Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home টেনিসে নতুন প্রতিভা: ভবিষ্যতের আশা!
    খেলাধুলা ডেস্ক
    খেলাধুলা

    টেনিসে নতুন প্রতিভা: ভবিষ্যতের আশা!

    খেলাধুলা ডেস্কMd EliasAugust 24, 202515 Mins Read
    Advertisement

    বাতাসে তখনও কাঁপুনি লেগেছিল। ঢাকার রমনা টেনিস কমপ্লেক্সের কোর্ট নম্বর ৩। মাত্র পনেরো বছরের মিতুল ইসলাম, তার হাতে টেনিস র্যাকেটের গ্রিপ শক্ত করে ধরে আছে। প্রতিপক্ষ, তার চেয়ে বছর চারেক বড়, দেশের জুনিয়র র্যাঙ্কিংয়ে নামিদামি এক খেলোয়াড়। ম্যাচ পয়েন্ট… মিতুলের বিপক্ষে। দর্শকদের নিঃশ্বাস আটকে আছে। সার্ভ… রিটার্ন… ক্রসকোর্ট ফোরহ্যান্ড উইনার! মিতুলের জয়! চারপাশে ফেটে পড়ে উল্লাস। সেদিনের সেই জয় শুধু একটি টুর্নামেন্টের ম্যাচ জিতেনি; তা যেন বাংলাদেশের টেনিসের ভবিষ্যতের দিগন্তে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের আবির্ভাবের সংকেত দিয়েছিল। টেনিসে নতুন প্রতিভা: ভবিষ্যতের আশা! – এই শিরোনাম আজ আর শুধু আকাঙ্ক্ষা নয়, বাস্তবের ক্রমবর্ধমান ছবি। ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া, বগুড়া থেকে চট্টগ্রাম – মাটি কাঁপছে তরুণ পায়ের জোরালো পদচারণায়, র্যাকেটের ঝনঝনানিতে ভরে উঠছে কোর্ট। তারা আসছে, লড়ছে, জিতছে, আর স্বপ্ন দেখাচ্ছে এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের।

    টেনিসে নতুন প্রতিভা

    টেনিসে নতুন প্রতিভা: ভবিষ্যতের আশা! – বাংলাদেশের উদীয়মান তারকারা যারা বদলে দিচ্ছে দৃশ্যপট

    এক দশক আগেও বাংলাদেশের টেনিস মানচিত্র ছিল সীমিত, প্রায় একচেটিয়াভাবে ঢাকা ও চট্টগ্রামের কয়েকটি ক্লাব ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উপস্থিতি ছিল বিরল। কিন্তু গত কয়েক বছরে এই চিত্র পাল্টে যাচ্ছে দ্রুতগতিতে। তরুণ টেনিস তারকাদের একটি উল্লেখযোগ্য জোয়ার এসেছে, যারা শুধু স্থানীয় টুর্নামেন্টে নয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক জুনিয়র সার্কিটেও নিজেদের দক্ষতার স্বাক্ষর রাখতে শুরু করেছে।

    • মিতুল ইসলাম: রমনা টেনিস কমপ্লেক্সের সেই কিশোর এখন দেশের শীর্ষস্থানীয় জুনিয়র খেলোয়াড়। তার আক্রমণাত্মক বেসলাইন খেলা এবং অদম্য মনোবল তাকে আলাদা করে চিহ্নিত করেছে। সম্প্রতি নেপালে অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান জুনিয়র টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে সেমিফাইনালে পৌঁছানো তার আন্তর্জাতিক সম্ভাবনারই ইঙ্গিত দেয়। তার ফোরহ্যান্ড স্ট্রোকের শক্তি এবং নেট অ্যাপ্রোচের দক্ষতা বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়।
    • রাফিদুল ইসলাম রাফি: চট্টগ্রামের এই মেধাবী খেলোয়াড় তার অসাধারণ ফুটওয়ার্ক এবং কৌশলগত বুদ্ধিমত্তার জন্য পরিচিত। তার র্যাকেট হ্যান্ডলিং এবং পয়েন্ট নির্মাণের ক্ষমতা তার বয়সের তুলনায় বেশ পরিপক্ক। গত বছর ভারতের একটি আইটিএফ জুনিয়র টুর্নামেন্টে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছানো বাংলাদেশি জুনিয়র টেনিসের জন্য একটি মাইলফলক ছিল, যেখানে রাফি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
    • সাবরিনা সুলতানা তৃষা: মেয়েদের টেনিসে বাংলাদেশের নতুন মুখ, তৃষা। রাজশাহী থেকে উঠে আসা এই প্রতিভা তার অগ্নিময় খেলার ধরন এবং লড়াকু মনোভাবের জন্য দ্রুতই নজর কেড়েছে। তার সার্ভিসের গতি এবং ব্যাকহ্যান্ড ডাউন দ্য লাইন শট বিশেষভাবে কার্যকর। জাতীয় জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে তার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশ টেনিসে নারী প্রতিভার উত্থানের স্পষ্ট প্রমাণ। তার সাফল্য দেশের লক্ষাধিক মেয়েকে ক্রীড়াক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গড়ার প্রেরণা যোগাচ্ছে।
    • জেবিন আক্তার টুম্পা: আরেকজন উদীয়মান নারী তারকা, টুম্পার শক্তি তার ধৈর্য এবং কোর্ট কভারেজে। তার ডিফেন্সিভ স্কিলস অসাধারণ, প্রায়ই সে প্রতিপক্ষকে ভুল করতে বাধ্য করে। ঢাকার বাইরে, যশোরে তার ট্রেনিং প্রমাণ করে টেনিস প্রতিভা অনুসন্ধান এখন শুধু রাজধানীতে সীমাবদ্ধ নেই, তা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে। তার নিরলস পরিশ্রম এবং কৌশলগত বুদ্ধিমত্তা তাকে ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

