জুমবাংলা ডেস্ক : নানা অনিয়মের অভিযোগে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থেকে সরিয়ে দেয়ার পর এবার গোলাম রাব্বানী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) জিএস পদে থাকতে পারেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রাব্বানী পদত্যাগ না করলে ডাকসু সভাপতি হিসেবে ঢাবি ভিসির তাকে পদচ্যুত করার উদ্যোগ নেওয়া উচিৎ বলে মনে করেন ভিপি নুরুল হক নুর।
তিনি বলেন, যেহেতু তার (গোলাম রাব্বানী) বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ উঠেছে, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ছাত্রলীগের পদও তিনি হারিয়েছেন; সেহেতু আমি মনে করি নৈতিকভাবে তার আর এ পদে থাকার অধিকার নেই।
নুর আরও বলেন, আশা করছি রাব্বানী পদত্যাগ করবেন। তবে সে পদত্যাগ না করলে ডাকসু সভাপতি হিসেবে ঢাবি ভিসির উচিৎ তাকে পদচ্যুত করার উদ্যোগ নেওয়া। ছাত্রলীগের মতো ঐতিহ্যবাহী একটি সংগঠন থেকে যাকে পদচ্যুত করা হয়েছে তার ডাকসু জিএস থাকা কোনোভাবেই উচিৎ নয়। এটির সঙ্গে ডাকসুর মান সম্মানও জড়িত।
তবে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের জিএস পদ থেকে পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়েছেন গোলাম রাব্বানী।
সোমবার গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, আমি কোনো অপরাধ করিনি, তাহলে কেন ডাকসুর জিএস পদ থেকে পদত্যাগ করব? সবাই সবার ভুল বুঝবেন একদিন।
গোলাম রাব্বানী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার ক্যাম্পাস। সেখানে শ শ কোটি টাকার কাজ হলো, এখানে কোনো ইনভলবমেন্ট ছিলো না আমাদের। কেউ আমাদের নামে কোনো অভিযোগ উত্থাপন করতে পারেনি। এখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা চাঁদাবাজি করতে গিয়েছি। এটা কী সত্য?
তিনি আরও বলেন, আমি চাঁদা চাইলে ভিসি ম্যামের কাছে কেন চাইবো? চাঁদা দাবি করলে তো ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছে দাবি করব। কই কোনো ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তো এ অভিযোগ আনেননি।
এর আগে সোমবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে গোলাম রাব্বানী বলেন, বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি গর্হিত কোনো অপরাধ করিনি।
এ বিষয়ে ডাকসুর সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান স্পষ্ট করে কিছু জানান নি। তিনি বলেন, রাব্বানীর বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ থাকলেও ডাকসুর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হবে।
উপাচার্য আরও বলেন, ডাকসু নির্বাচন থেকে শুরু করে, কে কোন পদে থাকতে পারবেন, কিভাবে বিবেচিত হবে কিংবা বহিষ্কার হবে তার সামাগ্রিক রুপ রেখা ডাকসুর গঠনতন্ত্রে আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং, গঠনতন্ত্রে যে বিধান আছে, সেভাবেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট থেকে অব্যাহতি চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামানের কাছে চিঠি দিয়েছেন ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন।
সোমবার বিকেলে তার পক্ষে উপাচার্যের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক আহসান হাবিব ও ডাকসু সদস্য রফিকুল ইসলাম সবুজ।
জানা গেছে, সিনেট থেকে পদত্যাগের জন্য ‘ব্যক্তিগত সমস্যা’র কথা উল্লেখ করেছেন।
এর আগে গত বছরের ১১ ও ১২ মে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন ছাড়াই ছাত্রলীগের দুই দিনব্যাপী ২৯তম জাতীয় সম্মেলন শেষে ৩১ জুলাই রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি এবং গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সে হিসাবে আরও প্রায় ১১ মাস এই কমিটির মেয়াদ থাকতেই ছাত্রলীগের নেতৃত্ব থেকে সরে যেতে হল শোভন ও রাব্বানীকে। ছাত্রলীগের ইতিহাসে এই প্রথম নানা অনিয়মের অভিযোগে সংগঠনটির শীর্ষ নেতাদের এই পরিণতি হল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।