জুমবাংলা ডেস্ক: সাপ্তাহিক ছুটি ও বড়দিন মিলে টানা তিন দিনের ছুটিতে পর্যটকদের পদভারে মুখর ছিল প্রাকৃতিক সৌর্ন্দযের লীলাভূমি পাহাড়ী কন্যা পর্যটন শহর রাঙ্গামাটি।
জেলার প্রতিটি পর্যটন স্পটে এখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখর।পরিবার পরিজন নিয়ে দেশী বিদেশী পর্যটকরা এখন পাহাড়ের নির্মল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করেছেন মনের আনন্দে। এই পর্যটকের সমাগম আরো বাড়তে পারে পারে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
রাঙ্গামাটি হোটেল স্কয়ার পার্কের ম্যানেজার মোঃ রায়হান এবং হোটেল এম্বাসেডরের মালিক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, রাঙ্গামাটির হোটেলগুলোতে এখন পর্যটকের আগমন আগের তুলনায় অনেক বেশী। আমাদের হোটেলসহ শহরের অন্যান্য সব হোটেল-মোটেল গুলোতে শতভাগ বুকিং রয়েছে বলে জানান তারা।
ঢাকা থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে রাঙ্গামাটিতে ঘুরতে আসা পর্যটক লোকমান হাকিম বলেন, আমি দেশের ভিতরে ও বাইরে অনেক জায়গাতে বেড়াতে গেছি,সকল স্থানের থেকে আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম অনেক চমৎকার ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশের মানুষ কেন বিদেশে যায় জানি না। বিদেশে গিয়ে যে টাকা খরচ করে তার চেয়ে অনেক কম টাকা খরচে রাঙ্গামাটিতে ভ্রমণ করলে আনন্দ আরো বেশী পাওয়া যাবে। আরো পরিকল্পনা নিয়ে রাঙ্গামাটির পর্যটনকে এগিয়ে নিতে পারলে এখানে সবসময়ই পর্যটকে ভরপূর থাকবে বলে আশা তার।
রাঙ্গামাটি পর্যটন কর্পোরেশন এলাকার বোট ইজারাদার মোঃ রজমান আলী বলেন, শীতের শুরু থেকেই রাঙ্গামাটিতে পর্যটকের আগমন বাড়তে থাকে। বর্তমানে টানা তিন দিনের ছুটিতে পর্যটকে পরিপূর্ণ এখন রাঙ্গামাটি।
তিনি জানান, পর্যটকের আগমন বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের বোটের ব্যবসা অনেক ভালো হচ্ছে এবং বোট সমিতির পক্ষ থেকে আগত পর্যটকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে এবং সরকারের বেধে দেয়া নিয়মেই পর্যটকদের সেবা দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
রাঙ্গামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, গত কয়েকদিনে রাঙ্গামাটিতে আগের তুলনায় প্রচুর পর্যটক এসেছেন এবং আমাদের আবাসিক রুমে প্রায় শতভাগ ভাগ রুম বুকিং রয়েছে। এখনো আমাদের কাছে ফোন আসছে রুমের জন্য। তিনি বাসসকে আরো বলেন, শুধু পর্যটন কমপ্লেক্স নয় রাঙ্গামাটির সব হোটেল মোটেলই এখন পর্যটকের আগমনে পরিপূর্ণ। কোথাও কোন রুম খালী নেই। পর্যটকের আগমন আরো বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি।
রাঙ্গামাটি শহর ছাড়াও জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার মেঘের রাজ্য খ্যাত সাজেক ভ্যালিতেও বর্তমানে কানায় কানায় পর্যটকে পরিপূর্র্ণ। টানা তিন দিনের বন্ধে ইতোমধ্যে মেঘের রাজ্য সাজেকের ছোট-বড় সব কটেজ শতভাগ বুকিং হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি জয় মারমা।
তিনি আরো জানান, সাজেকের প্রায় ১১২টি রিসোর্ট-কটেজের মধ্যে প্রায় সবগুলো রিসোর্টই শতভাগ পর্যটক এসে অবস্থান করছেন।
রাঙ্গামাটি হ্রদ পাহাড়ের মিতালী দেখে আগত পর্যটকরা খুবই খুশী। রাঙ্গামাটিতে শীতের শুরু থেকে জেলায় বেড়েছে পর্যটকের আগমন। জেলায় বিভিন্ন পাহাড়ী এলাকায় সরকারী ও ব্যক্তি পর্যায়ে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন পর্যটন স্পট।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা রাঙ্গামাটি জেলার পর্যটন শিল্পের বিকাশে পরিকল্পিতভাবে সরকারীভাবে আরো নতুন নতুন পর্যটন স্পট গড়ে তোলাসহ কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া গেলে পর্যটন খাতে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকেই অনেক রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি পার্বত্য জেলা দেশের একমাত্র পর্যটনের কেন্দ্র স্থল বলে মনে করেন ঘুরতে আসা পর্যটকরা।
রাঙ্গামাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের বিনোদনের জন্য রয়েছে পর্যটনের ঝুলন্ত ব্রীজ, পুলিশ বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত সুখী নীলগঞ্জ ও পলওয়েল পার্ক, ডিসি বাংলো, নানিয়ার উপজেলার বুড়িঘাটের বীর শ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের স্মৃতিসৌধ, শহরের ভেদভেদির মিনি চিড়িয়াখানা, রাজবন বিহার, কাপ্তাই লেক, সুভলং ঝর্ণা, পেদাটিংটিং, টুকটুক ইকো ভিলেজ, বার্গী লেক, ডিভাইন রিসোর্ট, বেড়াইন্ন্যাসহ কাপ্তাই লেকের পাড়ে গড়ে উঠা বিভিন্ন পর্যটন স্পট।
রাঙ্গামাটির এসব বিনোদন কেন্দ্রে এখন মানুষের আগমন বাড়তে শুরু করায় পাহাড়ী কন্যা রাঙ্গামাটি এখন পর্যটকদের পদচারণায় অনেকটাই মুখর বলা চলে।-বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।