    এই তরুণ প্রজন্মের উত্থানের পেছনে কি কারণ? প্রথমত, বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশন (বিটিএফ)-এর জুনিয়র ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের সম্প্রসারণ। বিটিএফ এখন নিয়মিত জাতীয় জুনিয়র সার্কিট আয়োজন করছে, যাতে তরুণরা প্রতিযোগিতামূলক অভিজ্ঞতা অর্জন করছে। দ্বিতীয়ত, স্থানীয় টেনিস একাডেমিগুলোর ভূমিকা। রমনার পাশাপাশি সাভারে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের টেনিস কমপ্লেক্স, বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সুবিধা এবং চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেটে ক্রমবর্ধমান একাডেমিগুলো (যেমন চট্টগ্রাম লন টেনিস কমপ্লেক্স, খুলনা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল টেনিস একাডেমি) কিশোর টেনিস খেলোয়াড়দের জন্য প্রশিক্ষণের সুযোগ তৈরি করছে। তৃতীয়ত, সামাজিক মাধ্যম এবং টেলিভিশনে আন্তর্জাতিক টেনিস (গ্র্যান্ড স্লাম টুর্নামেন্টগুলো) এর ব্যাপক সম্প্রচার তরুণ প্রজন্মকে এই খেলার প্রতি আকৃষ্ট করছে। নাদাল, ফেদারার, জোকোভিচ, সেরেনা উইলিয়ামসদের খেলা দেখে তারা অনুপ্রাণিত হচ্ছে। চতুর্থত, কিছু নিবেদিতপ্রাণ কোচ, যারা নিজেদের সময় ও শ্রম ব্যয় করে এই কিশোর টেনিস প্রতিভাদের গড়ে তুলছেন। পঞ্চমত, পিতামাতাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন; ক্রমশই তারা ক্রীড়াকে সন্তানের ক্যারিয়ার হিসেবে গ্রহণ করতে আগ্রহী হচ্ছেন।

    কিন্তু এই যাত্রা মসৃণ নয়। এই তরুণ টেনিস তারকাদের সামনে বিশাল চ্যালেঞ্জ:

    • অভিজ্ঞ কোচিং স্টাফের অভাব: আন্তর্জাতিক মানের, বিশেষায়িত কোচিং সুবিধা এখনও সীমিত। উচ্চতর স্তরে উন্নীত হওয়ার জন্য অত্যাধুনিক কৌশলগত, শারীরিক ও মানসিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন।
    • প্রতিযোগিতামূলক অভিজ্ঞতার সীমাবদ্ধতা: বিদেশে নিয়মিত আইটিএফ জুনিয়র বা ফিউচার্স টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করতে পারার সুযোগ খুবই কম। আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিদ্বন্দ্বিতার সংস্পর্শে না আসলে বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। ভিসা জটিলতা, আর্থিক সীমাবদ্ধতা প্রধান বাধা।
    • আর্থিক সংকট: টেনিস একটি ব্যয়বহুল খেলা। মানসম্পন্ন র্যাকেট, জুতো, পোশাক, ভ্রমণ, থাকা-খাওয়া, টুর্নামেন্ট ফি – এসবের জন্য পর্যাপ্ত স্পনসরশিপ বা আর্থিক সহায়তা না পাওয়া অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ারকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয়। তরুণ টেনিস প্রতিভার বিকাশে বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা এখনই অনুধাবন করতে হবে।
    • মানসিক দৃঢ়তার প্রশিক্ষণ: চাপ সামলানো, ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠা, দীর্ঘ ম্যাচে ফোকাস ধরে রাখা – এগুলো আন্তর্জাতিক টেনিসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই তরুণ টেনিস তারকাদের জন্য নিয়মিত মানসিক দক্ষতা প্রশিক্ষণ (Mental Toughness Training) প্রয়োজন।
    • ফিজিওথেরাপি ও স্ট্রেন্থ কন্ডিশনিং সুবিধা: ক্রমাগত খেলায় শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখা জরুরি। পেশাদারী ফিজিওথেরাপি ও স্ট্রেন্থ কন্ডিশনিং কোচের সহায়তা অপরিহার্য, যা এখনও সীমিত পর্যায়ে আছে।

