আন্তর্জাতিক ডেস্ক : টুইটারে ক্যাম্পেইন চলছে #অ্যামআইনেক্সট এবং অনলাইনে আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন পাঁচ লক্ষেরও বেশি মানুষ। তাদের দাবি মূলত ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাগুলোর প্রতিবাদেই এই ক্যাম্পেইন চলছে, আর তাতে অংশ নিচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষ। দেশটির প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা অবশ্য সমস্যা মোকাবেলায় ব্যবস্থা নেয়ার অঙ্গীকার করেছেন। অপরাধ কমাতে মৃত্যুদণ্ডের বিধান ফিরিয়ে আনা হোক।
যেসব ব্যবস্থার কথা বলা হচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে থাকবে যৌন সহিংসতার বিচারের জন্য বিশেষ আদালতের সংখ্যা বাড়ানো এবং কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা ব্যবস্থা। ৩৭ বছর বয়সী ফটোসাংবাদিক সারাহ মিডগ্লে দুই সন্তানের জননী এবং বাস করেন দেশটির প্রধান শহর জোহানেসবার্গে। এক দশক আগে ধর্ষণের শিকার হওয়ার যে মানসিক আঘাত, সেটি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। এই দুঃসহ অভিজ্ঞতা নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে কথা বলেছেন তিনি।
সারাহ বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে সাত বছরের মধ্যে তখনি প্রথম আমি শান্তিতে নিঃশ্বাস নিলাম। কিন্তু আমি স্বপ্নেও দেখতাম যে আমার সাবেক বয়ফ্রেন্ড ফিরে আসছে এবং আমাকে ও আমার সন্তানদের ওপর আক্রমণ করছে। আমি মানুষকে ভয় পেতে শুরু করলাম। চেষ্টা করলাম যাতে কেউ না বোঝে। তাই একা না থেকে চলে যাই বাবা মার কাছে।’
সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ ছোটবেলায় একবার যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার পর থেরাপি নেয়ার অভিজ্ঞতাও ছিল সারাহর। তবে ভয়ংকর বিষয় ছিল যে ধর্ষণের শিকার এক মাকে এই যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে যেতে হবে, যার দুটো সন্তান রয়েছে। সারাহ নিজের মেয়েদের বোঝাতে শুরু করেন যে তিনি সবসময়ই তাদের জন্য নিরাপদ জায়গা। তারা যেনো তাকে সবসময় বিশ্বাস করে এবং মা হিসেবে তিনিও সন্তানদের বিশ্বাস করবেন।
তিনি সন্তানদের নিরাপত্তা বিষয়ে বেশী চিন্তিত হয়ে পড়লেন। সন্তানদের ফোন কিনে দিলেন ও নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে শুরু করলেন।কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে তিনি মনে করেন নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় খুব বেশী কোনো ব্যবস্থা নেই। সারাহ বলছিলেন, ‘আমি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম এই ভেবে যে আমি যে ঘটনার শিকার হয়েছিলাম, তেমনটি যদি তাদের ক্ষেত্রেও হয়!’
২০১০ সালের নিজের সাবেক প্রেমিকের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন সারাহ মিডগ্লে, যখন তার দেশে বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজন চলছিল। আঠারো মাস ধরে সেই প্রেমিক তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে জানান তিনি। ‘অনেকবার আমি তাকে ছেড়ে আসার কিন্তু যতবারই চেষ্টা করেছি ততবার সে আরও সহিংস আচরণ করেছে। আমাকে লাথি মারত, গলা টিপে ধরত। কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করত।’
সারাহ বলেন, এসব ঘটনা তিনি কারও কাছে বলেননি কারণ এটি ছিল তার জন্য লজ্জার ও বিব্রতকর। তার ভাষায়, ‘যদি তাকে ছেড়ে যাই, তাহলে সে নিয়মিত আমার কন্যাদের ধর্ষণ ও আমার সামনেই তাদের খুন করবে বলে হুমকি দিতো। এমনকি একবার আমাকে ইলেকট্রিক শক পর্যন্ত দিয়েছিল সে। আমি পরিবার ও বন্ধুদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমি বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলাম যে সে আমার সন্তানদেরও ক্ষতি করবে’।
