ক্ষুধা, দারিদ্র্য, জরামুক্ত পৃথিবীর স্বপ্ন কে না দেখে। কিন্তু সেই স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত করতে সবচেয়ে ভালো কাজ করতে পারেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানী দম্পতি ড. উইল ও এভলিন ক্যাস্টর কাজ করছেন এমন স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য। তাঁদের বিশ্বাস, বর্তমান পৃথিবীর হাজারো সমস্যার সবচেয়ে সুন্দর সমাধান দিতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। নিখুঁতভাবে স্মৃতি মনে রাখতে পারে না মানুষের মস্তিষ্ক।
নতুন করে তথ্য নেওয়াও কঠিন আর সময়সাপেক্ষ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এসব সমস্যা নেই। মুহূর্তের মধ্যেই পৃথিবীর সব জ্ঞান কাজে লাগিয়ে সিদ্ধান্ত বা নতুন কিছু আবিষ্কার কেবল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাই করতে পারে। যদি সেভাবে তৈরি করে নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করা যায়, মানবজাতি যে সমাধানের জন্য হাজার বছর খেটেছে, শক্তিশালী কোনো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার তা বের করতে হয়তো লাগবে কয়েক মুহূর্ত।
এ তো গেল বিজ্ঞানীদের চিন্তা। এর বিপরীতেও আছে কিছু মানুষ। তারা ভাবে ভিন্নভাবে। তারা মনে করে, এমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থাকা উচিত নয়। তাই এই কার্যক্রম বন্ধ করতে মরিয়া তারা। চরমপন্থা অবলম্বনেও কোনো অসুবিধা নেই তাদের। কনফারেন্স শেষে বের হয়ে তাদের এক সদেস্যের হাতে গুলিবিদ্ধ হন উইল ক্যাস্টর। এগিয়ে চলে মুভির গল্প।
শেষ পর্যন্ত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কত দূর এগিয়েছিল? বিজ্ঞানী দম্পতির প্রত্যাশা কি পূরণ হয়েছিল, নাকি বেরিয়ে এসেছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভয়ংকর রূপ? জানতে হলে দেখতে হবে পুরো মুভিটি। ট্রানসেনডেন্স মুভিটি পরিচালনা করেছেন মার্কিন চলচ্চিত্র সিনেমাটোগ্রাফার ও পরিচালক ওয়ালি ফিস্টার। ক্রিস্টোফার নোলানের একাধিক মুভিসহ বিভিন্ন পরিচালকের অর্ধশতাধিক মুভিতে কাজ করেছেন চিত্রগ্রাহক হিসেবে। গুণী এই মানুষ ইনসেপশন মুভির চিত্রগ্রহণের জন্য ২০১০ সালে অস্কারও জিতেছেন। বড় পর্দায় পরিচালক হিসেবে এটাই তাঁর প্রথম কাজ।
চলচ্চিত্রটিতে ড. ক্যাস্টর উইলের চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনি ডেপ। এ ছাড়া মরগান ফ্রিম্যান, রেবেকা হল, পল বেটানি, কিলিয়ান মারফি ও কোল হাউসারের মতো শক্তিমান শিল্পীরা অভিনয় করেছেন এতে। প্রত্যেকেই দারুণ অভিনয় করেছেন। তবে চলচ্চিত্রটিতে অভিনয়ের জন্য বেশ সমালোচিত হয়েছিলেন জনি ডেপ।
মার্কিন চিত্রনাট্যকার জ্যাক প্যাগলেনের এই চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য সবার মন কেড়ে নেয়। হলিউডের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় চিত্রনাট্যগুলোর একটি হিসেবে ধরা হয় এটাকে। দুর্দান্ত চিত্রনাট্য, বিখ্যাত সব অভিনেতা থাকা সত্ত্বেও ব্যবসায় ব্যর্থ মুভি ট্রানসেনডেন্স। প্রায় দেড় কোটি মার্কিন ডলার খরচ করে নির্মিত হয়েছিল ছবিটি। আয় করেছে মাত্র এক কোটি মার্কিন ডলারের মতো।
দর্শক হিসেবে এর কারণ আমার কাছে অস্পষ্ট। সমালোচকদের মতে, এর গল্পের কাঠামো, চরিত্রায়ণ এবং সংলাপ বেশ দুর্বল। যার কারণে ব্যবসাসফল হতে পারেনি বলে ধারণা করা হয়। অন্যদিকে মুভিটির সিনেমাটোগ্রাফি, অভিনয় এবং ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরের মতো দিকগুলো বেশ প্রশংসিত হয়েছে দর্শকদের কাছে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে বলা হয়েছে মুভিটির পুরো গল্প। প্রযুক্তি কত দূর যেতে সক্ষম, তার একটি ছবি আঁকা হয়েছে ট্রানসেনডেন্স–এ। চমৎকার ভিএফএক্সের সঙ্গে গল্পে এমন কিছু দেখতে পাবেন, যা হয়তো এত দিন কল্পনাও করতে পারেননি। অথচ নিজের মনেই হয়তো বলে উঠবেন, অসম্ভব নয়। এ হয়তো নিকট ভবিষ্যতেরই গল্প।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কাল্পনিক গল্পের মধ্যে সূক্ষ্মভাবে আছে ভালোবাসা আর আবেগের এক ভিন্ন গল্প। আছে মানুষের চরমপন্থার চিরাচারিত ভয়াবহতা। মোটকথা, বিজ্ঞান কল্পগল্প, অ্যাকশন, ড্রামা—এই তিন শাখার স্বাদ আছে মুভিটিতে। সরল অথচ উত্তেজনাপূর্ণ কাহিনি হওয়ায় দেখতে বসলে ছেড়ে ওঠা কঠিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।