নিজস্ব প্রতিবেদক: রাতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে রাজধানীর কালশীর বাউনিয়া বাঁধ এলাকার বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই আগুনে পুড়ে যায় বস্তির দুই শতাধিক ঘর। সব হারিয়ে বস্তির ছয় শতাধিক বাসিন্দার আশ্রয় এখন খোলা আকাশের নিচে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে মিরপুর কালশী এলাকার বাউনিয়াবাদ বস্তিতে লাগে ভয়াবহ আগুন। নিয়ন্ত্রণে আসার আগে পুরো বস্তিই পুড়ে ছাই হয়েছে। আর তাতেই এখন সেখানকার বাসিন্দাদের মুখে কেবল দুশ্চিন্তার ভাঁজ।
মায়া নামে এক নারী খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে নিজের পুড়ে যাওয়া ঘর দেখছিলেন। তিনি বলেন, এক কাপড়ে বের হয়েছি। এখন কোথায় কিভাবে থাকব, তা আল্লাহই জানে। একদিকে শীতের কনকনে ঠান্ডা, আরেক দিকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। ঘরের মাল-ছামানা বা টাকা-পয়সা কিছুই নিতে পারিনি বের হওয়ার সময়।
নার্গিস বানু নামে এক বৃদ্ধা জানান, ছেলে আর ছেলের বউ বরিশালে গ্রামের বাড়িতে গেছে। দুই নাতিকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন। আগুন লাগার খবর পেয়ে নাতিদের নিয়ে কোনোরকমে বের হয়েছেন।
আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে নার্গিস বলেন, আল্লাহই একমাত্র জানে কোথায় থাকব। শীতে রাত কেমনে কাটবে, সেই চিন্তাই বাঁচি না। কয়েকদিন টাকা জমিয়ে আজ দিনে একটা কম্বল কিনেছিলাম, সেই কম্বলটাও নিতে পারিনি।
এদিকে, স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লা বলেছেন, মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে পাশের আনন্দ নিকেতন স্কুলে বস্তিবাসীকে যেতে বলা হয়েছে। সেখানে তারা আপাতত আশ্রয় নেবেন। সেখানে সকালসহ সব বেলার খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি শীতে যেন বস্তিবাসীকে কষ্ট না করতে হয়, সেজন্য পোশাক দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন স্থানীয় এই এমপি।
ইলিয়াস মোল্লা বলেন, বাউনিয়াবাদের এই জায়গাটিতে প্লাস্টিকের বিভিন্ন ভাঙারির দোকান ছিল। কিছুদিন আগে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ভেঙে দিয়েছিল দোকান-ঘরগুলো। ধীরে ধীরে আবার টং ঘর তৈরি হয়েছে। সেখানে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ ছিল কি না, তা জানা ছিল না। তবে কর্তৃপক্ষের তদারকি করা উচিত ছিল। করলে হয়তো আজকের এই আগুনের ঘটনা নাও ঘটতে পারত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।