ্রাম্য সালিসে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে তা মেনে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে মেয়েটাকে বাবার বাড়িতে রাখা হয়েছে। মেয়ের একটু দোষ থাকায় অভিযুক্তকে শাস্তি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

সালিসি বোর্ডের সভাপতি ফজলুল হক জানান, ধর্ষণের ঘটনা সত্য। ব্যস্ত থাকায় ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যকে সমাধানের দায়িত্ব দিয়ে এসেছি।

ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাদেক হোসেন জানান, সালিসি সভায় উভয়ে পারিবারিকভাবে মীমাংসা হয়েছে। আর তালাকের বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে করা হয়েছে। স্বামীকে ৭০ হাজার টাকা দিতে বলা হয়েছে।

পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।