    এই টেনিসে নতুন প্রতিভাদের বিকাশে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনকে নেতৃত্ব দিতে হবে, সরকারি ও বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে, মিডিয়াকে তাদের গল্প বলতে হবে, এবং সর্বোপরি, দেশবাসীকে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। প্রতিটি ম্যাচ জয়, প্রতিটি টুর্নামেন্টে ভালো পারফরম্যান্স শুধু সেই খেলোয়াড়ের জন্য নয়, পুরো দেশের টেনিস ভবিষ্যতের জন্য অনুপ্রেরণা।

    বীজ থেকে বৃক্ষের পথ: ট্রেনিং, অবকাঠামো ও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা

    টেনিসে নতুন প্রতিভা: ভবিষ্যতের আশা! – এই আশাকে বাস্তবে রূপান্তর করতে গেলে শুধু মেধা যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন টেনিস প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বিশ্বমানের টেনিস কোচ, টেকসই অবকাঠামো এবং একটি শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো যা এই কিশোর টেনিস খেলোয়াড়দের ক্রমাগত বিকাশের পথ সুগম করে।

    ঢাকার হৃদয়ে ও তার বাইরে: কোর্ট যেখানে স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটে

    বাংলাদেশের টেনিসের প্রাণকেন্দ্র ঐতিহ্যগতভাবে ঢাকার রমনা টেনিস কমপ্লেক্স। এখানে কয়েকটি হার্ড কোর্ট রয়েছে, যেখানে দেশের সেরা অনেক খেলোয়াড় প্রশিক্ষণ নেয়। সাভারে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম কমপ্লেক্সেও বেশ কয়েকটি আধুনিক হার্ড কোর্ট রয়েছে, যা জাতীয় ক্যাম্প ও গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট আয়োজনে ব্যবহৃত হয়। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (বিএনএসপি) সাভারেই অবস্থিত, যেখানে আবাসিক সুবিধাসহ ক্রীড়াবিদদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, এবং টেনিসও এর অন্তর্ভুক্ত।

    কিন্তু তরুণ টেনিস প্রতিভাদের বিকাশ শুধু রাজধানীতে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশন এবং স্থানীয় প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে জেলা পর্যায়ে টেনিস সুবিধার প্রসার ঘটছে, যদিও গতি আরও বাড়ানো প্রয়োজন:

    • চট্টগ্রাম লন টেনিস কমপ্লেক্স: চট্টগ্রামের টেনিসের মূল ঘাঁটি। বেশ কয়েকটি গ্রাস কোর্ট রয়েছে। সিটি কর্পোরেশন ও বিটিএফ এর রক্ষণাবেক্ষণ করে। এখান থেকেই উঠে এসেছেন অনেক জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড়।
    • খুলনা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল টেনিস একাডেমি: খুলনা অঞ্চলে তরুণ প্রতিভা বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। স্কুলের সাথে সংযুক্ত থাকায় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সমন্বয় সম্ভব হচ্ছে।
    • রাজশাহী টেনিস কমপ্লেক্স: উত্তরবঙ্গের টেনিসের প্রাণ। সম্প্রতি কিছু আধুনিকায়ন করা হয়েছে।
    • সিলেট জেলা স্টেডিয়াম টেনিস কোর্ট: সিলেটে ক্রীড়া চর্চার অন্যতম কেন্দ্র। জেলা ক্রীড়া সংস্থা এর তত্ত্বাবধান করে।
    • কুষ্টিয়া টেনিস একাডেমি: একটি উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ, যা কুষ্টিয়া ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর মেধাবীদের আকর্ষণ করছে। স্থানীয় উদ্যোক্তা ও বিটিএফ-এর সমর্থনে গড়ে উঠেছে।
    • বগুড়া টেনিস কমপ্লেক্স: উত্তরাঞ্চলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র, বগুড়া জেলা স্টেডিয়াম সংলগ্ন।

    চ্যালেঞ্জ: বেশিরভাগ কোর্টই হার্ড সারফেস। আন্তর্জাতিক স্তরে সব ধরনের সারফেসে (ক্লে, গ্রাস) খেলার অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ নেই। অনেক জেলার কোর্টের রক্ষণাবেক্ষণ ও আধুনিকায়ন (ফ্লাডলাইট, সীটিং) দরকার। টেনিস প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বলতে শুধু কোর্ট থাকলেই হয় না, প্রয়োজন জিমনেসিয়াম, ফিজিওথেরাপি সেন্টার, কনফারেন্স রুম, বিশ্রামাগার ইত্যাদি।

    শিল্পীর হাত: কোচ যারা গড়ে তোলেন ভবিষ্যতের তারকা

    একজন টেনিস কোচ শুধু শট শেখান না, তিনি গড়ে তোলেন একজন পূর্ণাঙ্গ ক্রীড়াবিদ ও মানুষ। বাংলাদেশে কিছু নিবেদিতপ্রাণ কোচ আছেন যারা টেনিসে নতুন প্রতিভাদের লালন-পালনে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। যেমন ঢাকার রমনা ও বিএনএসপিতে কর্মরত অভিজ্ঞ কোচগণ, চট্টগ্রামের প্রবীণ কোচবৃন্দ, খুলনা ও রাজশাহীর প্রশিক্ষকরা। এছাড়াও, জেলা পর্যায়ে অনেকেই স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করছেন।

    কিন্তু সমস্যা গভীর:

