জুমবাংলা ডেস্ক: ঠাকুরগাঁও জেলায় দ্রুততম সময়ে হচ্ছে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরী। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে ‘বিসিক খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরী, ঠাকুরগাঁও’ শীর্ষক প্রকল্পটি। খবর বাসসের।
গত ২৮ জুলাই প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ প্রকল্প এর অনুমোদন দেয়া হয়।
এছাড়া এ প্রকল্পের কার্যক্রম সমন্বয় করতে চলতি বছরের গত ২৪ আগষ্ট রংপুর বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার রাজস্ব আবু তাহের মো মাসুদ রানা আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শনে এসে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরী কাজ ও জমি অধিগ্রহণের কাজের অগ্রগতি ও এর সকল বিষয়ে খোঁজখবর নেন।
তাছাড়া গত চলতি মাসের ৮ সেপ্টেম্বর ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান সরেজমিনে গিয়ে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরী এ কাজ এর অগ্রগতির বিষয়ে খোঁজখবর নেন।
এসময় তিনি খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরী এ কাজ ও জমি অধিগ্রহণের কাজের অগ্রগতি ও এর সকল বিষয়ে খোঁজ খবর নেন এবং কর্মকর্তাদের দ্রুততম সময়ে এ কাজ সম্পন্ন করার তাগিদ দেন। সে সময় ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব কামরুন নাহার ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের আকচা মৌজায় ৫০ একর জায়গায় ৯৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে শিল্প
মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)।
ঠাকুরগাঁও বিসিক চেয়ারম্যান মোশতাক হাসান বলেন, ‘প্রকল্পটির লক্ষ্যমাত্রা হলো ৫০ দশমিক ০০ একর ভূমি অধিগ্রহণপূর্বক একটি নির্দিষ্ট স্থানে পরিবেশবান্ধব শিল্প কমপ¬্যায়ান্স সমৃদ্ধ আধুনিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপন। এর মাধ্যমে ২৪৯টি শিল্প প্ল¬ট তৈরি করে প্রায় ২৩০টি শিল্প ইউনিট স্থাপনের ব্যবস্থা করা। যেখানে ২৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া এখানে নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১০ শতাংশ হিসেবে ২৫টি শিল্প প্ল¬ট সম্ভাবনাময় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ রাখা হবে।’
বিসিক চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘বিসিক খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরীর উদ্দেশ হলো খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য পরিবেশবান্ধব শিল্প কমপ¬্যায়ান্স সমৃদ্ধ আধুনিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপনের মাধ্যমে শিল্প প্ল¬টের ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি অপরিকল্পিতভাবে প্রতিষ্ঠিত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ইন্ডাস্ট্রিসমূহকে স্থানান্তরের জন্য পরিবেশবান্ধব, শিল্প কমপ¬্যায়ান্স সমৃদ্ধ আধুনিক শিল্প প্ল¬টের ব্যবস্থা করা। শিল্পায়নকে ত্বরান্বিত করা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার মাধ্যমে জিডিপিতে শিল্প খাতের অবদান বৃদ্ধির মাধ্যমে সমৃদ্ধ দেশ বিনির্মাণ করা।’
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাজট্রিজ এর পরিচালক মামুন অর রশিদ এবং সংগঠনের সভাপতি হাবিবুল ইসলাম বাবলু জানান, আমরা ঠাকুরগাঁওবাসী খুবই গর্বিত ও আনন্দিত। একনেকে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প নগরী গড়ে উঠলে এ এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক অবস্থার দ্রুত মান উন্নয়ন হবে। প্রত্যাশা করি এবং পলিসি মেকারদের কাছে দাবি জানাই এ প্রকল্প যেন দ্রুত বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, ঠাকুরগাঁও বাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূুরণ হতে যাচ্ছে। এ প্রকল্পের কাজ গুরুত্বের সাথে তদারকি করা হচ্ছে। আর কাজের অগ্রগতি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও মন্ত্রণালয়কে প্রতিনিয়ত অবহিত করা হচ্ছে। আশা করা যায় দ্রুত এ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন করা যাবে। এ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল ও শিল্প নগরীর মাধ্যমে প্রায় ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হবে এবং এ এলাকার মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁও জেলায় ১৯৮৭-৮৮ সালে ১৫ দশমিক ০০ একর আয়তনের জমিতে বিসিকের একটি শিল্পনগরী স্থাপন করা হয়। শিল্পনগরীতে বরাদ্দযোগ্য ১০৫টি প্ল¬টে ৫৩টি শিল্প ইউনিটের অনুকূলে ১০৫টি প্ল¬ট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে সেখানে কোনো প্ল¬ট ফাঁকা নেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।