মালয়েশিয়া থেকে মাসখানেক আগে দেশে ফিরেন নুরুন্নবী (৩০)। নতুন জীবনের স্বপ্ন নিয়ে পারিবারিকভাবে কনে দেখে ৯ ফেব্রæয়ারি বিয়ে করেন। বাড়িতে আনা হয় নববধূ। তখনো চলছিল উৎসবের আমেজ। মঙ্গলবার ছিল বাসররাত। সাজানো হয়েছিল পালংক। ওই রাতেই বাড়িতে হানা দেয় ডাকাত। লুটপাটের এক পর্যায়ে ডাকাতের গুলিতে বিদ্ধ হয় বরের বুক। বাসরঘরেই নিহত হন তিনি।
পরদিনই খুনসহ ডাকাতিতে জড়িত দুই ডাকাতকে পিটিয়ে হত্যা করে বিক্ষুব্ধ জনতা।
ডাকাতের গুলিতে নিহত বর নুরুন্নবী কক্সবাজারের পেকুয়ার শিলখালী ইউনিয়নের সাপেরগারা এলাকার হাসান শরীফের ছেলে। এ ছাড়া ডাকাতের গুলি ও কোপে আহত হয়েছেন নিহত বরের মা হাজেরা খাতুন (৮০) ও তার ভাই মোজাম্মেল (২২)।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল আজম বলেন, খুনসহ ডাকাতির ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্ত করতে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার ব্যাপারে মামলার
প্রস্তুতি চলছে।
গণপিটুনিতে গুরুতর আহত তিন ডাকাতের মধ্যে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় শিলখালী ইউনিয়নের উত্তর জোম এলাকার মো. আলমগীর ওরফে নাগু মিয়ার ছেলে জামাল উদ্দিন (৩৫) ও সাপেরগারা এলাকার নাজিম উদ্দীনের ছেলে মো. কায়সার (২৫)। এ ছাড়া গুরুতর আহত নুরুল ইসলামের ছেলে নাসির হোসেনকে (২৮) গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান।
নিহত বরের ভাতিজা দেলোয়ার হোসেন জানান, মাসখানেক আগে তার চাচা নুরুন্নবী মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরেন বিয়ে করার লক্ষ্যে। গত রবিবার তার বিয়ে হয়। মঙ্গলবার দুপুরে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে পাঁচজন অতিথি বেড়াতে আসেন। ওই রাতেই ছিল বর-বধূর বাসররাত।
নিহতের বড় ভাই ফরিদুল আলম বলেন, সন্ধ্যায় মেহমানদের বিদায় জানিয়ে আমি ঘরে ফিরছিলাম। সে সময় মুখোশ পরিহিত বেশ কয়েকজন যুবক আমাকে পেছন থেকে ঝাপটে ধরে। হাত-পা বেঁধে তারা আমাকে উপর্যুপরি মারধর করে মাটিতে ফেলে রাখে। ৮-১০ জন সশস্ত্র ডাকাত বসতঘরে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে প্রথম দফায় ব্যর্থ হয়। পরে ডাকাত দলটি বাড়ির পেছনে রান্নাঘরের দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে পড়ে। এ সময় তাদের প্রতিহত করতে চাইলে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে ডাকাতরা। এতে আমার ভাই নুরুন্নবী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। গুলি এবং ধারালো অস্ত্রের কোপে মা হাজেরা খাতুন ও ছোট ভাই মোজাম্মেল গুরুতর আহত হয়েছেন।
পেকুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান বলেন, ডাকাতের হামলায় আহতরা বেশ কয়েকজন হামলাকারীকে চিনে ফেলেন। তাদের কাছ থেকে নাম-পরিচয় জেনে বুধবার সকালে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সাপেরগারা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার পাঁচটি ঘর ঘেরাও করে। সেখান থেকে ডাকাতি ও খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জামাল উদ্দিন, মো. কায়সার ও নাসির হোসেনকে ধরে নিয়ে গণপিটুনি দেয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় জামাল উদ্দিন ও মো. কায়সার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।