    1. সংখ্যার অভাব: ক্রমবর্ধমান তরুণ টেনিস খেলোয়াড়দের তুলনায় প্রশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ কোচের সংখ্যা অপ্রতুল।
    2. বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের ঘাটতি: জুনিয়র ডেভেলপমেন্ট, স্ট্রোক প্রোডাকশন, মেন্টাল টাফনেস, ফিজিক্যাল কন্ডিশনিং, নিউট্রিশন – প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিশেষজ্ঞ কোচিং প্রয়োজন। বর্তমানে একজন বা দুজন কোচকেই সব দায়িত্ব সামলাতে হয়।
    3. আন্তর্জাতিক এক্সপোজার ও আপডেটেড জ্ঞানের অভাব: আন্তর্জাতিক কোচিং মেথডোলজি, প্রযুক্তির ব্যবহার (ভিডিও অ্যানালিসিস, পারফরমেন্স ট্র্যাকিং ডিভাইস) এবং সর্বশেষ ট্রেন্ডস সম্পর্কে আপ টু ডেট থাকার সুযোগ কোচদের খুব সীমিত।
    4. কোচিং ক্যারিয়ারের অনিশ্চয়তা: পেশাদার কোচিংকে একটি স্থিতিশীল ও সম্মানজনক ক্যারিয়ার হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজন। ভালো পারিশ্রমিক ও ক্যারিয়ার গ্রোথের সুযোগ না থাকলে মেধাবীরা এই পেশায় আসতে উৎসাহিত হবেন না।

    সমাধানের পথ:

    • বিটিএফ কর্তৃক নিয়মিত কোচ এডুকেশন প্রোগ্রাম (সার্টিফিকেশন কোর্স) আয়োজন: আন্তর্জাতিক ফেডারেশন (আইটিএফ) বা এটিপি/ডব্লিউটিএ কোচদের সাথে যৌথভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
    • বিদেশে প্রশিক্ষণ: প্রতিশ্রুতিশীল কোচদের আন্তর্জাতিক একাডেমি বা ওয়ার্কশপে পাঠানো।
    • বিশেষজ্ঞ বিদেশি কোচ আমদানি: নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিশেষজ্ঞ বিদেশি কোচ এনে জুনিয়র বা সিনিয়র দলকে প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং স্থানীয় কোচদের প্রশিক্ষণ দেওয়া।
    • কোচদের জন্য আর্থিক প্রণোদনা ও ক্যারিয়ার পথ সুস্পষ্ট করা।

    প্রাতিষ্ঠানিক শক্তি: বিটিএফ এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা

    বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশন (বিটিএফ) দেশে টেনিসের সর্বোচ্চ পরিচালনা পরিষদ। গত কয়েক বছরে বিটিএফ জুনিয়র ডেভেলপমেন্টের দিকে বেশ মনোযোগ দিয়েছে:

    • জাতীয় জুনিয়র সার্কিট: নিয়মিতভাবে বিভিন্ন বয়সভিত্তিক (U14, U16, U18) টুর্নামেন্ট আয়োজন, যা কিশোর টেনিস প্রতিভাদের জন্য অমূল্য প্রতিযোগিতামূলক অভিজ্ঞতা সরবরাহ করে। বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে টুর্নামেন্ট ক্যালেন্ডার পাওয়া যায়।
    • জাতীয় ক্যাম্প: সাভার বা রমনায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জাতীয় ক্যাম্পের আয়োজন, যেখানে সেরা জুনিয়রদের একত্রিত করে ইনটেন্সিভ ট্রেনিং দেওয়া হয়।
    • আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ: সীমিত আকারে হলেও দক্ষিণ এশীয় বা অন্যান্য আঞ্চলিক জুনিয়র টুর্নামেন্টে দল পাঠানো।
    • ট্যালেন্ট হান্ট প্রোগ্রাম: মাঝে মাঝে জেলা পর্যায়ে টেনিস প্রতিভা অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা।

    তবে বিটিএফ-এর সামনে চ্যালেঞ্জও কম নয়:

    • পর্যাপ্ত বাজেটের অভাব: জুনিয়র ডেভেলপমেন্ট, কোচ প্রশিক্ষণ, কোর্ট রক্ষণাবেক্ষণ, আন্তর্জাতিক ট্যুর – সবকিছুর জন্যই পর্যাপ্ত বাজেট প্রয়োজন। স্পনসরশিপ আকর্ষণে আরও সক্রিয় হতে হবে।
    • দীর্ঘমেয়াদী ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান: একটি সুস্পষ্ট, দীর্ঘমেয়াদী রোডম্যাপ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন প্রয়োজন, যেখানে প্রতিটি বয়স গ্রুপের জন্য লক্ষ্য ও কর্মপন্থা নির্দিষ্ট থাকবে।
    • জেলা সংস্থাগুলোর সাথে সমন্বয়: জেলায় জেলায় টেনিসের বিকাশে স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থা ও বিটিএফ-এর শাখাগুলোর মধ্যে কার্যকর সমন্বয় জরুরি।
    • ডেটা ম্যানেজমেন্ট ও ট্র্যাকিং: সমস্ত তরুণ টেনিস তারকাদের পারফরম্যান্স, ফিটনেস, টুর্নামেন্ট রেজাল্টের একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেস তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন।

