সমূহ সম্ভাবনার দেশ আমাদের বাংলাদেশ। এখন প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের পণ্য বিশ্ববাজারে স্থান করে নিচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হচ্ছে, বাড়ছে স্থানীয় বাজারের সক্ষমতা এবং কর্মপরিধি। মাছ, পাট ও ফলসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য রপ্তানি করা হয় বিদেশে। এছাড়া তৈরি পোশাক শিল্প ও কুটির শিল্প রপ্তানিতেও প্রশংসা কুড়িয়েছে বাংলাদেশ।
সালমা বেগম পারিবারিকভাবে স্বচ্ছলতা এনেছেন ফ্রি-ল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় জানতে পারেন ফ্রি-ল্যান্সিং করে কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি এবং অর্থ-উপার্জন সম্পর্কে। গ্রাফিকস ডিজাইনে ট্রেনিং করে খুলে ফেললেন ওডেস্কে অ্যাকাউন্ট। শুরুতে কাজ কম পেলেও, নিজ দক্ষতা ও কর্মগুণে আজ প্রতিষ্ঠিত করেছেন নিজ ভিত্তি।
ফ্রিল্যান্সিংয়ের আরো বেশকিছু সুবিধা রয়েছে। পারিবারিক ব্যস্ততা সমন্বয়ের পর গৎবাঁধা পার্ট-টাইম চাকরি করা অনেকের জন্য চ্যালেঞ্জিং বিশেষ করে নারীদের জন্য। ফ্রি-ল্যান্সিংয়ে নিজের সময়, সুযোগ, সুবিধামতো কাজ করতে পারছেন নারীরা। সফল উদ্যোক্তা নারায়ণগঞ্জের নীলা। চাকরি ছেড়ে করছেন জামদানি শাড়ির ব্যবসা। তার সঙ্গে কাজ করেছেন আরও অনেকজন নারী। দেশের বাজারে চাহিদা মিটিয়ে এ শাড়ি রপ্তানি হচ্ছে পাশ্ববর্তী কয়েকটি দেশে। আগে পাইকারী বাজারে শাড়ি বিক্রিতে ঝামেলা হলেও এখন ঘরে বসেই ইন্টারনেট ও সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে সহজেই দেশে-বিদেশের ক্রেতাদের কাছে নিজের কারখানায় তৈরি শাড়ির স্যাম্পল দেখাতে পারছেন।
গ্রামীণ জীবনেও আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের লক্ষ্যে সরকারি উদ্যোগে প্রতিটি ইউনিয়নে চালু করা হয়েছে ডিজিটাল সেন্টার। এই আমূল পরিবর্তনের সারথী হয়ে দেশের নাগরিকদের নিরলস সেবা দিয়ে যাচ্ছেন আমাদের নারী উদ্যোক্তারা। যারা সংখ্যায় দেশের জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেক। তারাও যে একটু সুযোগ পেলে আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে উঠতে পারে তার অন্যতম উদাহরণ ডিজিটাল সেন্টারগুলো।
র্তমানে সারাদেশের ৮ হাজারের অধিক ডিজিটাল সেন্টারগুলোয় প্রায় ১৬ হাজারের অধিক উদ্যোক্তা কাজ করছেন, যার অর্ধেকই রয়েছেন নারী উদ্যোক্তা। এসব ডিজিটাল সেন্টার থেকে ৩৬০ এর অধিক সরকারি-বেসরকারি সেবা খুব সহজে, দ্রুত ও স্বল্প খরচে গ্রহণ করতে পারছেন নাগরিকরা। এক হিসাবে দেখা যায়, প্রতিমাসে ডিজিটাল সেন্টার থেকে গড়ে ৭০ লক্ষের অধিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
নাগরিকদের সেবা প্রদান, তাদের জীবনমান উন্নয়ন করার পাশাপাশি আর্থিকভাবেও স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে এইসকল নারী উদ্যোক্তারা। সেইসাথে তারা প্রান্তিক অঞ্চলে নতুন নতুন উদ্যোক্তাও সৃষ্টি করছেন। মাত্র এক যুগ আগেও যেখানে গ্রামের মানুষের ডিজিটাল সেবা সম্পর্কে ধারণা ছিল না, সেখানে ডিজিটাল সেন্টারের নারী উদ্যোক্তারা তাদের স্ব-স্ব ইউনিয়নের মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ডিজিটাল সেবা সম্পর্কে সচেতন করে তুলেছেন।
দেশজুড়ে সেবা প্রদানের মাধ্যমে এই সকল নারী উদ্যোক্তারা নিজেদের পরিবর্তনের যে বৈপ্লবিক অগ্রযাত্রা শুরু করেছে, তার ফলাফল বর্তমানেই পরিলক্ষিত হচ্ছে। সুদূর ভবিষ্যতে তাদের এ অগ্রযাত্রা দেশের নারীদের এগিয়ে নেবে বহুদূর। বর্তমানেই ডিজিটাল সেন্টারে একজন উদ্যোক্তার হাত ধরে ইউনিয়ন পর্যায়ে সৃষ্টি হচ্ছে হাজার হাজার উদ্যোক্তা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।