কিন্তু যখন তার সাহস হলো প্রেমিককে ছেড়ে যাওয়ার, তখন তিনি সেই কাজটি করলেন অত্যন্ত গোপনে, ‘১০ দিন পর সে আমার ঘরের দরজায় এলো, বললো যে সে শেষবারের মতো সহযোগিতা চায়। সে বললো ২৫ কিলোমিটার দূরে তার চাচার খামারে যাওয়ার মতো পয়সাও তার হাতে নেই।’
তবে সারাহর কাছে সে অঙ্গীকার করে যে তাকে পৌঁছে দিলে সে আর তাদের জীবনে থাকবে না। সারাহর ভাষায়, ‘ধর্ষণের ঘটনার বহু বছর পর আমি নিজেকেই দোষ দিলাম এ কারণে যে আমি বিশ্বাস করেছিলাম আমাকে সে যন্ত্রণামুক্ত হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। গাড়ীতে করে দিয়ে আসার সময়ই খেয়াল করলাম যে সে চুপ হয়ে আছে। আমি আবারও বুঝতে পারলাম যে সে আসলে হেরোইন সেবন করে’।
সারাহ ওই ব্যক্তিকে বলেছিলেন যে তিনি খামার বাড়ির গেটে তাকে নামিয়ে দিয়ে চলে আসবেন, ‘কিন্তু যখন খামারে পৌঁছলাম সে দৌড়ে আমার দিকে এসে দরজা খুলে চুল ধরে টেনে-হিঁচড়ে বের করার চেষ্টা করে। আমি গাড়িতে পড়ে গেলে সে আমার মাথায় লাথি মারে। যখন জ্ঞান ফিরলো তখন খামারের বাইরে একটি কোয়ার্টারে এবং আমার ওপরে তাকে দেখতে পেলাম। তার এক বন্ধুও তার সাথে যোগ দিলো। আমি আবারো জ্ঞান হারালাম। জ্ঞান ফেরার পর দেখি তারা চলে গেছে, আর খামারের পরিচ্ছন্নতা কর্মী সেখানে এল।’
সারাহর পাশে দাঁড়ানো পরিচ্ছন্নতা কর্মীর হাতে এক বালতি পানি ছিল। নিজের কিছু কাপড় দিয়ে সে সারাহকে পরিষ্কার করে দিতে উদ্যত হয়। সারাহ তাকে থামতে বলেন এবং পুলিশ বা অ্যাম্বুলেন্স ডাকতে বলেন। এরপর একটি অ্যাম্বুলেন্স এসে সারাহকে হাসপাতাল নিয়ে যায়। সারাহর শারীরিক ক্ষত বেশ গভীর ছিল এবং তাকে একটি ছোটো অপারেশনও করতে হয়। এসবের মধ্যে সারাহ দেখতে পান তার ওপর হামলাকারী জামিন পেয়েছে শহর ছেড়েছে। পরে অবশ্য সে গ্রেপ্তার হয় এবং তার ৮ বছরের জেল হয়। এরপর ২০১৭ সালে সে জেলে ৭ম বছর কাটানোর সময় প্রস্টেট ও ব্লাডার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
কাশ্মীরের দূত হিসেবে জাতিসংঘে বক্তব্য রাখবেন ইমরান খান
আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২১:৪৭
আপডেট:
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৩:১২
8
Shares
আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে কাশ্মীরের দূত হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
সোমবার নিজ দলের এক বৈঠকে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে আমি ‘কাশ্মীরি দূত’ হিসেবে বক্তব্য রাখব। খবর এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।
কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের দেয়া নির্দেশনার বিষয়ে ইমরান খান বলেন, ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট কাশ্মীর ইস্যুতে যে নির্দেশনা দিয়েছে, তা আমাদের মতকেই সমর্থন করে। আমরা কাশ্মীরি জনগণের পক্ষে আমাদের লড়াই অব্যাহত রাখব।
ভারত সরকার কাশ্মীর নিয়ে মিথ্যা বলছে দাবি করে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, উগ্রপন্থী এ সরকারের কারণে কাশ্মীরের বিষয়টি এখন আন্তর্জাতিক ফোরামে চলে গেছে। ভারত যেভাবে বিষয়টি নিয়ে মিথ্যাচার করছে, তা এখন সবাই দেখছে। আমরা কাশ্মীরিদের প্রতি সমর্থন ও সহায়তা অব্যাহত রাখব। ২৭ সেপ্টেম্বর আমি জাতিসংঘে বিষয়টি সবার সামনে তুলে ধরব।
প্রসঙ্গত, ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ সভায় একই দিনে ভাষণ দেবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এ দুই নেতা কিছু সময়ের ব্যবধানে ভাষণ দেবেন। তবে এ সাধারণ সভায় কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে দুই নেতা বাকযুদ্ধে জড়াবেন বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
জাতিসংঘের সাধারণ সভায় প্রথমে বক্তব্য রাখবেন নরেন্দ্র মোদি পরে ইমরান খান। কাশ্মীর নিয়ে গত এক মাস ধরে চলা কূটনৈতিক টানাপড়েন এবং বাকযুদ্ধের মধ্যে তাদের বক্তব্যের বিষয়টি কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসছে এ মাসের শেষের দিকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।