    সরকারের ভূমিকা: যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (NSC) এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়ন (নতুন কোর্ট নির্মাণ, পুরনো কোর্ট আধুনিকায়ন), ক্রীড়াবিদদের জন্য আবাসিক সুবিধা ও স্টাইপেন্ড বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং টেনিসকে জনপ্রিয় খেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য গণসচেতনতা কার্যক্রমে সহায়তা করা সরকারের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত। জাতীয় ক্রীড়া নীতিমালার বাস্তবায়ন এবং ক্রীড়াকে শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে সমন্বয় করা গেলে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য ভিত্তি আরও মজবুত হবে। সম্প্রতি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় কিছু জেলায় নতুন কোর্ট নির্মাণের উদ্যোগ আশার আলো দেখাচ্ছে।

    একটি সফল মডেল: কিশোরগঞ্জে টেনিস একাডেমি স্থানীয় উদ্যোগে গড়ে উঠেছে এবং জেলা প্রশাসন ও বিটিএফ-এর সহায়তায় তা ক্রমশ বিকশিত হচ্ছে। এটি দেখায় যে স্থানীয় পর্যায়ে সঠিক উদ্যোগ ও সহযোগিতায় টেনিসে নতুন প্রতিভার সন্ধান ও বিকাশ সম্ভব।

    বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশি টেনিস: সম্ভাবনা ও পথের বাধা

    টেনিসে নতুন প্রতিভা: ভবিষ্যতের আশা! – এই আশাকে যখন আমরা বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে রাখি, তখন উৎসাহের পাশাপাশি বাস্তবতার এক কঠিন দিকও সামনে আসে। আন্তর্জাতিক টেনিস অঙ্গন, বিশেষ করে পুরুষদের (এটিপি) এবং নারীদের (ডব্লিউটিএ) ট্যুর, এক চরম প্রতিযোগিতামূলক ও ব্যয়বহুল জগৎ। সেখানে পা রাখা এবং টিকে থাকা সহজ কথা নয়। বাংলাদেশের এই তরুণ টেনিস তারকাদের জন্য বিশ্বমঞ্চে জায়গা করে নেওয়ার অর্থ কী, আর তার পথেই বা কী কী বাধা অপেক্ষা করছে?

    আন্তর্জাতিক সার্কিটে পা রাখা: স্বপ্নের প্রথম ধাপ

    বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের জন্য আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা অর্জনের প্রাথমিক ধাপ হল আইটিএফ (ইন্টারন্যাশনাল টেনিস ফেডারেশন) জুনিয়র সার্কিট এবং এর পরবর্তী ধাপ আইটিএফ ওয়ার্ল্ড টেনিস ট্যুর (যা আগে ফিউচার্স/আইটিএফ উইমেন্স সার্কিট নামে পরিচিত ছিল)।

    • আইটিএফ জুনিয়র সার্কিট: ১৮ বছরের কম বয়সী খেলোয়াড়দের জন্য। এই টুর্নামেন্টগুলোতে অংশগ্রহণ করে জুনিয়র র্যাঙ্কিং অর্জন করা যায় এবং বিশ্বজুড়ে সমবয়সী সেরাদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অভিজ্ঞতা নেওয়া যায়। আমাদের কিশোর টেনিস প্রতিভারা, যেমন মিতুল, রাফি, তৃষা – তাদের লক্ষ্য প্রথমে এই সার্কিটে নিয়মিত অংশগ্রহণ এবং র্যাঙ্কিং পয়েন্ট অর্জন করা। নেপাল, ভারত, শ্রীলঙ্কায় আয়োজিত টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া অপেক্ষাকৃত সহজ (যদিও ব্যয়বহুল), ইউরোপ বা আমেরিকায় গেলে ব্যয় বহুগুণ বেড়ে যায়।
    • আইটিএফ ওয়ার্ল্ড টেনিস ট্যুর: এটিই পেশাদার টেনিসে প্রবেশের মূল সিঁড়ি। এখানে র্যাঙ্কিং পয়েন্ট অর্জন করে ধীরে ধীরে এটিপি বা ডব্লিউটিএ ট্যুরে উত্তরণের চেষ্টা করতে হয়। এই ট্যুরে অংশগ্রহণই একটি বড় চ্যালেঞ্জ:
      • ভিসা জটিলতা: উন্নত দেশগুলোতে ভিসা পাওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য একটি বড় বাধা। প্রায়ই দীর্ঘ সময় লাগে এবং অযৌক্তিক রিজেকশনের শঙ্কা থাকে।
      • মহামূল্যবান ভ্রমণ ও থাকা-খাওয়া: এক মাস বিদেশে থাকা এবং কয়েকটি টুর্নামেন্টে খেলার খরচ (ফ্লাইট, হোটেল, খাদ্য, স্থানীয় পরিবহন, কোচের খরচ, এন্ট্রি ফি) লাখ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়। একক স্পনসরশিপ পাওয়া অত্যন্ত দুষ্কর।
      • কোয়ালিফাইং রাউন্ডে টিকে থাকা: অনেক টুর্নামেন্টে সরাসরি মূল ড্রয়ে জায়গা পাওয়া কঠিন। কোয়ালিফাইং রাউন্ড থেকে উঠে আসতে হয়, যেখানে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বেশি এবং প্রতিযোগিতা তীব্র।
      • প্রাথমিক পর্যায়ে জয়ের অভাব: অভিজ্ঞতার অভাবে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায়ই প্রথম বা দ্বিতীয় রাউন্ডেই বিদায় নিতে হয়, ফলে র্যাঙ্কিং পয়েন্ট অর্জন হয় না, খরচও উসুল হয় না।

