যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শেষ সময়ে দেওয়া মন্তব্যটি প্রযুক্তি প্রেমীদের মধ্যে একটি উদ্বেগের চিত্র তুলে ধরেছে। তিনি জানিয়েছেন, যদি অ্যাপল তাদের আইফোন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি না করে, তাহলে ওই পণ্যের উপর কমপক্ষে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এই ঘোষণার প্রভাব সরাসরি ব্যবহারকারীদের পকেটে পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। অ্যাপল যদি এই নতুন শুল্কের আওতামুক্ত হতে চায়, তাহলে তাদের উৎপাদন কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রিত করতে হবে। অর্থনৈতিক বাস্তবতা এবং প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা যে সহজ হবে না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
Table of Contents
আইফোন উৎপাদন: যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে কি হতে পারে?
অ্যাপলের সিইও টিম কুককে গত কিছু দিন আগে ট্রাম্পের বার্তা পৌঁছিয়েছে। তিনি বলেছেন, “আমি আশা করি যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া সব আইফোন এখানে তৈরি হবে, ভারতে কিংবা অন্য কোথাও নয়।” এর জবাবে ব্যবসায়িক বিশ্লেষক ড্যান আইভস জানিয়েছেন, যদি অ্যাপল যুক্তরাষ্ট্রে তাদের উৎপাদনের আরও মাত্র ১০% স্থানান্তর করতে চায়, তবে সেটি করতে অন্তত তিন বছরের মতো সময় লাগবে এবং প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের মতো খরচ হবে।
বিশ্লেষক আইভস আরও জানিয়েছেন, যদি আইফোনের পুরো উৎপাদন যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসে, তাহলে এর দাম ৩০০০ ডলার ছাড়াতে পারে, যা বর্তমানের ১২০০ ডলার দামের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন উৎপাদন মানে ব্যবহারকারীর জন্য খরচ বৃদ্ধি পাওয়া নিশ্চিত।
প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ
ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পরপরই কিছু প্রযুক্তি বিশ্লেষক এই সিদ্ধান্তকে অর্থনৈতিকভাবে অযৌক্তিক বলেছেন। তারা উল্লেখ করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় শ্রমিক ও যন্ত্রাংশের অবকাঠামো চীনে বরাবরের মতো উন্নত। সেখানে দক্ষ শ্রমিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার অভাব রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে, যা এই স্থানান্তরকে আরো কঠিন এবং ব্যয়বহুল করে তুলবে।
বাজারের ওপর প্রভাব
এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আরো জানতে গেলে দেখা যায়, অ্যাপল ইতোমধ্যে খোঁজ নিয়েছে যে, ভারতে আইফোন উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। বলা হচ্ছে, আগামী বছর থেকেই ‘Made in India’ স্টিকারযুক্ত আইফোন বাজারে আসতে পারে। এদিক থেকে ট্রাম্পের উত্থাপিত শুল্ক শুধু অ্যাপল নয়, অন্যান্য স্মার্টফোন নির্মাতাদের জন্যও বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে, যার ফলে সমগ্র প্রযুক্তিপণ্যের দাম বাড়তে পারে।
বর্তমান পরিস্থিতি
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পণ্য আমদানির উপর যেভাবে শুল্ক বৃদ্ধি হচ্ছে, তার মধ্যে স্মার্টফোনও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শুল্ক বাড়ানোর লক্ষ্যে ট্রাম্প সরকারের পরিকল্পনা ছিল, তবে সম্প্রতি কিছু প্রযুক্তি পণ্যের ওপর শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভবিষ্যতে এই নির্দেশনার পরিবর্তন হতে পারে।
সারাংশ: মার্কিন প্রেসিডেন্টের যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন উৎপাদনের জন্য চাপের ফলে প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ এবং খরচ বৃদ্ধির আশঙ্কা বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও অ্যাপল অদূর ভবিষ্যতে ভারতের উৎপাদন পরিকল্পনার উপর কাজ করছে, তবুও ট্রাম্পের ২৫% শুল্কের হুঁশিয়ারি তাদের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলবে।
অবৈধ মোবাইল ফোনের অনুপ্রবেশ: বাজারে এর প্রভাব ও সুবিধাভোগীরা কারা?
FAQs
১. কি কারণে ট্রাম্প আইফোনের ওপর শুল্ক আরোপের কথা বলেছেন?
যদি অ্যাপল যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন উৎপাদন না করে, তাহলে ট্রাম্প শুল্ক আরোপ করার কথা বলছেন। এর ফলে পণ্যের দাম দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধিতে ভোক্তাদের ওপর চাপ পড়বে।
২. আইফোনের দাম কত বৃদ্ধি পাবে?
বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন যে, আইফোনের দাম ৩০০০ ডলারের কাছাকাছি চলে যাবে যদি উৎপাদন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসা হয়।
৩. অ্যাপল কি ভারতের উৎপাদনের দিকে নজর দিচ্ছে?
হ্যাঁ, অ্যাপল ভারতে আইফোন উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে যা আগামী বছরে কার্যকর হতে পারে।
৪. কি কারণে যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন উৎপাদন করা কষ্টকর?
যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় শ্রমিক, যন্ত্রাংশ এবং প্রযুক্তিগত অবকাঠামো চীনের তুলন্ৰ বিভিন্ন কারণে উন্নত নয়।
৫. ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত কি অন্য স্মার্টফোন নির্মাতাদের প্রভাবিত করবে?
হ্যাঁ, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত অন্যান্য স্মার্টফোন নির্মাতাদের জন্যও প্রভাব ফেলবে এবং ফলে স্যামসাং, গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদনও অনিশ্চিত হতে পারে।
৬. শুল্ক বৃদ্ধির ফলে মার্কেটের ওপর কি প্রভাব পড়বে?
শুল্ক বৃদ্ধির ফলে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে, যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।