বিনোদন ডেস্ক: বাঙালি জাতি এমন গান ঠিক শেষ কবে শুনেছিল, তা মনে করতে খাটতে হবে। এমন সুর, এমন কথা কিংবা এমন ‘লারেলাপ্পা’ নাচে ভরপুর ডগমগ এক গান। না সেই গানের সংস্কৃতি নিয়ে কম কথা হয়নি। ভাষার একেবারে জবাই করা হয়েছে, বলে অভিযোগও উঠেছিল নেটমহল্লায়। তবে সে সবের তোয়াক্কা করেনি নেটবাসিন্দারা। তার প্রমাণ এখনো ইউটিউবের সংখ্যা বলে দিচ্ছে।
দুই বছর পেরিয়ে টুম্পার হিট ১৮৮ মিলিয়ন পার। আজও ভাসানের জাতীয়গীতি থেকে প্রি-ওয়েডিং ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরে স্থান ধরে রেখেছে টুম্পা। তবে দুবছর পেরিয়ে এক নতুন কন্ট্রোভার্সিতে নাম উঠে এল ‘টুম্পা সোনা’র।
একটি ফেসবুক পোস্ট। তাতে লেখা, ‘টুম্পার ভিউ এখন ১৮৮ মিলিয়ন, যার থেকে আসা একটা টাকাও আমি পাইনি। আমি ভিডিও করার খরচা জোগাড় করেছি, গানটাও আমার তৈরি করা। আমি এটার প্রোডিউসার ছিলাম তারপরেও এই অবস্থা। আমাকে জাস্ট ভয় দেখিয়ে সবকিছু নিয়ে নিয়েছে নাহলে হয়তো এটাই শেষ গান হয়ে থেকে যেত। টাকার থেকে জীবনের দাম বেশি, তাই ছেড়ে দিতে বাধ্য হলাম। অনেক লোকেই জানে ব্যাপারটা কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি, আমার জন্য। সবাই আনন্দ করেছে, নেচেছে, ভিডিও বানিয়েছে, সব করেছে কিন্তু আমার নিজের ইনকাম করা টাকা আমি পাইনি।
যিনি এই পোস্ট করেছেন তিনি অভিষেক সাহা। ‘টুম্পা’ গানটির কম্পোজার, অ্যারেঞ্জার এবং প্রোগ্রামার। অভিষেককে ফোনে ধরা হয়, জানতে চাওয়া হয়, ঠিক কী কারণে তাকে ভয় দেখিয়ে কী নিয়ে নেওয়া হয়েছে তার থেকে?
অভিষেক সরাসরি অভিযোগ গানের অন্যতম প্রোডিউসার অরিজিত সরকারের দিকে, তিনি বলেন- প্রথমত গানটির প্রোডিউসার আমি ছিলাম। অরিজিত্ নয়। আমি সবাইকে পেমেন্ট করছি। ভিডিও বানানোর টাকাও আমি জোগাড় করি। আমি যখন দেখি প্রোডিউসারের জায়গায় ওর নাম, তখন মিউজিক লেবেল কোম্পানিতে ফোন করে জানতে চাই কেন অরিজিতের নাম রয়েছে প্রোডিউসারের জায়গায়? তখন তারা বলেন, অরিজিতের সঙ্গে কথা বলে মিটমাট করে নিতে। আমার কথা হয় অরিজিতের সঙ্গে, ও আমাকে বলে আমি তোমার নামে গানটি ট্রান্সফার করে দেব, সইসাবুত করে। ও আমাকে ওর বাঘাযতীনের বাড়িতে ডাকে।
এরপর অভিষেক আরো বলেন, ওর বাড়িতে যাওয়ার আগে আমাকে দু’জন লোক ধরে, তাদের কোমড়ে বন্দুক ছিল। আমি বুঝে গেলাম যে আমাকে সই করতেই হবে, এবং অরিজিত নয়, আমাকেই ট্রান্সফার করতে হবে সবকিছু। তারপরে আর কী বা করার থাকে? গান হিট হওয়ার পর কোনো টাকাই আমি পাইনি। পুলিশে অভিযোগ করেননি কেন? প্রশ্নের জবাবে অভিষেক বলেন, আমি ভয় পেয়েছিলাম। সত্যিই ভয় পেয়েছিলাম। আজ পাই না। তাই ফেসবুকে জানিয়েছি।
অভিযোগের তীর যার দিকে, সেই অরিজিত্ সরকারকে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি গোটা ঘটনা জানার পরে হেসে-হেসে বলেন, আমি নিজে ইনডিপেন্ডেন্ট ছবি বানাই। আমি বন্দুকটন্দুক কীভাবে জোগাড় করব? ও ভুলভাল কথা বলছে, আমার এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) আমার কাছে আছে। চুক্তিও আছে। আমি টু্ম্পা সোনা গানটির প্রোডিউসার। ও একটাও টাকা দেয়নি। ও এসব করে অ্যাটেশন সিক করছে। আগেও এটা করেছে। একবার ফেসবুকে লাইভে এসে বলেছিল, ওকে আমরা ক্রেডিটই দিইনি। এটা ও করে থাকে। ফেসবুকে ভুলভাল লেখে আবার ডিলিটও করে দেয়।
একটি গান, সেটা আদপে কার? তা নিয়ে তরজা আগেও হয়েছে। কখনো তা বিদেশি গানের অনুকরণ নাকি তামিল, তা নিয়েও তর্কাতর্কি কম হয়নি। কিন্তু গান বানিয়ে বন্দুকের নলের সামনে পড়তে হয়েছে, এমন অভিযোগ বোধহয় এর আগে ওঠেনি। ‘টুম্পা সোনা’ কি আদপে তাহলে ভীষণ দুষ্টু!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।