    সাফল্যের নীলনকশা: যা অর্জন করতে হবে

    একজন বাংলাদেশি খেলোয়াড়ের জন্য বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে স্থান করে নেওয়া এবং সত্যিকারের পেশাদার হিসেবে টিকে থাকা একটি দীর্ঘমেয়াদী ও কঠিন প্রক্রিয়া। এর জন্য প্রয়োজন:

    1. স্থিতিশীল আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা: একজন খেলোয়াড়ের পেশাদার যাত্রার পুরো সময়কাল জুড়ে (কমপক্ষে ৫-১০ বছর) ট্রেনিং, ভ্রমণ, কোচিং, ফিজিও, গিয়ার ইত্যাদির খরচ বহন করার মতো শক্তিশালী স্পনসর বা ফান্ডিং মডেল থাকা। বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশন এবং সরকারি বরাদ্দ এখানে মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে, পাশাপাশি বেসরকারি কোম্পানিগুলোর ক্রীড়া পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে আসা দরকার।
    2. পূর্ণকালীন পেশাদার কোচিং টিম: একজন হেড কোচ (যিনি কৌশল নির্ধারণ করবেন), একজন ফিজিক্যাল ট্রেনার/স্ট্রেন্থ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ, একজন মেন্টাল কন্ডিশনিং কোচ এবং একজন ফিজিওথেরাপিস্ট – এই টিম সর্বক্ষণ খেলোয়াড়ের সাথে থাকবে। এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল কিন্তু অপরিহার্য।
    3. প্রযুক্তির ব্যবহার: ম্যাচ এবং ট্রেনিং সেশনের ভিডিও অ্যানালিসিস, পারফরমেন্স ট্র্যাকিং ডিভাইস (যেমন হিটসেন্সর, র্যাকেট সেন্সর), স্পিড গান, ড্রোন ফুটেজ – এই প্রযুক্তিগুলো আন্তর্জাতিক স্তরে খেলার জন্য এখন মৌলিক উপাদান হয়ে দাঁড়িয়েছে।
    4. প্রতিদ্বন্দ্বী অনুশীলনী সঙ্গী (Sparring Partners): সমমানের বা উচ্চতর মানের খেলোয়াড়দের সাথে নিয়মিত অনুশীলন আন্তর্জাতিক স্তরের গতির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করে। বাংলাদেশে এই সুবিধা সীমিত।
    5. মানসিক দৃঢ়তা ও অভিযোজন ক্ষমতা: বিদেশের মাটিতে, ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন আবহাওয়া, বিচ্ছিন্নতা, একাকীত্ব – এসব সামলে খেলায় ফোকাস রাখা এবং ভালো পারফরম্যান্স দেওয়া মানসিক দৃঢ়তারই পরিচয়।

    আশার আলো: আঞ্চলিক সাফল্য ও ভবিষ্যতের দিগন্ত

    যদিও চ্যালেঞ্জ বিশাল, তবুও টেনিসে নতুন প্রতিভা: ভবিষ্যতের আশা! কেবল স্বপ্ন নয়, ধীরে ধীরে বাস্তবের কাছাকাছি পৌঁছানোর লক্ষণও দেখা যাচ্ছে:

    • দক্ষিণ এশিয়ায় ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি: ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপালে আয়োজিত জুনিয়র ও আইটিএফ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণ আগের চেয়ে বেশি। মাঝে মাঝে তারা মূল ড্রতে জায়গা করে নিচ্ছে এবং এমনকি কোয়ার্টার ফাইনাল বা সেমিফাইনালেও পৌঁছাচ্ছে (যেমন মিতুলের সাম্প্রতিক সাফল্য)। এটি আত্মবিশ্বাস বাড়াচ্ছে।
    • নারী টেনিসে সম্ভাবনা: সাবরিনা তৃষা, জেবিন টুম্পার মতো বাংলাদেশ টেনিসে নারী প্রতিভার উত্থান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আন্তর্জাতিক নারী টেনিসে (ডব্লিউটিএ) প্রতিযোগিতা তুলনামূলকভাবে একটু কম গভীর, এবং দক্ষিণ এশিয়ার নারী খেলোয়াড়দের (যেমন ভারতের সানিয়া মির্জা, অঞ্জলী ভরদ্বাজ) সাফল্য দেখে আমাদের মেয়েরাও অনুপ্রাণিত হচ্ছে। তাদের জন্য বিশেষায়িত সহায়তা দ্রুত ফল দিতে পারে।
    • প্রথম বাংলাদেশি পেশাদার: যদি কোনো তরুণ টেনিস তারকা আইটিএফ ট্যুরে নিয়মিত অংশ নিয়ে র্যাঙ্কিং পয়েন্ট জোগাড় করতে পারেন এবং এটিপি/ডব্লিউটিএ র্যাঙ্কিংয়ে নাম তুলতে পারেন, তা হবে এক যুগান্তকারী সাফল্য। এটি দেশের সমস্ত কিশোর টেনিস খেলোয়াড়দের জন্য অকল্পনীয় অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়াবে।

