স্পোর্টস ডেস্ক: টিভি লাইভে মোহাম্মদ আশরাফুলকে ‘দেশদ্রোহী’ বলে আখ্যায়িত করেছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আশরাফুল বলেছিলেন, ক্রিকেট দলের নির্বাচক প্যানেলের সদস্যদের কাজে মেয়াদ ৩ থেকে ৪ বছর হলে ভালো হয়। এই বিষয়ে নান্নুর কাছে জানতে চাইলে টেলিভিশনের এক লাইভ অনুষ্ঠানে আশরাফুলকে ‘দেশদ্রোহী’ বলে আখ্যায়িত করেন নান্নু।
নান্নু বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার একজন প্রধান নির্বাচক কত বছর কাজ করেছে আশরাফুলের বোধহয় ধারণা নেই। প্রায় ৯ থেকে ১২ বছর একটানা কাজ করেছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়া কি ক্রিকেট থেকে পিছিয়ে গিয়েছে?’
ক্ষিপ্ত হয়ে নান্নু আরো বলেন, ‘যেসব খেলোয়াড় দেশদ্রোহী হয়ে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে নিষিদ্ধ হয়, ওদের কাছ থেকে ভালো পরামর্শ আশা করা কঠিন।’
সেই টিভি অনুষ্ঠানের ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে যায়। বিষয়টি দৃষ্টি এড়ায়নি আশরাফুলের। রবিবার দিবাগত রাতে নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে লাইভে আসেন আশরাফুল।
ফেসবুক লাইভে আশরাফুল বলেন, ‘আপনার সাক্ষাৎকারেই বোঝা যাচ্ছে আপনার গুড বুকে আমি নেই বলেই এখন সুযোগ পাচ্ছি না। সেন্স ভাই আমাদের কম নেই। আল্লাহর রহমতে আমাদেরও মোটামুটি সেন্স আছে। খেলা নিয়ে আমরাও সারাদিন চিন্তা করি। ছোটবেলা থেকে এখনো ঘুম থেকে উঠে সারাদিন ক্রিকেট নিয়ে চিন্তা করি। সাদাকে সাদা বলব, কালোকে কালো বলব। অন্যায় করেছি স্বীকার করি। আমার আত্মবিশ্বাস আছে বলে এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
আশরাফুলের দাবি, নির্বাচক প্যানেল নিয়ে তার করা ঐ মন্তব্য নান্নুর উদ্দেশে ছিল না, ‘আমি কোনো ব্যক্তির নাম বলিনি, আমি ঐ দায়িত্বের কথা বলেছি। নান্নু ভাই লাইভে ঢুকে সরাসরি আক্রমণ করলেন আমার নাম ধরে। এটা আসলে খুব দুঃখজনক। আমি যে কথাটা বলেছি সেটা নান্নু ভাইকে নিয়ে বলিনি বা কারো নাম ধরে বলিনি। আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমার মতামত বলেছি।’
ম্যাচ ফিক্সিং নিয়ে আশরাফুল বলেন, ‘আমি যদি প্রকাশ্যে স্বীকার না করতাম তাহলে হয়তো ভিন্ন চিত্র হতো। তাহলে এক বছরের শাস্তি হত, হয়তো এখনো জাতীয় দলে খেলতাম। আপনাদের কাছে এখনো ক্ষমা পাইনি, আপনার কথাতে এটা বুঝা যাচ্ছে। আমার প্রকাশ্যে স্বীকার করা ভুল হয়েছে। একেকজন কিন্তু একেক জায়গায় ভুল কাজ করছেন। চোখ কান খোলা রাখলেই শুধু হবে।’
বাংলাদেশের ক্রিকেটে নিজের অবদানের কথা তুলে ধরে আশরাফুল বলেন, ‘নান্নু ভাই যেভাবে নাম ধরে দেশদ্রোহী, ম্যাচ ফিক্সার বললেন, এটা তো ২০১৩ সালে হয়েছে। আমি সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছি, শাস্তিও হয়েছে। যেভাবে আক্রমণ করলেন, কষ্ট লেগেছে। আমি তো উল্টাপাল্টা কিছু বলিনি। যদি বলেন আমার অবদান নেই, তাহলে তো কিছু বলার নেই। আমার কিন্তু কম অবদান নেই। আপনি যদি মনে করেন আমি কিছু করিনি, তাহলে তো দুঃখজনক।’
আশরাফুল এ সময় নান্নুর সাথে তার সুসম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। নান্নুর অধীনেই ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল) ম্যাচ খেলার সুযোগ অর্জন করেছিলেন বলে জানান আশরাফুল।
আশরাফুল বলেন, ‘পুরো ম্যাচ পানি খাইয়ে আমার পরের ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছিল। পানি নিয়ে দৌড়ে যেতাম, উনি চাইলেই খাওয়াতাম। পরে বললেন তুই পরের ম্যাচ খেলবি। নান্নু ভাইয়ের মাধ্যমেই আমার প্রিমিয়ার লিগে খেলা (অভিষেক)। আমি কখনো অতীত ভুলি না। অতীত সবসময় আমার মনে আছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।