    বিশ্ব টেনিসে বাংলাদেশের অবস্থান এখনও প্রান্তিক। কিন্তু এই টেনিসে নতুন প্রতিভাদের দৃঢ়তা, প্রত্যয় এবং ক্রমবর্ধমান পারফরম্যান্স ইঙ্গিত দেয় যে, এই প্রান্তিকতা চিরস্থায়ী নয়। প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা, দূরদর্শী পরিকল্পনা এবং অবিচল সমর্থন। তখনই হয়তো একদিন কোন এক গ্র্যান্ড স্লামের কোর্টে বাংলাদেশের পতাকা ওড়বে।

    জেনে রাখুন

    প্রশ্ন: বাংলাদেশে টেনিস শেখার জন্য আদর্শ বয়স কত?
    উত্তর: সাধারণত কিশোর টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে উঠতে ৫-৮ বছর বয়স থেকে শুরু করা ভালো। এ সময় শারীরিক কন্ডিশনিং, মৌলিক কৌশল (ফোরহ্যান্ড, ব্যাকহ্যান্ড, সার্ভ, ভলি) এবং কোর্টে চলাফেরা শেখানো হয়। তবে ১০-১২ বছর বয়সে শুরু করেও নিয়মিত ও গুণগত প্রশিক্ষণ এবং অটুট মনোবল দিয়ে উল্লেখযোগ্য উন্নতি সম্ভব। মূল বিষয় হল নিয়মানুবর্তিতা ও ধারাবাহিকতা। টেনিস প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে বিভিন্ন বয়সের জন্য প্রোগ্রাম থাকে।

    প্রশ্ন: মেয়েদের জন্য বাংলাদেশে টেনিসে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ কেমন?
    উত্তর: বাংলাদেশে টেনিসে নারী প্রতিভার বিকাশের সুযোগ ক্রমশ বাড়ছে। সাবরিনা তৃষা, জেবিন টুম্পার মতো উদাহরণ মেয়েদের অনুপ্রাণিত করছে। বিটিএফ মেয়েদের জন্য আলাদা ক্যাম্প ও টুর্নামেন্টের আয়োজন করে। স্কুল-কলেজে ক্রীড়া বৃত্তির সুযোগ রয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাফল্য পেলে স্পনসরশিপ ও ক্যারিয়ারের সুযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিও ইতিবাচক দিকে পরিবর্তিত হচ্ছে। বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশন নারী টেনিসকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।

    প্রশ্ন: বাংলাদেশি তরুণ টেনিস খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের প্রধান বাধা কী?
    উত্তর: তরুণ টেনিস প্রতিভাদের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অংশ নেওয়ার প্রধান বাধা হল আর্থিক সীমাবদ্ধতা। ভ্রমণ, থাকা-খাওয়া, কোচ ফি, এন্ট্রি ফি, গিয়ার ইত্যাদির ব্যয়ভার বহন করা অনেক পরিবারের পক্ষে কষ্টসাধ্য। দ্বিতীয় বড় বাধা হল ভিসা প্রাপ্তিতে জটিলতা ও সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। তৃতীয়ত, অভিজ্ঞতার অভাবে প্রাথমিক পর্যায়ে টুর্নামেন্টে ভালো ফল করা কঠিন, যা র্যাঙ্কিং পয়েন্ট অর্জনে বাধা সৃষ্টি করে। পর্যাপ্ত আন্তর্জাতিক এক্সপোজার ও প্রতিযোগিতার অভাবও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

    প্রশ্ন: স্থানীয় টেনিস একাডেমিগুলো কিভাবে নতুন প্রতিভা খুঁজে পায়?
    উত্তর: টেনিস প্রতিভা অনুসন্ধান এর বিভিন্ন পদ্ধতি আছে। অনেক টেনিস প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্কুল ভিজিট বা কমিউনিটি আউটরিচ প্রোগ্রামের মাধ্যমে সম্ভাবনাময় শিশুদের সনাক্ত করে। স্থানীয় টুর্নামেন্ট (স্কুল, জেলা) হল মেধা খোঁজার অন্যতম প্রধান মঞ্চ। অভিভাবকরা সন্তানদের সরাসরি একাডেমিতে নিয়ে আসেন। বিটিএফ ও জেলা সংস্থাগুলোর আয়োজিত ট্যালেন্ট হান্ট প্রোগ্রামও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রাথমিক মূল্যায়নে সাধারণত মৌলিক অ্যাথলেটিসিজম (গতি, সমন্বয়, শক্তি), হাত-চোখের সমন্বয়, শেখার আগ্রহ এবং খেলার প্রতি ভালোবাসা দেখে বিচার করা হয়।

    প্রশ্ন: একজন পেশাদার টেনিস খেলোয়াড় হতে কত বছর প্রশিক্ষণ লাগে?
    উত্তর: একজন তরুণ টেনিস তারকাকে পেশাদার স্তরে পৌঁছাতে সাধারণত ৮ থেকে ১২ বছর নিয়মিত, উচ্চমানের ও ইনটেন্সিভ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়। শুরু হয় মৌলিক দক্ষতা (৫-১০ বছর বয়স) দিয়ে, তারপর কিশোর বয়সে (১০-১৫ বছর) প্রযুক্তিগত, কৌশলগত ও শারীরিক বিকাশ ঘটে, এবং কৈশোরের শেষ থেকে তরুণ বয়সে (১৬+) কঠোর প্রতিযোগিতা, মানসিক দৃঢ়তা গঠন ও পেশাদারিত্বের দিকে ধাবিত হয়। তবে এই সময়সীমা ব্যক্তিভেদে, প্রশিক্ষণের মান, সুযোগ-সুবিধা এবং খেলোয়াড়ের নিজের প্রতিশ্রুতি ও অধ্যবসায়ের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। টেনিসে নতুন প্রতিভার বিকাশ একটি দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ।

    প্রশ্ন: অভিভাবকরা কিভাবে তাদের তরুণ টেনিস প্রতিভাবান সন্তানকে সহায়তা করতে পারেন?
    উত্তর: অভিভাবকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিশোর টেনিস প্রতিভার সন্তানের জন্য অবিচল মানসিক সমর্থন দেওয়া প্রথম শর্ত – জয়-পরাজয়ে সমানভাবে পাশে থাকা। টেনিস প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও কোচের সাথে ভালো যোগাযোগ রাখা এবং তাদের পরামর্শ মেনে চলা। প্রশিক্ষণ ও টুর্নামেন্টে নিয়মিত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। সুষম পুষ্টিকর খাদ্য ও পর্যাপ্ত বিশ্রামের ব্যবস্থা করা। খেলোয়াড়ের উপর অযৌক্তিক চাপ না দিয়ে, দীর্ঘমেয়াদী বিকাশ ও আনন্দের দিকে নজর রাখা। আর্থিক পরিকল্পনা করা এবং প্রয়োজনীয় রিসোর্স (র্যাকেট, জুতো, পোশাক) সরবরাহের চেষ্টা করা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, স্কুলের পড়াশোনার সাথে টেনিসের সমন্বয় করে সন্তানের সামগ্রিক বিকাশ নিশ্চিত করা।

    বিঃদ্রঃ: পেশাদার টেনিস খেলোয়াড় হওয়ার পথ অত্যন্ত কঠিন ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ। এতে প্রচুর সময়, শ্রম, আর্থিক বিনিয়োগ ও ত্যাগের প্রয়োজন। সাফল্যের কোন গ্যারান্টি নেই। তরুণ খেলোয়াড় ও তাদের অভিভাবকদের উচিত বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ করা, আনন্দের সাথে খেলাকে গ্রহণ করা এবং একাডেমিক শিক্ষাকে অবহেলা না করা। খেলোয়াড় জীবনের পরেও একটি সুস্থ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করা জরুরি।

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    আশা’ উন্নয়ন: খেলা খেলাধুলা গেমস চাটগাঁ টেনিস টেনিসে নতুন প্রতিভা প্রতিযোগিতা প্রশিক্ষণ প্রেমী ফেডারেশন ভবিষ্যতের মুখ
    Related Posts
    ফুটবলে বাংলাদেশের সাফল্য

    ফুটবলে বাংলাদেশের সাফল্য:গৌরবের ইতিহাস

    August 24, 2025
    অবিস্মরণীয় ক্রিকেট ম্যাচের হাইলাইটস!

    অবিস্মরণীয় ক্রিকেট ম্যাচের হাইলাইটস!

    August 24, 2025
    নেইমার

    নেইমারকে নিয়ে বড় দুঃসংবাদ পেলেন আনচেলত্তি

    August 24, 2025
    সর্বশেষ খবর
    US Visa

    যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটন ভিসার ফি বাড়ছে ১৩৫ শতাংশের বেশি

    Bela

    আসছে জীবনীভিত্তিক সিনেমা ‘বেলা’

    aamir-gauri

    প্রেমিকার সন্তানকে আগলে রাখলেন আমির, কবে করছেন বিয়ে?

    Shahana

    প্রেক্ষাগৃহে আসছে এক নারীর অদম্য লড়াইয়ের গল্প

    hilsa

    ভরা মৌসুমেও ইলিশের সংকট, হু-হু করে বাড়ছে দাম

    Dev-Shakib

    দেবকে টেক্কা দিচ্ছে শাকিবের যে সিনেমা

    Nature’s Basket Gourmet Retail Experience

    Nature’s Basket: A Deep Dive into India’s Premier Gourmet Retail Experience

    Shweta Bhattacharya

    কী বেঁচে নায়িকা হয়েছো— শ্বেতাকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য অভিনেত্রীর

    Mimi

    আবারও আবেদনময়ী লুকে ধরা দিলেন মিমি

    Nature’s Essence Holistic Wellness Innovations: Leading the Natural Health Revolution

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.